১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মার্কিন শত্রুতার কারণ ব্যাখ্যা দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা

মার্কিন শত্রুতার কারণ ব্যাখ্যা দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা - সংগৃহীত

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনী বলেছেন, ইউরোপের সঙ্গে আমাদের সাংঘর্ষিক সম্পর্ক নেই কিন্তু দেখা গেছে, ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি অত্যন্ত স্পর্শকাতর মুহূর্তে আমেরিকার পক্ষ নিয়ে কাজ করে। সবারই এটা জেনে রাখা উচিত নিজ অধিকার রক্ষার প্রশ্নে  ইরান কোনো ছাড় দেবে না।

তিনি আরো বলেন, পরমাণু কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র এসবই অজুহাত মাত্র। বরং তাদের প্রধান শত্রুতা ইরানের বিদ্যমান শাসন ব্যবস্থার সাথে। এখন পর্যন্ত ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার শত্রুতাতো কমেনি বরং আরো জটিল ও গভীর হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের উপস্থিতি এবং এ অঞ্চলের নির্যাতিত জাতিগুলোর প্রতি অব্যাহত সমর্থন দেয়া আমাদের প্রধান নীতি। ইরানে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন এ নীতি থেকে কেউ সরে দাঁড়াবে না।

খামেনি বলেন, পারমাণবিক ইস্যুতে ইরানের সঙ্গে ছয় বিশ্বশক্তির সমঝোতা তথা তেহরান চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার ঘোষণা ঐতিহাসিক ভুল। ইরানের ওপর মার্কিন নতুন নিষেধাজ্ঞা টম অ্যান্ড জেরি কার্টুনের মতো, নিপীড়ক বিড়াল টমের মতোই যুক্তরাষ্ট্রের পতন হবে। ক্তরাষ্ট্র অবশ্যই ব্যর্থ হবে। জনপ্রিয় কার্টুন টম অ্যান্ড জেরির বিড়ালের যেভাবে পতন ঘটে, মার্কিনিদেরও ঠিক সেভাবেই পতন ঘটবে।

খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের তেলের বাজার ধ্বংস করতে চায় তাহলে চলবে না। আমরা যতটুকু চাই ততটুকু যেন তেল বিক্রি করতে পারি তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। ইউরোপীয়ান দেশগুলো যদি আমাদের এই দাবিগুলো মেনে না নেয়, তাহলে আমাদের পারমাণবিক কার্যক্রমে কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ করার অধিকার তাদের থাকবে না।

ইরানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ১২ শর্ত নিয়ে তোলপাড়

ইরানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া ১২টি শর্তকে অর্থহীন বলে আখ্যায়িত করেছে রাশিয়া। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা- আইএইএ’তে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত মিখাইল উলিয়ানোভ বলেছেন, এসব শর্ত নতুন যেকোনো চুক্তির সম্ভাবনা নষ্ট করে ফেলেছে।

সোমবার ইরানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তুলে দেশটির বিরুদ্ধে ‘ইতিহাসের কঠিনতম নিষেধাজ্ঞা’ আরোপের হুমকি দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। এরপর তিরি ইরানের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতে চাইলে ইরানকে ‌‌১২টি শর্ত মেনে নিতে হবে।

এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত মিখাইল উলিয়ানোভ মঙ্গলবার ভিয়েনায় বলেন, ‘এগুলো সব অর্থহীন ও বাজে বক্তব্য। এগুলোকে ভিত্তি করে কোনো সমঝোতা অর্জন সম্ভব নয়।’

ইরানকে ইউরেনিয়াম ও প্লুটোনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়ার যে শর্ত পম্পেও দিয়েছেন তার তীব্র সমালোচনা করে উলিয়ানোভ বলেন, ‘ইরানের যে বেসামরিক পরমাণু কর্মসূচি চালানোর সার্বভৌম অধিকার রয়েছে সেকথা উপলব্ধি করার যোগ্যতা হারিয়েছে ওয়াশিংটন।’

ইরানের পরমাণু সমঝোতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ওয়াশিংটনের এ পদক্ষেপ থেকে বোঝা যায় ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের পরমাণু সমঝোতা উপলব্ধি করতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। ইরানের পরমাণু সমঝোতা চুক্তিতে রাশিয়ার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে ইরানের সাথে নতুন করে কোনো পারমাণবিক চুক্তি করার আগে অবশ্যই দেশটিকে ১২টি শর্ত পালন করতে হবে। ওয়াশিংটনের প্লেন বি এর আওতায় শর্ত জুড়ে দেয়া ১২টি শর্তের কোনোটিই মানা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।

যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া শর্তগুলো হচ্ছে- ইরানকে ইউরেনিয়াম ও প্লুটোনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত ভারী পানি মজুদ করা বন্ধ করতে হবে। ইন্টারন্যাশনাল এটমিক এনার্জি কমিশনকে (আইএইএ) ইরানে প্রবেশ এবং ইরানের সকল পরমাণু কেন্দ্রে অবাদ প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে। আইএইএ এর পক্ষ থেকে ইরানের পরমাণু কেন্দ্র পরীক্ষার পর এটি নিশ্চিত করতে হবে যে, ইরানের পরমাণু কেন্দ্র কোনোভাবেই সামরিক কাজে ব্যবহার হচ্ছে না।

ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। এছাড়া পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম মিসাইল পরীক্ষা বা উন্নয়ন বন্ধ করতে হবে।

ইরানে বন্দি যুক্তরাষ্ট্রের সকল নাগরিককে মুক্তি দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নাগরিকের পরিবারের কোনো সদস্য বা আত্মীয় বন্দি থাকলে তাদেরও মুক্তি দিতে হবে। আমেরিকার সাথে কোনো কার্যক্রমে জড়িত এমন যে কাউকে মুক্তি দিতে হবে।

তেহরানকে বন্ধ করতে হবে- হিজবুল্লাহ ও হামাসকে সব ধরনের সমর্থন দেয়া, ইরাক সরকারকে সার্বভৌম মনে করা এবং সমর্থন দেয়া, সেখানকার শিয়া যোদ্ধাদের নিরস্ত্রীকরণ করা এবং সমর্থন দেয়া। ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের সামরিক সহায়তা বন্ধ করতে হবে এবং সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক সমঝোতা করতে হবে।

সিরিয়ায় নিয়োজিত ইরানি বাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে। লেবানন ও ইয়েমেনের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন বন্ধ করতে হবে। হিজবুল্লাহর সঙ্গে সব ধরণের সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে।

আফগানিস্তানের তালেবানদের সমর্থন বন্ধ করতে হবে এবং আল কায়েদার সিনিয়র নেতাদের সহায়তা দেয়া যাবে না। আইআরজিসি’র পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী ও যোদ্ধাদের দেয়া সমর্থন বন্ধ করতে হবে।পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশের প্রতি ইরানের বৈরিভাব বন্ধ করতে হবে। সৌদি আর, আরব আমিরাত এবং ইসরাইলের প্রতি বিদ্বেষ বন্ধ করতে হবে এবং ইসরাইলকে ধ্বংস করার হুমকি থেকে সরে আসতে হবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সাইবার হামলা বন্ধ করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল