১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খাসোগিকে নিয়ে দুই মেয়ের আবেগাপ্লুত স্মৃতিচারণ

রাজান কামাল খাসোগির আকা জামাল খাসোগির চেয়ার - ছবি : ওয়াশিংটন পোস্ট

গত ২ অক্টোবর পুনরায় বিয়ে সংক্রান্ত কিছু কাগজপত্রের জন্য তুরস্কের ইস্তাম্বুলস্থ সৌদি দূতাবাসে গিয়েছিলেন বিখ্যাত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগি। এ সময় তিনি তার বাগদত্তাকেও সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলেন। বাগদত্তা হেতিস চেঙ্গিস বাইরে অপেক্ষামাণ ছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও খাসোগি আর বের না হয়ে এলে হেতিস তা গণমাধ্যমকে জানান।

শুরুতে তার এ নিখোঁজের বিষয়টি সৌদি আরব অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে জানানো হয় দূতাবাসে একটি ‘ঝগড়ায়’ তিনি নিহত হয়েছেন। তবে এখনো জানা যায়নি তার লাশ কোথায় আছে।

খাসোগির প্রথম স্ত্রীর রয়েছে দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। সৌদি যুবরাজের সমালোচক খাসোগি একসময় নিজ দেশ সৌদি আরব ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান নেন এবং সেখানকার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টের একজন নিয়মিত কলাম লেখক।

বাবার মৃত্যুর পর ওয়াশিংটন পোস্টের সাথে তাকে নিয়ে নিজেদের স্মৃতিচারণ করেছেন খাসোগির দুই মেয়ে নোহা খাসোগি ও রাজান জামাল খাসোগি।

সাক্ষাৎকারে তারা তাদের বাবার কাজগুলো সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করেন। বাবার সাথে তাদের মধুর স্মৃতিগুলো তুলে ধরতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তারা।

‘আমরা বড় হয়েছি বাবা-মায়ের জ্ঞানের ভালোবাসার মধ্যে। তারা আমাদের অসংখ্য জাদুঘর ও ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনে নিয়ে গিয়েছিলেন। জেদ্দা থেকে যখন আমরা মদিনা যাইতাম বাবা তখন দু’পাশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান সম্পর্কে আমাদের বলতেন। তিনি সবসময়ই বইয়ের রাজ্যে থাকতেন। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন সেসবই।’

দুই বোনের রাত কাটে এই ভেবে যে, বাবা অন্যান্য বারের মতোই বিদেশ ভ্রমণে আছেন। বলেন, ‘এটা বিশ্বাস করতে চাই যে, তিনি কত দূরে গেলেন সেটা বড় নয়, আমরা তাকে আবার দেখতে পাবো, খোলা হাতে, আলিঙ্গনের জন্য অপেক্ষামান’।

‘ছোটবেলা থেকেই আমরা জেনে আসছি যে, বাবার কর্মকাণ্ড আমাদের পরিবার থেকে বহু দূর পর্যন্ত পৌঁছেছে। তার কথার গুরুত্ব অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছেছে।’

তারা বর্ণনা করেন, তাদের বাবার নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়ার পরের দিনগুলোর অবস্থা। ২ অক্টোবরের ঘটনার পর আমাদের পরিবার বাবার ভার্জিনিয়ায় বাবার বাসায় গিয়েছিলেন।

‘সবচেয়ে কঠিন কাজটি ছিল বাবার খালি চেয়ারটি দেখা। তার অনুপস্থিতি সবকিছু স্থির করে দিচ্ছিল। আমরা তাকে সেখানে বসা দেখছিলাম, কপালে তার চশমা। তিনি পড়ছেন, লিখছেন।’

তারা লিখেছেন, ‘এটা একটা প্রতিজ্ঞা যে, তার আলো কখনো নিভবে না। তার পথচলাকে আমরা আমাদের মাঝে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

‘বাবা আমাদের বলতেন - কিছু চলে যাওয়া স্মরণ রাখার, যা আজ সত্যে পরিণত হলো।’

‘আমরা তার নৈতিক পরিসর, জ্ঞান ও সত্যের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও ভালবাসার ধারণ করে রাখব পরজনমে তার সাথে আবার দেখা হওয়া পর্যন্ত।’


আরো সংবাদ



premium cement