২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মজা করতে গিয়েও ফিলিস্তিনীদের মারছে ইসরাইলি পুলিশ!

ফিলিস্তিন
একটি চেকপয়েন্টে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর দুই সদস্যের বাধার শিকার একজন ফিলিস্তিনী - ছবি : মিডলইস্ট মনিটর

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিমতীরে একজন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনীকে মজা করতে গিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলি একজন নারী পুলিশ সদস্য।

বিশ বছর বয়সী ওই নারী পুলিশ সদস্যকে গত ১৫ অক্টোবর গ্রেফতার করে জেরুসালেমের একটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। শুনানিতে বলা হয়, কোনো অভিযানের কারণ ছাড়াই এক নিরস্ত্র ফিলিস্তিনীকে পেছন থেকে বুলেট মারা হয়। আদালতের বিচারক ইলাদ পার্সকি বলেন, মনে হচ্ছে ওই নারী পুলিশ সদস্য ফিলিস্তিনীকে ‘বিনোদনের জন্য’ গুলি করেছেন। এরপর তিনি তাকে আরো তিনদিনের জন্য আটক রাখার নির্দেশ দেন।

ধারণা করা হচ্ছে এ আক্রমণটি গত মে মাসে সংঘটিত হয়েছে। তখন ওই নারী পুলিশ সদস্য আল-জাইম চেক পয়েন্টে কর্মরত ছিলেন। এটি পশ্চিমতীরে ইসরাইলের অবৈধ বসতি মাল আদুমিনের কাছে অবস্থিত।

তবে ইসরাইলের বিচার মন্ত্রণালয় সম্প্রতি অন্য আরেকটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এ বিষয়টি জানতে পেরেছে। ইসরাইলের হারেৎজ পত্রিকার খবরে প্রকাশ, সেটিও ছিল ইসরাইলের সীমান্ত পুলিশের বিরুদ্ধে কারণ ছাড়াই একজন ফিলিস্তিনীকে মারার ঘটনা।

এই নারী পুলিশ সদস্যকে এখন নির্যাতনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি আরো চারজন সীমান্ত পুলিশ সদস্যকেও গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন এবং ভিডিও ধারণ করেছেন। তবে তাদেরকে শর্তসাপেক্ষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হারেৎজ।

তবে এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৬ সালে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর সদস্য এলোন আজারিয়া হেবরনে একজন নিরপরাধ ফিলিস্তিনীকে গুলি করে হত্যা করে। এ ঘটনায় ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তাকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু সে বছরের সেপ্টেম্বরে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর চিফ অফ স্টাফ তার দণ্ড চার মাস কমিয়ে দেন। কিন্তু ২০১৮ সালের মার্চে ‘ভালো আচরণের’ কারণে তাকে মুক্তির দিয়ে দেয়া হয়।

মাত্র ৯ মাস জেল কেটে মে মাসে যখন আজারিয়া মুক্তি পায় তখন তাকে নায়কোচিত সংবর্ধনা দেয়া হয়। এরপর ইসরাইলি প্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘তিনি তাই করেছেন যা তাকে ট্রেনিংয়ের সময় শেখানো হয়েছে’।

ফিলিস্তিনীতের বিরুদ্ধে ইসরাইলের আক্রমণ একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) হিসাব মতে, ২০১৭ সালে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী ৪২ জন ফিলিস্তিনীকে হত্যা করেছে। আহত করেছে আরো ৩ হাজার ২শ’ ৭৯ জনকে। এইচআরডব্লিউ আরো জানায়, ভিডিও পর্যবেক্ষণ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, অনেক ঘটনায়ই ইসরাইলি বাহিনী অত্যধিক শক্তি প্রয়োগ করেছে। সূত্র : মিডলইস্ট মনিটর

আরো পড়ুন :
ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা
আলজাজিরা, ১০ আগস্ট ২০১৮
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বৃহস্পতিবার ইসরাইল অন্তত ১৪০ দফায় বিমান হামলা করেছে। অন্য দিকে গাজা থেকে ইসরাইলে হামাস ১৫০টি রকেট নিক্ষেপ করেছে বলে দাবি করেছে ইসরাইল। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন অবরুদ্ধ গাজায় তেল আবিবের এই বর্বরতার কারণে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ শুরু হতে পারে।

ইসরাইল জানায়, তারা গাজা উপত্যকায় হামাসের ১৪০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। আর গাজা থেকে ১৫০টির বেশি রকেট ছোঁড়া হয়েছে। তবে এসব রকেটের মধ্যে ২৫টিকে তারা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম দিয়ে ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করেছে। এসব রকেট হামলায় কয়েকজন ইসরাইলি আহত হয়েছে বলেও দাবি করেছে। ইসরাইলের দাবি, গাজা থেকে দেড় শতাধিক রকেট ছোঁড়ার পর তারা পাল্টা হামলা চালিয়েছে।

এদিকে হামাস এই হামলার কথা স্বীকার করেছে। তারা বলেছে, মঙ্গলবার তাদের দুই যোদ্ধা ইসরাইলি ট্যাঙ্কের গোলায় শহিদ হওয়ার পর এর প্রতিশোধ নিতে তারা এ হামলা চালিয়েছে। হামাস বলছে, ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল এবং এখন তা পূর্ণ হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার রাত থেকে চালানো এসব বিমান হামলায় এক অন্ত:সত্ত্বা ফিলিস্তিনি নারী ও তার দেড় বছর বয়সী সন্তানসহ তিনজন নিহত হয়েছেন।

ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হামাস ও ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষ। প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ইসরাইলকে থামানোর জন্য জাতিসঙ্ঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

স্বীকৃতি পাচ্ছে ফিলিস্তিন!
দ্য ডেইলি স্টার, টাইমস অব ইসরাইল ও ইন্ডিপেনডেন্ট, ২৯ জুন ২০১৮
প্রিন্স উইলিয়াম ফিলিস্তিনী অঞ্চলকে ‘দেশ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। রামাল্লায় মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি আব্বাসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমাকে এখানে স্বাগত জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি অত্যন্ত আনন্দিত এই ভেবে যে, আমরা দুটি দেশ একত্রে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি এবং অতীতে শিক্ষায় ও ত্রাণের কাজে আমাদের দু দেশের মধ্যে সফলতার গল্প রচিত হয়েছে।’

পশ্চিমা দেশগুলো সাধারণত ফিলিস্তিনীকে একটি দেশ বা রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ না করে বরং ভবিষ্যতে- তথা কথিত দুই রাষ্ট্র সমাধানে কেবল ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বের পক্ষে নিজেদের সমর্থন দেয়। জাতিসঙ্ঘে ফিলিস্তিনের পর্যবেক্ষক মর্যাদা থাকলেও এটি সেখানে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত নয়।

প্রিন্স উইলিয়াম প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিনী অঞ্চলে শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি ফিলিস্তিনীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের ভুলে যাইনি।’ সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অধিকৃত জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণার পর এই স্পর্শকাতর সময়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই সিনিয়র সদস্যের আগমন ঘটল এ অঞ্চলে।

ইসরাইলের উপকূলীয় শহর তেল আবিব থেকে অভ্যর্থনা দিয়ে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের হিলটপ অফিসে নিয়ে আসা হয় প্রিন্সকে। ফিলিস্তিনীরা আব্বাসের হেড কোয়ার্টার্সে ব্রিটিশ সিংহাসনের দ্বিতীয় উত্তরাধিকারী উইলিয়ামকে লাল গালিচা সংবর্ধনাসহ গার্ড অব অনার দিয়ে সম্মান জানায়।

এ দিকে মঙ্গলবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাত করেন উইলিয়াম। সে সময় নেতানিয়াহু ইসরাইলের অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনীদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি প্রত্যাখান করেন এবং সেখানে ইহুদী বসতির পক্ষে তার সমর্থন পুনরায় ব্যক্ত করেন। এই পশ্চিম তীরেই আব্বাস কর্তৃপক্ষের ঘাঁটি রয়েছে।

তবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র অফিসের তরফ থেকে প্রিন্সের বক্তব্যের বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করে বলা হয়, ‘ব্রিটিশ সরকার সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও টেকসই ফিলিস্তিনী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করে, যেখানে শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে তারা ইসরাইলের পাশাপাশি বসবাস করতে পারবে।’ এতে আরও বলা হয়, ‘যুক্তরাজ্য এক সময় ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে।’

পরে রামাল্লায় শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যান প্রিন্স এবং ফিলিস্তিনের একটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক নৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নেন। এ সময় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র নিরাপত্তা সদস্যদের বেশ কিছু ভবনের ওপরে ও নিচে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। শরণার্থী এ শিবিরটিতে ৯ হাজারেরও বেশি মানুষ গাদা-গাদি করে বাস করছে।

ফিলিস্তিনী শিশুদের সঙ্গে ফুটবল খেলায় অংশ নেয়ার আগে প্রিন্স কফি ও সেখানকার ঐতিহ্যবহী খাবার খান। জিন্স প্যান্টের সঙ্গে নীল শার্ট ও উজ্জ্বল রঙ্গের জ্যাকেট পরিহিত প্রিন্স এ সময় ৪ বার গোল পোস্টে বল কিক করেন। তবে শিশু গোলকিপার ৩ বার বল ঠেকাতে সক্ষম হলেও চতুর্থবার পারেনি।

রামাল্লার মেয়র মুসা হাদেল জানান, তিনি প্রিন্সকে ফিলিস্তিনীদের ইতিহাস জানাতে সহায়তা করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের বার্তা ছিল- ফিলিস্তিনীদের বেঁচে থাকার জন্য আমাদের দেশে শান্তি দরকার।’ ফিলিস্তিনীদের উদ্দেশে প্রিন্স বলেন, ‘আপনাদের মতো আমিও চাই, এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক।’


আরো সংবাদ



premium cement
গণকবরে প্রিয়জনদের খোঁজ কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা

সকল