২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুঃস্থ ও এতিম শিশুদের মাঝে ডিএমপি কর্মকর্তার নববর্ষের উপহার

-

ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ঢাকা ও মানিকগঞ্জ জেলায় এতিম ও দুঃস্থ পরিবারকে কম্বল উপহার দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের জয়েন্ট কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলম বিপিএম(বার),পিপিএম(বার)।

ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার বালিয়া, গাংগুটিয়া ইউনিয়ন ও মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার দশটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার এতিম শিশু এবং স্থানীয় দুঃস্থ লোকদের মাঝে শেখ নাজমুল আলমের পক্ষে কম্বল বিতরণ করেন সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আমিনুল ইসলাম।

এ উপলক্ষে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার বাছট বৈলতলা মোকদমপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার মাঠে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাছট বৈলতলা মোকদমপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি আব্দুর রশিদ বিএসসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। এছাড়া সাটুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন পিন্টু, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকার মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি খন্দকার আশরাফ উন নবী, সাটুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বেলাল হোসেন, দ্য এশিয়ান এজ পত্রিকার সাটুরিয়া উপজেলা প্রতিনিধি ইঞ্জিনিয়ার লুতফর রহমান, দৈনিক প্রভাতী খবর পত্রিকার সাটুরিয়া স্টাফ রিপোর্টার আবু বকর সিদ্দিক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ওসি আমিনুল ইসলাম সামান্য বিষয়ে মামলা না করার পরামর্শ দিয়ে সেই সব বিষয়ে নিজেদের মধ্যে সমাধানে প্রয়োজনে তার সহায়তা নেয়ার অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার দরজা সবার জন্য সব সময়ই জন্য খোলা। আমার কাছে আসতে কোন দালাল লাগে না।’ তিনি ইসলামের নামে উগ্রবাদ প্রতিরোধে আলেম সমাজদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সাটুরিয়া শাহীপাড়া ফাতেমা (রা:) মহিলা মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা মোহাম্মাদ আব্দুল মান্নান তার মাদ্রাসার এতিম শিশুদের জন্য কম্বল পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, ‘দরিদ্র পরিবারের এই এতিম শিশুগুলো রাতে কনকনে শীতের কষ্টে ঘুমাতেই পারতো না। তাই স্থানীয় অনেক জনপ্রতিনিধির কাছে কম্বলের জন্য আকুতি জানিয়ে ছিলাম; কিন্তু ব্যর্থ হয়ে শেষ ভরসা হিসেবে আল্লাহর কাছেই ফরিয়াদ করেছিলাম। আজ বুঝতে পারলাম আল্লাহ আমাদের প্রার্থনা কবুল করেছেন। তা না হলে চিনেন না,জানেন না এমন একজন পুলিশ অফিসার কেন আমাদের শিশুদের জন্য এতো কম্বল পাঠাবেন!

ধানকোড়া কেন্দ্রীয় মহিলা মাদ্রাসার মোহতামিম মাওলানা মোহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মাদ্রাসার আর্থিক সংকটের কারণে ইচ্ছে থাকলেও ছাত্রদের কম্বল কিনে দিতে পারি নাই। আজ উপহার হিসেবে পাওয়া কম্বল গুলো পেয়ে এতিম এই শিশুদের খুবই উপকার হলো।’

ধামরাইয়ের কাওয়ালীপাড়া হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) মহিলা মাদ্রাসা ও এতিমখানার মোহতামিম মাওলানা মুফতি আব্দুল সাঈদ বাগজানী বলেন, ‘পুলিশ অফিসারদের আগে ভয়ের চোখে দেখতাম; কিন্তু এতিম শিশুদের জন্য পুলিশের দেয়া উপহার পেয়ে সারাজীবনের ধারণাই পরিবর্তন হয়ে গেলো।’

বাছট গ্রামের আব্দুর রহমানের বিধবা স্ত্রী কদরজান বিবি বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে নিজেই দিনমজুরি করে খুব কষ্টে সংসার চালাচ্ছি। খুব ভোরে উঠে মাটি কাটার কাজ করতে গিয়ে খুব শীত লাগতো। কম্বলটিকেই এখন চাদর হিসেবে গায়ে দিয়ে কাজ করতে পারবো, রাতেও ঘুমাতে পারবো একটু আরামে।’
মোকদমপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুল্লাহ মিজান সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিদের দুঃস্থদের, বিশেষ করে এতিম শিশুদের পাশে দাড়ানোর আহবান জানান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাদ্রাসার যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল