২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন সৌদি নারীরা

সৌদি আরব
সৌদি নারী সাবিকা হাবিব তার গাড়ি চালাচ্ছেন। - ছবি : এএফপি

নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। রোববার থেকে এ আদেশ কার্যকর হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নারীরা গাড়ি চালাচ্ছেন। এটা রক্ষণশীল দেশটির জন্য একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রিয়াদ নগরীতে জন্মগ্রহণকারী এক নারীকে তার অনুভূতি সম্পর্কে জিজ্ঞাস করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার নাম সামার আলমোগরেন। আমি একটি টকশো’র উপস্থাপিকা ও লেখিকা।’

তিনি আরো বলেন, ‘বহুদিন পর আমি আমার মুখ থেকে নিকাব সরালাম। প্রথম যেদিন আমি টেলিভিশনে আমার চেহারা দেখানোর সিদ্ধান্ত নেই। আমার পরিবারের সবার কাছ থেকে সমর্থন পাইনি। আমার এই সিদ্ধান্তে আমার ভাইয়েরা খুবই অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কিন্তু আমার বাবা সবসময়ই আমার পাশে ছিলেন। তিনি আমার জীবনের প্রতিটি সিদ্ধান্তে আমাকে সমর্থন করেছেন। একমাত্র তিনিই আমার বিদেশে লেখাপড়ায় সমর্থন দিয়েছেন।’

সামার বলেন, ‘এর আগে বিভিন্ন দেশে আমি গাড়ি চালিয়েছি। আমার আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে। কিন্তু নিজের দেশে, নিজের শহরে গাড়ি চালানো অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ অন্যরকম।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি মূলত গাড়ি চালাতে অপছন্দ করি। কিন্তু এটা ভিন্ন ইস্যু। এখানে আমার অধিকারের প্রশ্ন। গাড়ি চালানো, বা না চালানোটা আমার একান্ত নিজের সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। আমার ইচ্ছে হয়ে চালাবো, ইচ্ছে না হলে চালাবো না।’

এই প্রত্যয়ী নারী বলেন, ‘উত্তেজনায় আমার সারা শরীর এখন কাঁপছে। খুব খুশির অন্যরকম একটা অনুভূতি। আমার আমার গাড়িতে বসে স্টিয়ারিং হুইল ধরবো। আমাকে এতোদিন দেশে গাড়ির পেছনের আসনেই বসতে হতো। এখন আমি চালকের আসনে বসতে পারবো। আমি আত্মনির্ভরশীল একজন নারী।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমি জানতাম একদিন না একদিন আমার দেশে নারীদের গাড়ি চালানো অনুমতি দেয়া হবে। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি আকস্মিকভাবে অনুমতি দেয়া হবে ভাবতেই পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমি বিদেশে গাড়ি চালিয়েছি। আমার আন্তর্জাতিক ড্রাইভিং লাইসেন্স রয়েছে। তাই ইতোমধ্যে সবাই (নারীরা) আমাকে তাদের কর্মস্থলে পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেছেন। অনেকে আমার গাড়িতে চড়ে কফিশপে যাবারও ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। আমি আমার মাকে আমার গাড়িতে চড়াবো, ভাবতেই খুব ভালো লাগছে। আমার মা এই বয়সে গাড়ি চালাবেন না। আমি ও আমার বোনেরা আমাদের গাড়িতে করে তাকে বেড়াতে নিয়ে যাবো।’

তিনি বলেন, ‘আমি আমার সন্তানকে নিয়ে গাড়ি চালাতে পারবো। সে বিশ্বাস করবে আমি তাকে গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমি সবসময় গাড়িতে তার সাথে থাকছি।’

সাদা শান্তির পোশাক। সামার তাই আজ রাতে এই পেশাকটি বেছে নিয়েছেন। তিনি নিজেকের পাখি নয়, প্রজাপতি ভাবছেন। মুক্ত স্বাধীন।

আরো পড়ুন :
সৌদি তরুণদের জন্য নতুন ধরনের বিনোদন
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭,রবিবার, ১৩:১৬
রক্ষণশীল দেশ বলে পরিচিত হলেও সৌদি আরবে ধীরে ধীরে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। সম্প্রতি প্রশাসন দেশটিতে তরুণদের বিনোদনের কিছু পথ খুলে দিয়েছে এবং বিখ্যাত আরব গায়করা সেখানে মিলনায়তনে শ্রোতাদের সামনে অনুষ্ঠান করতে পারছেন।

তরুণরা মরুভূমির বালিয়াড়িতে দ্রুতগতির গাড়ি চালাতে পারছেন। যদিও এসব বিনোদনমূলক কর্মকান্ডে এখনও নারীরা অংশ নিতে পারছেন না।

সম্প্রতি তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় বাজেটে কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছে সৌদি সরকার, এবং তারা চাইছে, সৌদি তরুণরা যেন বিনোদনের জন্য লন্ডন বা দুবাই না গিয়ে - দেশের ভেতরেই তাদের সময় ও অর্থ খরচ করে।

এ হচ্ছে এমন এক মুহূর্ত যার জন্য বহু লোক অপেক্ষায় ছিলেন।

সৌদি আরবের সবচেয়ে জনপ্রিয় গায়ক মোহাম্মদ আবদু, বহু বছর পর এই প্রথমবার নিজের দেশে একটি গানের অনুষ্ঠান করছেন।
বহু বছর পর তিনি নিজ দেশে একটি প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে গান গাইবার অনুমতি পেয়েছেন।

এরকম আরো বেশ কিছু গানের অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে সৌদি আরবে। কারণ গভীরভাবে রক্ষণশীল এই দেশটির মন্ত্রণালয় দেশের জনগণের জন্য কিছু বিনোদনের রাস্তা খুলে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এ পরিবর্তন হচ্ছে খুব ধীরে, এক পা দু'পা করে।

মোহাম্মদ আবদুর অনুষ্ঠানে দেখা গেল শ্রোতারা সবাই পুরুষ। কোনো মহিলা নেই।

অনেক সৌদি নাগরিকই এ ধরনের গানের অনুষ্ঠানে মেয়েদের দেখতে চান না। অনেক তরুণও মনে করেন, ‘এটা বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। দেশের জন্যও এটা ভালো হবে না’।

তবে সৌদি আরবে পরিবর্তনের জোয়ার তীব্রতর হচ্ছে।

সপ্তাহ শেষের ছুটির দিনগুলোতে একটা মরুভূমিতে বালিয়াড়ির ওপর দিয়ে চার চাকার ছোট ছোট গাড়ি চালানো এখন সেখানে খুবই জনপ্রিয় এবং উত্তেজনাকর এক বিনোদন।

মোটরবাইকের মতো ছোট গাড়িগুলো চালায় অনেকেই , তীব্র গতিতে, উঁচু-নিচু বালিয়াড়ির ওপর দিয়ে। তবে এখানেও কোনো মেয়েদের দেখা যায় না।

সৌদি আরবে জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের বয়সই ত্রিশের নিচে। লন্ডন বা দুবাইয়ের মতো উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত শহরগুলো তাদেরকে ভীষণ টানে।

তাদের শাসকদের একজন ৩১ বছর বয়স্ক এক যুবরাজ সেজন্যই এই তরুণদের উৎসাহিত করছেন যেন তারা তাদের সময় ও অর্থ দেশেই খরচ করে।

এদেরই একজন ওয়ালিদ বিন সায়েদান বলছিলেন তিনি চান ‘মেয়েদের গাড়ি চালানো শুরু করতে হবে। আর আরেকটা হলো আমাদের সিনেমা চালু করতে হবে’।

পরিবর্তনের এ হাওয়া শুরু হয়েছে সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় তেল খনি রুদ আলখালি থেকে। এই তেল খাত থেকেই সৌদি আরব সবচেয়ে বেশি অর্থ আয় করে - যা তাদের রাজস্ব আয়ের ৯০ শতাংশ।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
কালিয়াকৈরে ছিনতাইকারীর অস্ত্রের আঘাতে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবা-ছেলে আহত কাপাসিয়ায় চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত ২ রাশিয়ার ২৬টি ড্রোন ধ্বংসের দাবি ইউক্রেনের উত্তর কোরিয়ার সাথে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র মাগুরায় বজ্রপাতে ২ যুবকের মৃত্যু মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ‘অস্থায়ীভাবে’ ক্ষমতায় রয়েছে : জান্তা প্রধান গাজীপুরে কাভার্ডভ্যানের চাপায় মোটরসাইকেলচালক নিহত উত্তরপ্রদেশে কারাগারে মুসলিম রাজনীতিবিদের মৃত্যু : ছেলের অভিযোগ বিষপ্রয়োগের দক্ষিণ আফ্রিকায় বাস খাদে, নিহত ৪৫, বাঁচল একটি শিশু ইসরাইলের রাফা অভিযান পরিকল্পনা স্থগিত এগিয়ে নিয়ে গিয়েও জেতাতে পারলেন না ত্রিস্তান

সকল