২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খাসোগির হত্যাকাণ্ড নিয়ে যা বলল জাতিসংঙ্ঘ ও যুক্তরাষ্ট্র

জাতিসংঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। - ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের পক্ষ থেকে সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে নেয়ার পর এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতিসংঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। একইসঙ্গে এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউজ’সহ অন্যান্য মার্কিন কর্মকর্তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

গুতেরেস আজ (শনিবার) ভোরে এক বিবৃতিতে খাসোগির হত্যাকাণ্ডে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সবরকম প্রভাবের ঊর্ধ্বে থেকে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে হবে।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন শুক্রবার রাতে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে, খাসোগি ইস্তাম্বুলস্থ সৌদি কনস্যুলেটে নিহত হয়েছেন।

এ সম্পর্কে মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এক টুইটার বার্তায় লিখেছেন, ‘প্রথমে বলা হলো খাসোগি কনস্যুলেট ত্যাগ করেছেন এবং তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সৌদি আরবের কোনো হাত নেই। এখন বলা হচ্ছে, সৌদি যুবরাজের (মোহাম্মাদ বিন সালমান) অজ্ঞাতসারে কনস্যুলেটের ভেতরেই খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে। নতুন এই ব্যাখ্যা মেনে নেয়া কঠিন।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি টেড লিউ সৌদি আরবের সর্বশেষ ঘোষণাকে ‘অর্থহীন’ আখ্যায়িত করেছেন। তিনি তুর্কি ও মার্কিন গোয়েন্দা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘সংঘর্ষে’ নিহত ব্যক্তির দেহ করাত দিয়ে কেটে টুকরা টুকরা করার প্রয়োজন ছিল না।

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের আবাসিক প্রাসাদ হোয়াইট হাউজ সৌদি আরবের স্বীকারোক্তির ব্যাপারে ভিন্নরকম প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বলেছেন, জামাল খাসোগির গুম হওয়ার ব্যাপারে সর্বশেষ তদন্তের যে ফলাফল সৌদি আরব প্রকাশ করেছে এবং এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যে ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে সন্তোষ প্রকাশ করছে হোয়াইট হাউজ।

স্যান্ডার্স আরো বলেন, খাসোগির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওয়াশিংটন গভীর দুঃখ প্রকাশ করছে এবং তার পরিবার, বাগদত্তা ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদন জানাচ্ছে।

 

আরো দেখুন : খাসোগি হত্যা : সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

 নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১৯ অক্টোবর ২০১৮

তুরস্কে সৌদি দূতাবাসের ভেতর বিখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যা নিয়ে সারা দুনিয়া এখন তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। খাসোগিকে যে দূতাবাসের ভেতর হত্যা করা হয়েছে, তা নিয়ে বলা যায় এখন আর কোনো সন্দেহ নেই। এবং সৌদি রাজপরিবারের প্রভাবশালী সদস্যরা এতে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। এ ধরনের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার রীতি। এ প্রেক্ষাপটেই প্রশ্ন জেগেছে, যুক্তরাষ্ট্র কী করবে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সৌদি আরবের সব ধরনের অন্যায়ের সাথে আমেরিকার সংশ্লিষ্টতা থাকায় ওয়াশিংটন এ রাজতান্ত্রিক সৌদি সরকারকে কখনোই শাস্তি দেবে না। এ মন্তব্য করেছেন আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার স্কলার এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার ড. ডেনিস এলটার।


সৌদি সরকার বিরোধী ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোখির রহস্যজনক নিখোঁজের ঘটনায় রিয়াদকে জবাবদিহি করতে হবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন তাও নাকচ করে দেন তিনি।

গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলস্থ সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর থেকে জামাল খাশোগি নিখোঁজ রয়েছেন। তুরস্কের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের কাছে থাকা তথ্যপ্রমাণের ওপর ভিত্তি করে বলেছে, সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পর খাশোগিকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় এবং পরে তার লাশ টুকরা টুকরা করে গোপনে ওই কূটনৈতিক মিশন থেকে বাইরে নেয়া হয়। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সরাসরি নির্দেশেই খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলেও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোক পূর্বাভাস দিয়েছে।

ট্রাম্প বলেছিলেন, খাশোগির নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পেছনে সৌদি ক্ষমতাসীনদের হাত থাকলে তাদেরকে ‘চরম পরিণতি’ ভোগ করতে হবে। অবশ্য একইসঙ্গে ট্রাম্প একথাও বলেছিলেন, রিয়াদের কাছে হাজার হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি বাতিল করার ইচ্ছে তার নেই। কারণ, আমেরিকা নিজেই নিজেকে শাস্তি দিতে পারে না।

এলটার বলেন, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যাতে তার এ জঘন্য অপরাধ থেকে পার পেয়ে যান তার জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, সৌদি আরবের শক্তিমান পুরুষ বিন সালমান ভাল করেই জানেন যে আমেরিকা এ ঘটনায় বাইরে থেকে কেবল ক্ষোভ প্রকাশ করবে এবং তার মারাত্মক অপরাধের বিষয়ে ওয়াশিংটন কোনো ব্যবস্থাই গ্রহণ করবে না। এছাড়া রিয়াদ এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে শক্তিশালী রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের প্রতি ইঙ্গিত করে আমেরিকার এ রাজনৈতিক ভাষ্যকার বলেন, নিজেদের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্কের ভিত্তি থেকে দুই পক্ষ কখনোই দূরে সরে যাবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement