২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইরানের সামরিক কুচকাওয়াজে যেভাবে হামলা হলো

যেভাবে কুচকাওয়াজে হামলা, নিহত ২৪ ইরানি সেনা - ছবি : এএফপি

ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় আহ্‌ভাজ প্রদেশে এক সামরিক কুচকাওয়াজের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, নিহতদের মধ্যে বেসামরিক মানুষও রয়েছে। আহত হয়েছে ৫০ জনেরও বেশি। উনিশশো আশির দশকে ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের বার্ষিকী উপলক্ষে দেশজুড়ে এই কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়।

সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, আক্রমণকারীরা সামরিক উর্দি পরে ছিল এবং পাশের একটি পার্ক থেকে কুচকাওয়াজের ওপর গুলি বর্ষণ করে। তারা প্রথমে বেসামরিক লোকজনের ওপর গুলি চালায় এবং পরে পোডিয়ামের ওপর দাঁড়ানো সামরিক অফিসারদের দিকে আক্রমণের চেষ্টা চালায়।

পুরো ঘটনাটি ঘটতে সময় নেয় প্রায় ১০ মিনিট।

ফার্স বার্তা সংস্থা জানাচ্ছে, স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় এই হামলা শুরু হয়। হামলাকারীরা মোট চার জন ছিল বলে তারা বলছে।

আহ্ভাজের ডেপুটি গভর্নর আলী হোসেন হোসেনজাদা বলছেন, নিরাপত্তা বাহিনী দু'জন অস্ত্রধারীকে হত্যা করেছে এবং অন্য দু'জনকে জীবিত আটক করেছে।

নিহতদের মধ্যে ইরানের রেভলুশনারী গার্ডস বাহিনীর আটজন সদস্য এবং একজন সাংবাদিক রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই আক্রমণের জন্য সুন্নি কিংবা আরব জাতীয়তাবাদীদের দায়ী করেছে।

ইরানে গত বছর যে ক'টি শহরে বড় মাপের সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছিল তার মধ্যে আহ্‌ভাজ একটি।

ইরানের আরব সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদে মদদ দেয়ার জন্য তেহরান সরকার এর আগে প্রতিবেশী সৌদি আরবকে দায়ী করেছে।

আরো পুড়ুন :
পবিত্র প্রতিরক্ষা যুদ্ধ থেকে ইরানের শিক্ষা: সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি থাকতে হবে
পার্সটুডে
ইরানের আট বছরের প্রতিরক্ষা যুদ্ধ ছিল বিশ্ব সাম্রাজ্যবাদী শক্তি আমেরিকা ও তার আঞ্চলিক দোসরদের বিরুদ্ধে ইরানের আপামর জনসাধারণের অকুতোভয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। ইরাকের সাবেক শাসক সাদ্দামের নেতৃত্বে ইরানের বিরুদ্ধে ওই যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হলেও বাগদাদকে সহযোগিতা করেছিল গোটা পশ্চিমা দুনিয়া।

ইরানি জনগণ আট বছরের ওই যুদ্ধে প্রমাণ করেছেন, তারা যেকোনো মূল্যে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষা করবেন।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী এ সম্পর্কে বলেন, প্রতিরক্ষা যুদ্ধে তার দেশের জান-মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও বর্তমান ও আগামীর জন্য এ যুদ্ধ অনেক বড় অবদান রেখেছে। ইরানি জনগণের মধ্যে বিপ্লবী চেতনা শক্তিশালী হওয়া এবং ইসলামি বিপ্লব অক্ষুণ্ন থাকা হচ্ছে ওই যুদ্ধের সরাসরি অবদান। ওই যুদ্ধে ইরানি জনগণের মধ্যে আত্মত্যাগের প্রবণতা তৈরি না হলে ইসলামি বিপ্লব আজ হুমকির মুখে পড়ত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

প্রতিরক্ষা সপ্তাহ শুরুর আগে ইরানের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ইরানি জনগণের মধ্যে যতদিন এই বিপ্লবী চেতনা থাকবে ততদিন তারা কোনো আধিপত্যকামী শক্তিকে তাদের দেশের ওপর চড়াও হওয়ার সুযোগ দেবে না।

আট বছরের প্রতিরক্ষা যুদ্ধে ইরান ধর্মীয় নৈতিকতা ও যুদ্ধের আইন-কানুন মেনে চলেছে। অন্যদিকে সাদ্দামের নেতৃত্বাধীন ইরাকি বাহিনী বহুবার যুদ্ধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। বেসামরিক নাগরিকদের ওপর রাসায়নিক গ্যাস প্রয়োগ এবং বিভিন্ন শহরের বেসামরিক এলাকায় ব্যাপকভাবে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে নিরীহ মানুষকে হত্যা করা ছিল সাদ্দম সরকারের মানবতা বিরোধী পদক্ষেপের দু’টি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। আমেরিকার সমরাস্ত্র সহায়তা এবং কিছু আরব দেশের পেট্রোডলার নিয়ে সাদ্দাম ইরানের বিরুদ্ধে ওই যুদ্ধ চালিয়ে যায়।

ইরান চাপিয়ে দেয়া সেই যুদ্ধের সময় থেকে এখন পর্যন্ত আমেরিকাকে মধ্যপ্রাচ্যের সমস্ত অস্থিতিশীলতার হোতা বলে মনে করে। মার্কিন সরকার কখনোই মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে নিজের অশুভ লক্ষ্য চরিতার্থ করার কাজ থেকে বিরত থাকেনি। আর ওই যুদ্ধ থেকে ইরান যে শিক্ষা গ্রহণ করেছে তা হলো, বলদর্পী বাহিনীর সম্ভাব্য আগ্রাসন প্রতিহত করার জন্য প্রতি মুহূর্তে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement