১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খাশোগি নিখোঁজের ব্যাপারে যা বললেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স

খাশোগির নিখোঁজের বিষয়েও কিছু জানেন না সৌদি প্রিন্স - সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান তাকে জানিয়েছেন - সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিখোঁজের বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত চলছে এবং তার নিখোঁজের বিষয়েও কিছু জানেন না সৌদি প্রিন্স।

বার্তা সংস্থাএপি'কে দেয়া সাক্ষাতকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, "কোনো কিছু প্রমাণ না হওয়ার আগে সৌদি আরবকে দোষারোপ করা হচ্ছে।"

এদিকে তুরস্কের কর্মকর্তারা বলছেন, ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে অভিযান চালালে প্রমাণ পাওয়া যাবে যে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে।

দুই সপ্তাহ আগে তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর থেকে নিখোঁজ রয়েছেন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। যদিও শুরু থেকে তুরস্ক দাবি করে আসছে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে। তবে সৌদি আরব এ অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করছে।

খাশোগি নিখোঁজের পর ট্রাম্প এ ঘটনাকে 'ভয়ঙ্কর ও বর্বর' বলে উল্লেখ করেছিলেন। তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন বলছেন, সৌদি সাংবাদিক নিখোঁজের বিষয়ে পুরোপুরি না জানা পর্যন্ত দেশটির নেতাদের এ নিয়ে দোষারোপ করা উচিত নয় বিশ্ববাসীর।

যেভাবে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে বলে বলা হচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে।

অনেক দেশেই নতুন করে দাবি উঠছে সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক নতুন করে বিবেচনার, কেউ কেউ সৌদি আরবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথাও বলছেন।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ কী বলেছেন?

সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি গত ২ অক্টোবর দুপুরের দিকে সৌদি দূতাবাসে যান। স্থানীয় সময় দেড়টার দিকে তার অ্যাপয়নমেন্ট ছিল। দূতাবাসের বাইরে ছিলেন তার তুর্কী বান্ধবী হাতিস চেঙ্গিস। খাশোগির অপেক্ষার দূতাবাসের বাইরে ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করে ছিলেন তিনি।

খাশোগি নিখোঁজের পর থেকেই তাকে হত্যার যে দাবি জানায় তুরস্কের কর্তৃপক্ষ তা পুরো বিশ্বকে নাড়া দেয়। তথ্যপ্রমাণ হাজির না করতে পারলেও তুরস্কের এমন দাবির কারণে সৌদি আরবের ওপর চাপ বাড়তে থাকে।

তবে গতরাতে ট্রাম্প টুইট বার্তায় জানান প্রিন্স মোহাম্মদের সাথে তার কথা হয়েছে এবং "তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে আসলে কী ঘটেছে সে বিষয়ে কোনো কিছু জানার কথা তিনি জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন। তার কথা শুনে মনে হয়েছে কোনো দুর্বৃত্ত এর সাথে জড়িত থাকতে পারে।"

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরো বলেছেন, "তিনি আমায় বলেছেন, এ বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত শুরু হয়েছে। আশা করি খুব শিগগিরই জানা যাবে আসলে কী ঘটেছে সেখানে।"

প্রিন্স মোহাম্মদের সাথে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ফোনালাপের বিষয়টি এমন সময় জানা গেল যখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সৌদি আরব সফরে রয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের সাথে সাক্ষাতও করেছেন।

তদন্ত সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে?

জামাল খাশোগির সৌদি কনস্যুলেটে নিখোঁজের রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।

ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে এরই মধ্যে তল্লাশি হয়েছে। আরো ব্যাপক পরিসরে তল্লাশির উদ্যোগ নিচ্ছে তুরস্ক। সৌদি আরব সোমবার ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।

আর যৌথ তদন্তের উদ্যোগ নেয়ার কারণে তদন্ত কাজ শেষ হতে আরো একটু সময় লাগতে পারে জানাচ্ছেন তুরস্কের কর্মকর্তারা।

ইতোমধ্যে তুরস্কের গণমাধ্যমে কিছু সিসিটিভি ফুটেজ প্রচারিত হয়েছে, যাতে সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী ও সাংবাদিক খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

ওই ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, ইস্তাম্বুলের বিমান বন্দর দিয়ে কথিত সৌদি গোয়েন্দারা ঢুকছে এবং বের হয়ে যাচ্ছে।

সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, কতগুলো গাড়ি সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর ঢুকছে। এর মধ্যে কালো রঙের একটি ভ্যান সম্পর্কে তুর্কী কর্তৃপক্ষ জানতে খুবই আগ্রহী। ভিডিওতে আরো দেখা যাচ্ছে, একদল সৌদি ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে দিয়ে প্রবেশ করছে, হোটেলে চেক-ইন করছে এবং পরে সে দেশ ত্যাগ করছে।

তুর্কী তদন্তকারীরা দুটি সৌদি গাল্ফস্ট্রিম জেট বিমান সম্পর্কেও খোঁজখবর করছে।

এই বিমান দুটি ২ অক্টোবর অবতরণ করেছিল। খাশোগি সেই দিন থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন।

খাশোগির কনস্যুলেটে ঢোকার দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। কিন্তু তার বেরিয়ে আসার কোনো প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।

তুর্কী সংবাদপত্র সাবাহ খবর দিয়েছে, সৌদি গোয়েন্দা বাহিনীর ১৫ জন সদস্য ওই সাংবাদিকের গুমের সাথে জড়িত বলে তারা জানতে পেরেছে।

পুলিশ এখন প্রায় ১৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা পরীক্ষা করে দেখছে। তুরস্ক বলছে, তারা সৌদি কনস্যুলেটে তল্লাশি চালাবে। অন্যদিকে, সৌদি আরব বলছে যে কোনো তদন্তের সাথে তারা সহযোগিতা করবে।

কিন্তু তুর্কী সরকার দাবি করছে, খাশোগি যে কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গেছেন সৌদি সরকারকেই সেটা প্রমাণ করতে হবে।

কে এই জামাল খাসোগজি?

খাশোগি একজন নামকরা সাংবাদিক যিনি অনেক বড় বড় সংবাদ কভার করেছেন। এর মধ্যে আফগানিস্তানে সোভিয়েত অভিযান, ওসামা বিন লাদেনের উত্থান ইত্যাদি। অনেক বড় বড় সংবাদ প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি এসব খবর লেখেন।

গত বছর আমেরিকায় যান স্বেচ্ছা নির্বাসন নিয়ে এবং ওয়াশিংটন পোস্টে প্রতি মাসে কলাম লিখতেন যেখানে তিনি সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান সম্পর্কে সমালোচনামূলক লেখা লিখেছেন।

নিজের প্রথম কলামেই তিনি লেখেন, যুবরাজ সালমান বাদশাহ সালমানের স্থলাভিষিক্ত হলে খাশোগি ভিন্নমত পোষণের কারণে গ্রেফতার হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।

গুম হওয়ার মাত্র তিন দিন আগে বিবিসি নিউজ আওয়ার অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, "যাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে তারা শুধু বিদ্রোহী তা নয়, তাদের স্বাধীন মন রয়েছে।"

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement
গাজা মানবিক নরকে পরিণত হয়েছে : জাতিসঙ্ঘ প্রধান রাফা হামলার পরিকল্পনা ইসরাইলের ত্যাগ করা উচিত : চীন গাজা যুদ্ধে নতুন যে কৌশল অবলম্বন করল ইসরাইল হাসপাতালের শৌচাগারে মিলল নবজাতক শিশু ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিসিডিপি গঠন করা হবে : পরিবেশমন্ত্রী অননুমোদিত জমি ভরাট কার্যক্রমের সন্ধান পেলে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ ভূমিমন্ত্রীর ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা ইসরাইলকে পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাতের ব্যাপারে সতর্ক করলো আইআরজিসি সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদারের ১২৮তম প্রয়াণ দিবসে স্মরণ সভা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের শূন্য পদ দ্রুত পূরণের নির্দেশ

সকল