২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইসরাইলি জঙ্গিবিমান ঠেকাতে সিরিয়ায় রুশ এস-৩০০

ইসরাইলি জঙ্গিবিমান ঠেকাতে সিরিয়ায় রুশ এস-৩০০ - ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়া আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিরিয়ান সেনাবাহিনীর কাছে আধুনিক এস-৩০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হস্তান্তর করবে। সিরিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা জোরদারই এর লক্ষ্য।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সার্গেই সইগো সোমবার এ কথা বলেন।

সম্প্রতি ভুল করে সিরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৫জন সেনাসহ একটি রুশ যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী তার টেলিভিশন বিবৃতিতে জানান। খবর এএফপি’র।
তবে রাশিয়া তাদের যুদ্ধ বিমান বিধ্বস্তের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে।

আরো পড়ুন :

আহভাজ সন্ত্রাসী হামলা উপসাগরীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের দুষলো ইরান
রয়টার্স ও আলজাজিরা

ইরানে সামরিক প্যারেডে হামলা চালিয়ে ২৯ জনকে হত্যার ঘটনায় ‘যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট’ পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোকে দায়ী করেছেন ইরানি নেতারা। শনিবার দণি-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর আহভাজের ওই হামলার ঘটনায় নিহতদের মধ্যে একটি শিশুসহ ইরানের দুর্ধর্ষ বিপ্লবী রী বাহিনীর ১২ সদস্য রয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পুতুলগুলো’ ইরানে ‘নিরাপত্তাহীনতা তৈরির’ চেষ্টা করছে। বিপ্লবী রী বাহিনী খামেনির কমান্ডের অধীন।

হামলায় নিহতদের প্রায় অর্ধেকই এই বাহিনীটির সদস্য। হামলার পেছনে আঞ্চলিক যে দেশগুলো আছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন তাদের নাম নেননি খামেনি। ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সি (আইআরএনএ) জানিয়েছে, ইরাক যুদ্ধের (১৯৮০-৮৮) বর্ষপূর্তি উপলে খুজেস্তান প্রদেশের আহভাজ শহরে ওই প্যারেডের আয়োজন করা হয়েছিল।

হামলাকারীরা বেসামরিকদের ল্য করে গুলি ছোড়ে ও মঞ্চে থাকা সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে বলে ইরানি বার্তা সংস্থা ফার্স জানিয়েছে। গুলিতে নিহত বেসামরিকদের মধ্যে কুচকাওয়াজ দেখতে আসা শিশু ও নারী রয়েছে বলে জানিয়েছে আইআরএনএ। ইরানের সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে চার বছর বয়সী একটি মেয়ে ও হুইলচেয়ারে থাকা প্রবীণ সামরিক ব্যক্তি রয়েছেন।

স্থানীয় সাংবাদিক বেহরাদ ঘাসেমি জানিয়েছেন, ১০ থেকে ১৫ মিনিট ধরে গুলি চলে এবং হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত একজন বিপ্লবী রী বাহিনীর উর্দি পরা ছিল। তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম এটা প্যারেডের অংশ, কিন্তু ১০ সেকেন্ড পর (কর্মকর্তাদের) দেহরীরা গুলি ছুড়তে শুরু করার পর আমরা বুঝতে পারি এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা।’

আরো পড়ুন :

আমরা রাশিয়াকে বিশ্বাস করি না
গার্ডিয়ান

সম্প্রতি বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার ইদলিব নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে তুরস্ক ও রাশিয়া। আর দুই দেশের এই সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়েছে ইরান ও সিরিয়ার সরকার। সম্ভাব্য যুদ্ধের হাত থেকে একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে মুক্তি পাওয়া ইদলিবের বাসিন্দা ও বিদ্রোহী যোদ্ধারা এখন এই সমঝোতার ব্যাপারে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছেন। 
উল্লেখ্য, দিন দুয়েক আগে তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে হওয়া সমঝোতায় সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন হামলা কমপক্ষে এক মাসের জন্য স্থগিত রাখা এবং প্রদেশটির ৩০ লাখ বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তার জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে।

গত সোমবার হওয়া তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যকার এই সমঝোতার মাধ্যমে ইদলিবে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টির আশঙ্কা আপাতত কমে গেছে এবং বিদ্রোহীদের বিতাড়িত করে ইদলিবে খুব সহজেই সিরিয়ার বাশার সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি অনির্দিষ্টকালের জন্য ঝুলে গেছে। পাশাপাশি রাশিয়া-তুরস্ক সমঝোতার ফলে উত্তরাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশের আঙ্কারা সমর্থিত বিদ্রোহী যোদ্ধারা সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে এবং তারা অন্যান্য বিদ্রোহী গ্রুপগুলোর নেতৃত্ব দেবে। তা ছাড়া দামেস্ক ও মস্কোর যৌথ আক্রমণের আশঙ্কা না থাকায় সিরিয়ার সরকারবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জন্য এই সমঝোতা ‘স্বাগত অবসর’ হিসেবে সামনে এসেছে। ‘ফ্রি ইদলিব পুলিশ’ নামে ইদলিবের বিদ্রোহী সমর্থিত পুলিশ বাহিনীর মুখপাত্র মাহমুদ আব্বি বলেন, ‘ইদলিবের বেসামরিক মানুষ এই সমঝোতাকে ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে। তারা এই চুক্তি টিকবে বলে আশাবাদী। ইদলিবে রাশিয়া ও আসাদ সরকারের আক্রমণ প্রতিরোধ করতে তুরস্কের চালানো প্রচেষ্টার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। যাই হোক, সমঝোতা বা চুক্তির ব্যাপারে আমরা রাশিয়াকে বিশ্বাস করি না। কিন্তু বর্তমান অবস্থা বিবেচনায়, বোমা হামলার শিকার বা উদ্বাস্তু হয়ে জীবনযাপন করা থেকে এটা (সমঝোতা) ভালো।’

তিনি আরো বলেন, ‘নিজের নিরাপত্তার জন্য তুরস্ক এই চুক্তি করলেও এর মাধ্যমে পুতিন ও আসাদের মুখরক্ষা হয়েছে। অন্য দিকে, বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক অবস্থা ও অদক্ষ সেনাবাহিনীর জন্য ইরান ইদলিব আক্রমণে বাশার সরকারের সঙ্গী হওয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে। আসাদ সরকার খুই দুর্বল এবং ইরানের সেনাবাহিনীর সাহায্য ছাড়া তার আক্রমণ করার কোনো শক্তিই নেই।’ উল্লেখ্য, গত সোমবার রাশিয়ার সোচি শহরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং ইদলিব ইস্যুতে উভয় দেশ সমঝোতায় পৌঁছে। এর আগে এক সপ্তাহ আগে তেহরানে অনুষ্ঠিত ইরান, তুরস্ক ও রাশিয়ার ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অবশ্য, এই দু’টি বৈঠকের কোনোটাতেই আসাদ সরকারের কোনো পর্যায়ের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিল না।


আরো সংবাদ



premium cement