১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সরকারি চাকরি ও সোনার হরিণ

-

পে-স্কেলের সুবাদে সরকারি চাকরিজীবীদের সুযোগ সুবিধা অনেক বেড়েছে। মৃত্যু কিংবা চাকরি থেকে অবসর নিলে সরকারি চাকরিজীবী কিংবা তার পরিবার অনেক সুযোগ সুবিধা পান। তাই সবাই এখন যেকোনো মূল্যে সরকারি চাকরি পেতে চায়। কিন্তু এই চাকরি যেন সোনার হরিণ। পেতে হলে এখন মেধা থেকে ক্ষমতার জোর বেশি লাগে। হয় প্রশাসনের কারো সাথে সম্পর্ক থাকতে হবে, নয়তো বড় অঙ্কের টাকা প্রভাবশালী কাউকে দিয়ে সরকারি চাকরি পেতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠানে দেখা যায়, আগে থেকেই খালি পোস্টের বিপরীতে লোক সিলেক্ট করে রাখা হয়। কিন্তু লোক দেখানোর জন্য ‘নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি’ দেয়া হয়। এরপর ব্যাংক ড্রাফট হিসেবে অনেক আবেদনকারীর কাছ থেকে বহু টাকা নেয়া হয়। এরপর লিখিত কিংবা মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র দেয়া হয়। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান প্রবেশপত্র পর্যন্ত দেয় না। তাদের পছন্দের প্রতিযোগীকে চাকরি দেয়া হয়। এদিকে আবেদনকারীর টাকা পানিতে যায়। অনেকে দুঃখ করে বলেন, যদি প্রবেশপত্র পেতাম, লিখিত কিংবা মৌখিক পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ পেতাম, তা হলে সান্ত্বনা পেতে পারতাম। অনেক সময় দেখা যায়, টাকার বিনিময়ে অনেক অযোগ্য লোককে চাকরি দেয়া হয়। কিন্তু যোগ্য ও মেধাবীরা চাকরি পান না। তাই অনেকেই আফসোস করেন সরকারি চাকরির বয়স চলে যাওয়ায়। তাদের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায় ‘টাকার কাছে’। অনেকে সরকারি চাকরি টাকার বিনিময়ে পেয়ে ঘুষের সেই টাকা রুজি করার জন্য বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। ঘুষ না পেলে ফাইল ছাড়েন না। কারণ তিনি অনেক টাকা দিয়ে সরকারি চাকরিতে ঢুকেছেন। সেই টাকা তোলার জেদ থাকে। তাই টাকা ছাড়া অনেক সরকারি দফতরে কোনো কাজ হয় না। এর থেকে কি জাতি মুক্তি পাবে না? যোগ্য ও মেধাবীরা কি সরকারি চাকরি পাবেন না? নাকি টাকা কিংবা ক্ষমতার কাছে মেধা ও যোগ্যতা হারিয়ে যাবে? এর অবসান জরুরি নয়কি? সরকারের এদিকে দৃষ্টি দেয়া জরুরি।
আলী ফজল মোহাম্মদ কাওছার, চাকরিজীবী, ঢাকা


আরো সংবাদ



premium cement