২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জেরুসালেম সঙ্কট : সৌদি যুবরাজের ঘনিষ্ঠ আলেমের আহ্বান

মধ্যপ্রাচ্য
শেখ মুহাম্মদ আল ইশা - ছবি : মিডলইস্টআই

ফিলিস্তিনের অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে শান্তির জন্য সব ধর্মের নেতাদের জেরুসালেম যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবের একজন প্রসিদ্ধ ধর্মীয় নেতা। শেখ মুহাম্মদ আল ইশা নামের এ আলেম সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ জন।

সৌদির অর্থায়নে পরিচালিত মুসলিম ওয়ার্ল্ড লিগের (এমডব্লিউএল) সাধারণ সম্পাদক ইশা নিউইয়র্কে আন্তঃধর্মীয় এক সম্মেলনে ফিলিস্তিন সঙ্কট নিরসনে একটি ‘শান্তি কাফেলা’ ‍শুরু করতে খ্রিষ্টান, ইহুদি ও মুসলমান নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

শনিবারের এ সম্মেলনে ইশা বলেন, এ তিন ধর্মের যুক্ত বহর জেরুসালেমের সব পবিত্র স্থানগুলো পরিদর্শনে যাওয়া উচিত।

‘যুক্তিভিত্তিক জ্ঞান ও ন্যায়বিচারের মানসিকতা সম্পন্ন প্রভাবশালী লোকজন ছাড়া এ সঙ্কটের সমাধান সম্ভব নয়’, বলছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এখানে উপস্থিত নেতাদের রাজনৈতিক কোনো এজেন্ডা থাকা উচিত নয়। রাজনৈতিক এজেন্ডা ছাড়াই তারা আরো বেশি প্রভাবশালী হয়ে উঠতে পারেন, কারণ তারা স্বাধীন।’

‘এ বহর সৌদি আরবের নয় এবং এটা সৌদি আরবের প্রতিনিধিত্বও করবে না। এটা এসেছে মুসলিম, খ্রিষ্টান ও ইহুদি বিশ্ব থেকে। এর কোনো নির্দিষ্ট দেশ নেই’, বলেন ইশা।

এ আহ্বান এলো সৌদি আরব থেকে, যাদের সাথে ইসরাইলের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। এবং অধিকাংশ আরব দেশ ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় না; জেরুসালেম নিয়ে ইসরাইলের দাবিও নাকচ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও মুসলিম বিশ্বের মধ্যে সংস্কৃতি বিনিময় বিষয়ে নিউইয়র্কে এটি এমডব্লিউএলের দ্বিতীয় সম্মেলন।

সম্মেলনে ইশা তার বক্তব্যে বলেন, জেরুসালেমে এ ধরনের সমাবেশ হলে বিপর্যয়কর রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি থেকে ‘উগ্রপন্থীদের’ নিবৃত্ত রাখবে।

এ বছরের শুরুর দিকে সৌদি যুবরাজ আটলান্টিক ম্যাগাজিনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে ইসরাইল রাষ্ট্রের সমর্থনে বলেছিলেন, ‘ইসরাইলের একটি নিজস্ব ভূখণ্ডের অধিকার রয়েছে’।

মিসরের গ্রান্ড মুফতি শাউকি আলম বলেন, তিনি আশা করেন সংলাপটি একটি সর্বজনীন পদ্ধতির ভিত্তি স্থাপন প্রচেষ্টায় ইতিবাচক অবদান রাখবে’।

সম্মেলনে ইনস্টিটিউট ফর দি স্টাডি অফ গ্লোবাল এন্টিসেমিটিজম অ্যান্ড পলিসির সভাপতি চার্লস স্মল বলেন, আমেরিকায় আজকের ইহুদি বিদ্বেষের সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার মুসলমানরা।

ইহুদি লেখক ও হলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া ইলি উইসেলের একটি বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইহুদিবিদ্বেষ শুধু ইহুদিদের মাঝেই শেষ হয় না’। সূত্র : মিডলইস্ট আই

আরো পড়ুন :
জেরুসালেম দর কষাকষির বস্তু নয় : মাহমুদ আব্বাস
আলজাজিরা, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮
জাতিসঙ্ঘের ৭৩তম সাধারণ অধিবেশনের বিতর্ক পর্বে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

বৃহস্পতিবার জেরুসালেম প্রসঙ্গ দিয়ে বক্তব্যের শুরু করে তিনি বলেন, ‘জেরুসালেম বিক্রির বস্তু নয় এবং ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার নিয়ে দর কষাকষি চলবে না’।

স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে সমর্থন দেয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আব্বাস। সেই সাথে ইসরাইলের বিরুদ্ধে পাস হওয়া প্রস্তাব কার্যকর করার জন্য জাতিসঙ্ঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

গত বছরের ৬ ডিসেম্বর জেরুসালেমকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরাইলে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে নেয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। চলতি বছরের মে মাসে জেরুসালেমে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে মার্কিন প্রশাসন। প্রতিবাদে ফিলিস্তিনসহ বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে। এরপর জেরুসালেম বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত অকার্যকর ঘোষণা করে জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাস করা হয়। জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদে ভোট হলে মার্কিন স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যানের প্রস্তাবের পে ভোট দেয় ১২৮টি দেশ। বিপরীতে ট্রাম্পের প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় মাত্র ৯টি দেশ। আর ভোটদান থেকে বিরত ছিল ৩৫ দেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের ইসরাইলস্থ দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুসালেমে সরিয়ে নেয়ার পর বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য দিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। জেরুসালেমকে দর কষাকষির বিষয়বস্তুতে পরিণত না করতে দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বলেন, ‘জেরুসালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি না দেয়া হলে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।’


আরো সংবাদ



premium cement