২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইসরাইল-আমিরাতের ১০ কোটি ডলার মূল্যের সামরিক চুক্তি

ইসরাইল-আমিরাতের ১০ কোটি ডলার মূল্যের সামরিক চুক্তি - সংগৃহীত

ইসরাইলের সংস্থা ডাব্লুজেডআর-এর সদস্য, লেখক ও সাংবাদিক মাহদি মাজিদ জানিয়েছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরাইলের সাথে সামরিক চুক্তি সই করেছে। এ চুক্তি অনুযায়ী আমিরাত ইসরাইলের অস্ত্র নির্মাণ কোম্পানির কাছ থেকে ১০ কোটি ডলার মূল্যের দেড়শ' কিলোমিটার পাল্লার রকেট ও মারকাবা ট্যাঙ্ক ক্রয় করবে।

ইসরাইলের সাথে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তার মধ্যে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সবার চেয়ে এগিয়ে। এমনকি আমিরাত এ ক্ষেত্রে সৌদিকেও ছাড়িয়ে গেছে এবং বর্তমানে আবুধাবি স্বাভাবিক সম্পর্কের ঊর্ধ্বে উঠে তেলআবিবের সাথে সর্বাত্মক সহযোগিতা বিস্তারের পদক্ষেপ নিয়েছে।

আমিরাত ভালো করেই জানে সারা বিশ্বের মুসলমানরা দখলদার ইসরাইলকে প্রচণ্ড ঘৃণা করে। এ অবস্থায় ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নিলেও মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকে যাতে তেমন প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে না হয় সেজন্য আমিরাত বিশেষ কৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। এ লক্ষ্যে আমিরাত সরকারিভাবে নয় বরং ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ইসরাইলের সঙ্গে ১০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র চুক্তি সই করেছে।

ইসরাইলের সাথে রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করা ছাড়াও তাদের সাথে আমিরাতের সামরিক চুক্তি সইয়ের আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়া। ডাব্লুজেডআর'র সদস্য, লেখক ও সাংবাদিক মাহদি মাজিদ এ ব্যাপারে বলেছেন, ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি জোটকে সহযোগিতা করা এই সামরিক চুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য।

যাইহোক, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি জোটকে ইসরাইলের সহযোগিতার বিষয়ে এ পর্যন্ত বহু খবরাখবর প্রকাশিত হয়েছে। ইয়েমেনে আগ্রাসন শুরুর প্রথম কয়েক মাসেই খবর বেরিয়েছিল সৌদি জোটের এ আগ্রাসনে ইসরাইল জঙ্গিবিমান, পাইলট, ক্ষেপণাস্ত্রসহ অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করছে।

আন্তর্জাতিক বিষয়ক ফরাসি গবেষক ও লেখক তিরি মিসান ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সৌদি আরব ও ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সৌদি আরব ও ইসরাইলের মধ্যে বাহ্যিক কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ইসরাইলও পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের সদস্য। কারণ এ পরিষদের বৈঠকে ইসরাইলকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়।

ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের আগ্রাসন চতুর্থ বছরে গড়িয়েছে। প্রথম থেকেই ইসরাইল সৌদি আরবকে সহযোগিতা দিয়ে আসলেও সম্প্রতি এ সহযোগিতার মাত্রা বহুগুণে বেড়েছে। কারণ সৌদি আরব ও তার মিত্ররা ইয়েমেন যুদ্ধের চোরাবালিতে আটকা পড়েছে। আর এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ইসরাইলের সহযোগিতা দরকার।

ডাব্লুজেডআর-এর সদস্য ও সাংবাদিক মাহদি মাজিদ যদিও ইসরাইলের কাছ থেকে আমিরাতের অস্ত্র কেনার কথা ফাঁস করে দিয়েছেন। ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইসরাইল সৌদি জোটকে বহু আগে থেকেই তথ্য ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিয়ে আসছে।

চীনের নতুন ভয়ঙ্কর অস্ত্র লেজার গান 

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, ০৯ জুলাই ২০১৮

অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে পাল্লা দিয়ে সামরিক সক্ষমতাও ক্রমেই বাড়িয়ে চলেছে চীন। এবার এক বিস্ময়কর অস্ত্র তৈরি করছে শি জিনপিংয়ের দেশ। রাইফেলের আদলে তৈরি অস্ত্রটি আদতে একটি লেজার গান। এ অস্ত্র থেকে নির্গত শক্তিশালী লেজার রশ্মি প্রায় এক কিলোমিটার দূরে আঘাত হেনে মারাত্মকভাবে পুড়িয়ে দিতে বা আগুন ধরিয়ে দিতে পারে।

অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন, অদূর ভবিষ্যতে এটিই হতে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে মারাত্মক হাতে বহনযোগ্য অস্ত্র, যার নাম দেয়া হয়েছে জেডকেজেডএম-৫০০। পরপর ১০০০ বার ফায়ার করা যাবে এটি থেকে। এটি ফায়ারের সময় লাগবে ২ সেকেন্ড। গাড়ি কিংবা জাহাজেও লাগানো যাবে এই অস্ত্রের কিছুটা ভিন্ন সংস্করণ।

চীনের মারাত্মক এই সর্বাধুনিক অস্ত্র এক কিলোমিটার দূরে দাঁড়িয়ে থাকা কোনো ব্যক্তিকে মেরে ফেলতে পারে। আর এ জন্য প্রয়োজন হবে মাত্র একটি আলোকরশ্মি, যা খালি চোখে দেখাও যাবে না। প্রয়োজন হবে না কোনো গুলির। শুধু ব্যাটারির চার্জেই চলবে এ অস্ত্র। অস্ত্রটির ওজন হবে আনুমানিক তিন কেজি। আর আয়তনে হবে অনেকটা একে ৪৭ রাইফেলের মতো। অস্ত্রটি থেকে নিক্ষিপ্ত বিম ঢুকে যাবে শত্রুর শরীরে। তারপর কষ্টদায়ক মৃত্যু ডেকে আনবে।

ভয়ঙ্কর জলজ ড্রোন ও নতুন পরমাণু অস্ত্র বানাচ্ছে রাশিয়া
ডেইলি মেইল ও এপি, ২০ মে ২০১৮

পানির নিচে চলাচলে সক্ষম এমন একটি ড্রোনের ব্যাপারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। এ ছাড়া রুশ সেনাবাহিনী শিগগিরই অ্যাভাঙ্গার্ড নামের নতুন একটি পরমাণু অস্ত্র পেতে যাচ্ছে বলে জানান দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। এসব অস্ত্র রাশিয়াকে যেমন অন্য দেশ থেকে সামরিক দিক দিয়ে এগিয়ে নেবে, ঠিক তেমনি অন্য দেশের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও অকার্যকর করে দেবে।

রুশ সেনাবাহিনীর প্রদর্শিত একটি ভিডিওচিত্রে বলা হয়, দুই মেগাটন পরমাণুর ওয়ারহেড যুক্ত এ ড্রোন পশ্চিমা দেশগুলোর বন্দরগুলোকে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হবে। শত্রুদের নৌঘাঁটি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা পোসেইডন টর্পেডো নামের এই ড্রোন ঘণ্টায় ৭০ নট গতিতে চলতে পারে। 

দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন গত মার্চে ‘স্টেট অব দ্য নেশন’ ভাষণে এই জলজ ড্রোনের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তখন তিনি এ পরমাণু অস্ত্রের কথা ঘোষণা করে বলেছিলেন, নতুন এ অস্ত্র শত্রুদের হস্তক্ষেপ থেকে নিরাপদ থাকবে। এ অস্ত্রের নেপথ্যে থাকা বিজ্ঞানীদের তিনি প্রশংসা করে ‘আমাদের সময়ের নায়ক’ বলে আখ্যা দেন।

মস্কোতে বার্ষিক স্টেট অব দ্য নেশন ভাষণে পুতিন বলেছিলেন, অস্ত্রটিতে একটি পরমাণুচালিত ক্রুজ মিসাইল, একটি পরমাণুচালিত জলজ ড্রোন এবং এর সাথে যুক্ত করা হয়েছে নতুন হাইপারসনিক মিসাইল। এ সময় এগুলোর ভিডিও একটি বড় স্ক্রিনে দেখানো হয়। ওই ভিডিওতে দেখানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লে¬ারিডা অঙ্গরাজ্যের ওপর বৃষ্টির মতো বোমা ফেলা হচ্ছে। ভাষণে পুতিন বলেন, এই নতুন অস্ত্র ন্যাটোর মার্কিন নেতৃত্বাধীন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে একেবারেই অর্থহীন করে তুলেছে। 

সেনাবাহিনীর জন্য নতুন পরমাণু অস্ত্র 

এ দিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট গত শুক্রবার সোচিতে দেয়া এক বক্তৃতায় বলেন, রুশ সেনাবাহিনী শিগগিরই নতুন পরমাণু পেতে যাচ্ছে। অ্যাভাঙ্গার্ড নামের নতুন এই অস্ত্র আগামী বছর থেকেই আসা শুরু করবে। আর নতুন সারমাট নামের আন্তঃমহাদেশীয় মিসাইল ২০২০ সাল থেকে কাজ শুরু করবে। গত মার্চেই পুতিন এই অস্ত্র দু’টির কথা ঘোষণা করেছিলেন। 

পুতিন বলেন, অ্যাভাঙ্গার্ড শব্দের চেয়ে ২০ গুণ বেশি গতিতে চলতে পারে। অতি দ্রুত চলার কারণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে এটিকে দুই হাজার সেলসিয়াস তাপমাত্রায় চলার উপযোগী করে তোলা হয়েছে। অস্ত্রটি এর গন্তব্য পথে কোর্স ও উচ্চতা দু’টিই পরিবর্তন করতে পারে, যা তাকে যেকোনো মিসাইল প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে অভেদ্য করে তুলতে পারে। 

অন্য দিকে সারমাট এর আগে সোভিয়েত আমলে তৈরি করা ভোয়াভোডার স্থানে প্রতিস্থাপন করা হবে। ১০টি পরমাণু ওয়ারহেড বহনকারী ভোয়াভোডা পশ্চিমা বিশ্বের কাছে শয়তান নামে পরিচিত। পুতিন মার্চে বলেছিলেন, সারমাটের ওজন ২০০ মেট্রিক টন ও এটি ‘শয়তান’-এর চেয়ে অনেক ওপর দিয়ে চলাচল করতে পারে এবং বেশি ওয়ারহেড নিয়ে চলতে পারে। 

এসব অস্ত্রের কারণে রাশিয়া অন্য দেশের চেয়ে কয়েক বছর এমনকি কয়েক দশক এগিয়ে যাবে। এসব অস্ত্র অন্য দেশের দামি প্রতিরক্ষা সিস্টেমকে অকার্যকর করে তুলবে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সমর্থন দেয়া ও যুক্তরাজ্যে সাবেক রুশ গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপল এবং তার মেয়েকে বিষ প্রয়োগের অভিযোগে পশ্চিমা ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সাথে রাশিয়ার উত্তেজনা চলার মধ্যেই পুতিন এসব অস্ত্রের ঘোষণা দিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement