ইসরায়েলি সৈন্যকে চড়-মারা ফিলিস্তিনি তরুণী ঘরে ফিরেছেন
- বিবিসি বাংলা
- ৩১ জুলাই ২০১৮, ১১:০৩
একজন ইসরায়েলি সৈন্যকে লাথি ও চড় মারার দায়ে আট মাস কারাভোগ করার পর মুক্তি পেয়েছেন ফিলিস্তিনি তরুণী আহেদ তামিমি।
ওই ঘটনার পরপরই গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি ও তার মা। কিন্তু এর ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে যায় সারা পৃথিবীতে, তার বিচার এবং শাস্তি হয়ে ওঠে সবার আলোচনার বিষয়।
আট মাসের কারাভোগের সময় এই ১৭ বছরের তরুণী পরিণত হন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের নতুন প্রতীকে।
বিবিসির নিদা ইব্রাহিম জানাচ্ছেন, এই মুহূর্তটির জন্যেই অপেক্ষায় ছিলেন আহেদ তামিমির পরিবার। তাকে স্বাগত জানানোর জন্য জেলের বাইরে জনতার ভিড় জমে যায়।
পরিচিতজনরা তাকে সাদরে বরণ করে নেন, জড়িয়ে ধরেন, শুভেচ্ছা জানান। অনেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ আন্দোলনের পক্ষে শ্লোগান দিচ্ছিলেন।
সমবেত জনতার উদ্দেশে আহেদ তামিমিকে ছোট একটি বক্তৃতাও দিতে হলো।
‘আজ যারা এখানে সমবেত হয়েছেন - তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ দিচ্ছি। আমি আশা করি সবাই সংবাদ সম্মেলনে আসবেন - যেখানে আমি আমার বার্তা তুলে ধরবো’ বললেন আহেদ তামিমি।
‘শুধু তাই নয় - আমি কারাগারের অন্য যারা নারী বন্দী ছিলেন তাদের বার্তাও তুলে ধরবো। তারা চেয়েছেন যেন আমি তাদের হয়ে কথা বলি। ’
গত বছর ডিসেম্বর মাসে সেই ইসরায়েলি সৈন্যকে চড় মারার ঘটনা আহেদ তামিমিকে সারা দুনিয়ায় বিখ্যাত করে তোলে। তার সাথে ছিলেন তার মা নারিম্যান তামিমি।
তাদের বাড়ির বাইরেই ঘটেছিল ওই ঘটনাটি। তার ঘন্টাখানেক আগে এই সৈন্যরা আহেদ আমিমির ১৫ বছর বয়স্ক এক সম্পর্কীয় ভাইয়ের মাথায় রাবার বুলেট দিয়ে গুলি করে।
ওই ঘটনার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের চোখে রীতিমত একজন বীরে পরিণত হন আহেদ তামিমি।
তবে ইসরায়েলিরা তার এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ আনে।
আহেদ তামিমির বাবা বাসেম তামিমি - যিনি নিজেও একজন ফিলিস্তিনি আন্দোলনকারী - তিনি একথা অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলছেন, প্রতিরোধ করাই তো স্বাভাবিক। প্রতিরোধ না করাটাই বরং অস্বাভাবিক।
‘আপনি যদি দখলদারির বিরুদ্ধে চুপ করে থাকেন, তাহলে আপনার মনে অপরাধবোধ তৈরি হতে বাধ্য। আমরা আমাদের মর্যাদা আর অধিকারের জন্য যুদ্ধ করছি।’
মি তামিমিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল - তিনি কি এখন চাইবেন যে তার মেয়ে যেন এখন ঘরের মধ্যে নিরাপদে থাকে।
জবাবে তিনি বললেন , এখানে ঘরও নিরাপদ নয়। ‘ঘর কি নিরাপদ? আমার তো মনে হয় না। ফিলিস্তিনে নিরাপদ জায়গা কোথায়? আমি জানি না।’
আহেদরা যেখানে থাকেন সেই গ্রামের নাম নাবি সালেহ - যেখানে দীর্ঘদিন ধরেই ইসরাযেলি-ফিলিস্তিনি সংঘাত চলছে। এখানে ফিলিস্তিনিদের জমির ওপর তৈরি করা হয়েছে একটি ইসরায়েলি বসতি, এবং এখানকার ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা প্রতি সপ্তাহেই বিক্ষোভের আয়োজন করেন।
বিবিসির সংবাদদাতা নিদা ইব্রাহিম বলছেন, আহেদ এবং তার মা জেলে থাকার সময় বাসেম তামিমি তার বাড়িটির কিছু অংশ পুননির্মাণ করেছেন তাদের মুক্তির প্রস্তুতি হিসেবে।
আহেদ ফিরে এসেছেন নতুন বাড়িতে এক নতুন বাস্তবতায় ।
এখন তিনি ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের এক নতুন মুখ, নতুন প্রতীক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা