২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

এবার তেল অস্ত্র প্রয়োগ করবে ইরান!

এবার তেল অস্ত্র প্রয়োগ করবে ইরান! - সংগৃহীত

ইরানের বিরুদ্ধে আসন্ন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১৫০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিখ্যাত হেজ ফান্ড এ সতর্কবার্তা দিয়েছে।

আগামী ৪ নভেম্বর থেকে আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। আমেরিকা বলছে, সেই নিষেধাজ্ঞা এত কঠোর হবে যে, তার ফলে ইরান বিশ্বের কোথাও জ্বালানি তেল বিক্রি করতে পারবে না।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানি তেলের শূন্যস্থান পূরণ করবে সৌদি আরব। এজন্য দেশটি প্রতিদিন বাড়তি ২০ লাখ ব্যারেল তেল উত্তোলন করবে।

তবে জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, ট্রাম্পের এ বক্তব্য সঠিক নয়। কারণ এটা এক কাপ কফি অর্ডার করা নয়; কেউ চাইলেই এক কাপ কফির মতো ২০ লাখ ব্যারেল তেলের অর্ডার দিতে পারে না।

গত ৮ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। এরপর গত ৬ আগস্ট ইরানের বিরুদ্ধে প্রথম দফার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর প্রভাবে এরইমধ্যে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৮ ডলার ছাড়িয়েছে।

 

ভয়েই ইরানের সাথে যুদ্ধ করবে না যুক্তরাষ্ট্র: খামেনি

দাঁত ভাঙ্গা জবাবের ভয়েই যুক্তরাষ্ট্র আগ বাড়িয়ে ইরানের সাথে যুদ্ধ শুরু করবে না বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। ওয়াশিংটনের সাথে কোনো ধরনের আলোচনার সম্ভাবনাও নাকচ করে দেন তিনি।

আর নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে ইরানের নীতিতে কোন পরিবর্তন আনা যাবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। এর মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম, এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে তেহরান।

সম্প্রতি ইরানের রাজধানী তেহরানে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির সাথে দেখা করতে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ। তাদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতায় খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানকে নিয়ে নোংরা রাজনৈতিক খেলায় মত্ত। অতীতে যেসব দেশ আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নমনীয় নীতি গ্রহণ করেছে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি বলেন, 'ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এখন দুটি রাস্তা। একটি যুদ্ধ, অন্যটি আলোচনা। কিন্তু তারা কখনোই যুদ্ধ শুরু করবে না। কারণ এতে তারা শতভাগ ক্ষতির মুখোমুখি হবে। আর ইরান কখনোই আগ বাড়িয়ে যুদ্ধ কিংবা সংঘাত সৃষ্টির পক্ষে নয়। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান উন্মাদ প্রশাসনের সঙ্গে ইরানিরা কখনোই আলোচনায় বসতে পারে না। তাদের একপক্ষ শর্তহীন আলোচনার কথা বলছেন, অন্য পক্ষ আবার শর্ত জুড়ে দিচ্ছেন।'

খামেনির এ বক্তব্যের পর, আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত হুমকি এবং নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, তেহরান তার পারমাণবিক কিংবা আঞ্চলিক নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনবে না। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে সব দেশের সাথে পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে কথা বলারও আহ্বান জানান তিনি। এসময় তিনি সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করেন।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কেবলমাত্র কথার যুদ্ধেই থেমে নেই ইরান। ক্রমাগত নিজের সামরিক শক্তি প্রদর্শনও অব্যাহত রেখেছে। র‌্যাডার ফাঁকি দিয়ে গিয়ে ইসরাইলসহ এবং মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন স্থাপনাসমূহে আঘাত হানতে সক্ষম, এমন একটি ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে তারা। সোমবার পরীক্ষা করা ক্ষেপণাস্ত্রটি দুই হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আমির হাতামি বলেন, 'ক্ষেপণাস্ত্রটি যেকোন অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারবে। এছাড়াও এটি যেকোন পরিস্থিতি কিংবা আবহাওয়াতেই নির্ভুলভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।'

এদিকে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ইরাকি প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি জানিয়েছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তেহরানের সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রাখবে তার দেশ। তবে ইরানের সাথে লেনদেনের ক্ষেত্রে মার্কিন ডলার ব্যবহার করা হবে না, তার বদলে দুদেশের স্থানীয় মুদ্রায়ই তারা লেনদেন করবেন বলে জানান তিনি। এর আগে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মেনে ইরানের সাথে বাণিজ্য না করার কথা জানিয়েছিল বাগদাদ।


আরো সংবাদ



premium cement