২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উদ্ধত ইসরাইল, নিস্ক্রিয় বিশ্ব!

উদ্ধত ইসরাইল, নিস্ক্রিয় বিশ্ব! - সংগৃহীত

ইসরাইল ও মার্কিন সরকার ফিলিস্তিনিদেরকে কথিত শতাব্দির চুক্তি সংক্রান্ত আলোচনায় বসতে বাধ্য করার জন্যই সম্প্রতি এইসব ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ জোরদার করেছে। কিন্তু সংগ্রামী ফিলিস্তিনিরা বলছেন, আমরা ইসরাইলের সাথে আপোষ করব না, হয় সসম্মানে বাঁচব অথবা মৃত্যু বরণ করব।

ইসরাইলি সেনারা খান আল আহমার মহল্লার জনগণের ওপর হামলা করায় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট প্রতিবাদ জানিয়েছে। ইসরাইলের সেনারা ওই এলাকাটিকে ঘিরে রেখেছে এবং গ্রামটির ওপর অবরোধ জোরদার করেছে। 

ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর ভেঙ্গে দিয়ে সেখান থেকে তাদেরকে জোর করে উচ্ছেদ করতে চায় ইসরাইল। আর এ জন্যই সেখানে সেনা অভিযান জোরদার করছে ইসরাইল।

ইউরোপীয় সংসদ বলেছে,  ফিলিস্তিনিদের জোর করে বিতাড়িত করার অভিযান ইসরাইলকে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। ফিলিস্তিনের যে পরিস্থিতি ছিল তা বদলে দেয়ার জন্য যেসব পদক্ষেপ ইসরাইল নিচ্ছে সেসবই বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে এই সংসদ। 

ইসরাইলের এক আদালত মুসলমানদের প্রথম কিবলার শহর জেরুসালেমে অবস্থিত  খান আল আহমার মহল্লাটির ৩৫ পরিবারকে ওই মহল্লা থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছে। গত মে মাসের ওই নির্দেশের পর ইসরাইলি সশস্ত্র বাহিনী খান আল আহমারকে সামরিক নিষিদ্ধ অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং সেখানে ভারী সামরিক সাজ-সরঞ্জাম ও বুলডজার নিয়ে প্রবেশ করেছে। কিন্তু ওই মহল্লার ৩৫ পরিবারের মোট ২০০ সদস্যসহ আশপাশের ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের এই অন্যায় উচ্ছেদ অভিযানের মোকাবেলায় প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। 

ফিলিস্তিনকে পর্যায়ক্রমে গ্রাস করার বা গিলে ফেলার দানবীয় ইসরাইলি নীতি জেনেভা কনভেনশনসহ জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবগুলোর লঙ্ঘন।

ইউরোপীয় জোটের পররাষ্ট্র বিভাগের প্রধান ফেডেরিকা মোগেরিনি অবৈধ ইসরাইলি বসতি বিস্তারের বিরোধিতা করে বলেছেন, এসব পদক্ষেপ শান্তি প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী 'জ্যাঁ ইভ লা দ্রিয়ান'ও ইসরাইলের খান আল আহমারকে গ্রাস করার ইসরাইলি পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, এসব পদক্ষেপ স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনাকে নষ্ট করবে।  

কিন্তু মার্কিন সরকারের সর্বাত্মক মদদপুষ্ট ইসরাইল বিশ্বব্যাপী নিন্দা ও প্রতিবাদ সত্ত্বেও ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে জনসংখ্যার কাঠামো বদলে দিতে ফিলিস্তিনিদের বাড়ি-ঘর ধ্বংস করা ও তাদেরকে বিতাড়িত করার অভিযান অব্যাহত রেখেছে। পশ্চিম তীরের দক্ষিণাঞ্চলকে এ অঞ্চলের কেন্দ্রীয় এলাকাগুলো থেকে আলাদা করার জন্য বায়তুল আকসা থেকে বাহরালমাইত অঞ্চল পর্যন্ত ১২ লাখ বর্গমিটার ভূমি দখল করে এ অঞ্চলে অবৈধ বসতি নির্মাণের ষড়যন্ত্র করছে ইসরাইল সরকার।

ইসরাইল গাজায় অবরোধ জোরদারসহ এমন সময় ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ধ্বংসাত্মক তৎপরতা তীব্রতর করছে যখন মার্কিন সরকার ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সরবরাহকারী জাতিসঙ্ঘের সংস্থা আনরাওয়াকে অর্থ দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ইসরাইলের সংসদ সম্প্রতি ইসরাইলকে একমাত্র কথিত ইহুদিদের রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে আইন পাস করেছে। আর সেই থেকে ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের স্বদেশে ফেরা সংক্রান্ত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ আন্দোলনকে টার্গেট করে প্রায় দেড়শ ফিলিস্তিনিকে শহীদ করেছে।

 

ফিলিস্তিনিদের নীরবে হত্যা করতে চায় ইসরাইল!
মিডল ইস্ট মনিটর, ২০ জুলাই ২০১৮

ইসরাইলের পার্লামেন্ট নেসেটে 'ফেসবুক বিল' নামের একটি আইনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই আইনের ভিত্তিতে সন্ত্রাস উসকে দেয় এমন কোনো বিষয় মুছে ফেলতে ফেসবুক, গুগলসহ অন্যান্য ইন্টারনেট জায়ান্টকে অনুরোধ জানাতে পারবে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার নেসেট অপর একটি আইন পাস করেছে যার মাধ্যমে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে দেশটি। কারণ, ওই মানবাধিকার সংস্থাগুলো ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সেনাদের দমনপীড়নের বিষয়টি প্রকাশ করছে বলে মনে করছে ইসরাইল। 

এই নতুন আইনের বিষয়ে ইসরাইলি শিক্ষামন্ত্রী নাফতালি বেনেট জানান, যারা ইসরাইল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করছে তারাই এই আইনের লক্ষ্যবস্তু। শিক্ষামন্ত্রী নাফতালি বেনেটই ওই আইনটির বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছেন । 

নাফতালি বেনেট বলছেন, যেসব সাবেক ইসরাইলি সেনা ফিলিস্তিনিদের ওপর নিপীড়ন ও নির্মম আচরণ করেছে তাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে ইসরাইলি এনজিওগুলো গর্হিত কাজ করছে। তারা আমাদের গোপনীয়তা ফাঁস করে দিচ্ছে। 

ইসরাইল প্রতিদিনই ফিলিস্তিনিদের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইসরাইলি বর্বরতার তথ্য বহির্বিশ্ব যাতে অবগত না হতে পারে সেজন্যই ইসরাইলের ওই প্রচেষ্টা। আর এর মূল উদ্দেশ্য হলো নিরবে ফিলিস্তিনিদের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে যাওয়া এবং তাদের হত্যা করা। 


আরো সংবাদ



premium cement