২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

টার্গেটে ৯০ লাখ সৌদি নারী, লাইসেন্সের আবেদন ১ লাখ ২০ হাজার

টার্গেটে ৯০ লাখ সৌদি নারী, লাইসেন্সের আবেদন ১ লাখ ২০ হাজার - সংগৃহীত

গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাথমিকভাবে ৯০ লাখ সৌদি নারীকে তাদের গ্রাহক বানানোর পরিকল্পনা করেছে। রোববার থেকে প্রকাশ্যে গাড়ি চালাচ্ছেন সৌদি নারীরা। এটাকে সুযোগ হিসাবে গ্রহণ করেছে গাড়ি নির্মাতারা।

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সৌদি আরব বিশ্বের বৃহত্তম গাড়ির বাজারে পরিণত হবে। বেশ কিছুদিন ধরেই সৌদি নারীদের গাড়ির প্রতি আকৃষ্ট করতে নানা ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। এই ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে, নারীদের অনুভূতি ও আবেগকে।

কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, নারীদের গাড়ি কেনায় আকৃষ্ট করতে গিয়ে অতিমাত্রায় নারীবাদী রীতিনীতি প্রচার করা হচ্ছে, যা সৌদি আরবে রীতি-নীতির পরিপন্থী। বিশ্বে সৌদি আরবই একমাত্র দেশ, যেখানে কয়েক দশক ধরে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবত আছে। এখন এই নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

মোহাম্মদ বিন সালমান ক্রাউন প্রিন্স হয়ে তার দেশকে আধুনিক করতে নানামুখী সংস্কার-কার্যক্রম হাতে নেন। এই সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়টিও রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের ভাষ্য। সৌদিতে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়ার পদক্ষেপটি দেশটিতে সামাজিক গতিশীলতা আনার ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করতে পারে বলে অনেক পর্যবেক্ষক মন্তব্য করেছেন।

আরব লেখক ও বিশ্লেষক হানা আর-খামরি বলেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। নারীর মুক্ত গতিময়তার জন্য এটা অপরিহার্য।’সৌদিপন্থী চিন্তনপ্রতিষ্ঠান অ্যারাবিয়া ফাউন্ডেশনের নাজাহ আল-ওতাইবি বলেন, এটা একটা স্বস্তি। সৌদি নারীরা সুবিচার পাওয়ার বিষয়টি অনুভব করছেন।

এরই মধ্যে গাড়ি চালানোর লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছেন এক লাখ ২০ হাজার সৌদি নারী। রোববার এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এমনটা বললেন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেনারেল মানসুর আল-তুর্কি। এসময় দেশটির ট্রাফিক বিভাগের পরিচালক মেজর জেনারেল মুহাম্মদ আল-বাসসামি উপস্থিত ছিলেন। 

জেনারেল মানসুর আল-তুর্কি বলেন, নারীদের গাড়ি চালনা প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য ৫ শহরের মোট ৬টি ড্রাইভিং স্কুল খোলা হয়েছে। যদিও ড্রাইভিং স্কুল নেই এমন রাজ্যের সংখ্যা ৯টি। এসব স্কুলে মানসম্মত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যা নারী-পুরুষ সবার জন্য প্রযোজ্য হবে। সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে। রাস্তায় কেউ আইন ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে বাসসামি বলেন, গৃহকর্মীরাও গাড়ি চালাতে পারবেন, তবে ভিসার ধরন নিয়ে তাদের সমস্যা হবে। নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়ার পর এখন পর্যন্ত কোনও ট্রাফিক আইন ভঙ্গ বা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। নারীদের বিশেষ পার্কিং সুবিধার জন্য এখনও কোনও নীতি গ্রহণ করা হয়নি, বিশেষ পার্কিং সুবিধা বিশেষ ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য। আঙুলের ছাপ পরীক্ষার যন্ত্রের সাহায্যে নারীদের পরিচয় ও যাবতীয় তথ্য জানা যাবে।

সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটিকে অতি-রক্ষণশীল অবস্থা থেকে বের করে আনতে সম্প্রতি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। সৌদিতে এখন সিনেমা হল চালু হয়েছে। এছাড়া সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ ২০১৭ সালে একটি রাজকীয় ডিক্রি জারি করে দেশটির নারীদের রাস্তায় গাড়ি চালানোর অনুমতি দেন।


আরো সংবাদ



premium cement