১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কেমন গেল যুবরাজের এক বছর?

কেমন গেল যুবরাজের এক বছর? - সংগৃহীত

মতায় এক বছর পার করলেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এ সময়ে তার অর্জন ও ব্যর্থতা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে, সমালোচনাও আছে। বলা হয়, তিনি সামাজিক সংস্কারে বড় ভূমিকা রেখেছেন। আবার সমান তালে ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালিয়েছেন। এ সময়ে সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রবিষয়ক নীতিকে ঝাঁকুনি দিয়েছেন অপ্রত্যাশিতভাবে। 
মাত্র ৩৩ বছর বয়সী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে তার চার পাশে যারা আছেন তারা দেখেন উচ্চাভিলাষী হিসেবে।

তিনি মতাকে কুগিত করতে সময়পেণ করেননি। অব্যাহতভাবে তিনি নিজেকে সংস্কারবাদী হিসেবে এবং উদার ইসলামের একজন প্রতীক হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন। বিশ্বাস করা হয় কাতারের বিরুদ্ধে যে অবরোধ দেয়া হয়েছে তার নেপথ্যে ছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তার নেতৃত্বে সৌদি আরব সঙ্গে পেয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসরকে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তিনি কাতারের বিরুদ্ধে ওই অবরোধ আরোপ করিয়েছেন।

প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ২০১৫ সালে বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী প্রতিরামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। এর মাত্র দুই মাস পরই ইয়েমেনে সামরিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এখন পর্যন্ত ওই যুদ্ধে ইয়েমেন বিধ্বস্ত। এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে দেশটি। নিহত হয়েছেন কমপে ১০ হাজার মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে জাতিসঙ্ঘ বলেছে, বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক বিপর্যয়ের দেশ ইয়েমেন। 
দেশের ভেতরে গত সেপ্টেম্বরে কয়েক ডজন সমালোচক ও ভিন্ন মতাবলম্বীকে জেলে পুরেন মোহাম্মদ বিন সালমান। এর মধ্যে রয়েছেন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনকারী অধিকারকর্মী, লেখক, সাংবাদিক ও দু’জন সুপরিচিত মুসলিম ধর্মীয় নেতা। তার এ কর্মকাণ্ডের কড়া সমালোচনা করে মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। যারা মানবাধিকার ও সংস্কারের পে কথা বলেন এমন নাগরিকদের দিকে সরকারের এমন উদ্যোগকে পুরোপুরি অসহনীয় বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি। এক মাস পর রাজধানী রিয়াদে এক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ বিন সালমান। সেখানে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, শিগগিরই তিনি উগ্রবাদকে নির্মূল করবেন। আরো বলেন, সৌদি আরব একটি উদার ইসলামের দেশ। এ দেশটি সব ধর্ম ও বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত। 

গত নভেম্বরে তিনি কয়েক শ’ সৌদি প্রিন্স, উচ্চপর্যায়ের ব্যবসায়ী ও সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীকে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, এসব ব্যক্তি তার রাজনৈতিক প্রতিপ ছিলেন। গ্রেফতার করা এসব ব্যক্তিকে আটক রাখা হয় রিয়াদের রিটজ কার্লটন হোটেলে। পরে তাদেরকে মুক্তি দেয়া হয়। তবে রিপোর্টে বলা হয়েছে, মুক্তি পাওয়ার জন্য কোটি কোটি ডলার দিতে হয়েছে জামিন হিসেবে। যুবরাজ বর্তমানে সৌদি আরবের প্রধান তিনটি নিরাপত্তা রাকারী বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করছেন। ধর্মীয় নেতাদের প্রভাবকে খর্ব করার কথা বললেও তিনি তাদের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করছেন, যাতে তারা খুশি থাকেন।

তার দুর্নীতিবিরোধী অভিযানকে অনুমোদন দিয়েছিল সৌদি আরবের প্রধান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অব সিনিয়র স্কলারস। এ বছরের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো নারীদের স্পোর্টস স্টেডিয়ামে যাওয়ার অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে নারীদের কখনো স্টেডিয়ামে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। নারীদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ করা সংক্রান্ত একটি আইনকে উল্টে দেন তিনি। এ বিষয়ে একটি রাজকীয় ডিক্রিতে স্বার করেন তিনি। এর অধীনে তিনি নারীদের জনসমে বা প্রকাশ্যে আসার জন্য বড় সুযোগ করে দেন। 

দুই বছর আগে মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি আরবকে তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে অর্থনীতি গড়ে তোলার কথা বলেছিলেন। ভিশন-২০৩০ কে সামনে রেখে তিনি এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এতে বলা হয়েছিল সামাজিক েেত্র সংস্কার করা হবে এবং নারীদেরকে কর্মশক্তিতে অঙ্গীভূত করা হবে। শিা, পর্যটন ও মানসিক প্রশান্তির মতো সরকারি খাতগুলোকে উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। সৌদি আরবে বিদেশী বিনিয়োগকে নিশ্চিত করতে মোহাম্মদ বিন সালমান সরকারি সফরে বিদেশ গেছেন। তা শুরু করেছেন মিসর দিয়ে। সেখান থেকে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র। সাাৎ করেছেন সরকারি বড় বড় কর্মকর্তা, সেলিব্রেটি, প্রভাবশালী নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। চুক্তি করেছেন। আধুনিক মানের সৌদি আরবে তাদের কাছ থেকে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। 
সূত্র : আলজাজিরা

আরো পড়ুন :

সৌদি আরব থেকে সেনা প্রত্যাহার করছে মালয়েশিয়া
আনাদোলু 

সৌদি আরবে মোতায়েন মালয়েশীয় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রত্যাহারের কথা বিবেচনা করছে কুয়ালালামপুর। বুধবার মালয়েশিয়ার প্রতিরামন্ত্রী মোহাম্মদ সাবু এ ঘোষণা দিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, সৌদিতে মোতায়েন তার দেশের সেনারা ইয়েমেন যুদ্ধে বা দায়েশের (আইএস) বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নেয়নি।

প্রতিরামন্ত্রী মোহাম্মদ সাবু বলেন, মালয়েশিয়া সবসময় নিরপে নীতি গ্রহণ করেছে। এখানে বিশ্বের প্রধান কোনো শক্তির রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতি আনুকূল্য নেই। কুয়ালালামপুর জোট নিরপে আন্দোলনের (ন্যাম) সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে। এ জোটের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেছে মালয়েশিয়া। মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে সৌদি আরবের দীর্ঘ প্রভাব রয়েছে। দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে ২০১৩ সালের নির্বাচনে জিতিয়ে আনতে ৬৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার দিয়েছিল সৌদি আরব। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে মালয়েশিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আপানদি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, এই অর্থ ছিল মূলত সৌদি অনুদান। মূলত মালয়েশিয়ায় মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রভাব ঠেকাতেই নাজিব রাজাককে এই অর্থ দিয়েছিল সৌদি আরব।


আরো সংবাদ



premium cement
বাংলাদেশে গ্রিসের দূতাবাস হচ্ছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তানের সাথে টেস্ট খেলতে চান রোহিত অধ্যাপক মাযহারুল ইসলামের বাসভবনে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ইউক্রেনের ২০টি ড্রোন, ২টি ক্ষেপণাস্ত্র নিষ্কিৃয় করল রাশিয়া তালেবানকে আফগান মাটি অন্যদের ব্যবহারের সুযোগ না দেয়ার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের। গত দুই দিনের রেকর্ডের পর চুয়াডাঙ্গায় আজও বইছে তীব্র তাপদাহ বগুড়ায় শিশুকে গলা কেটে হত্যা, নানা আটক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ তালতলীতে ইউপি চেয়ারম্যানের নগ্ন ও আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল ভারতের নির্দেশের পর পোস্ট ব্লক করল এক্স ‘দেশের কল্যাণে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারার বিকল্প নেই’

সকল