২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

শিশু জাইমার চিকিৎসার জন্য ৩ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ

- ফাইল ছবি

এমভি ইয়াদ লঞ্চের ধাক্কায় পায়ের পাতা কাটা পড়া ৮ বছর বয়সী শিশু জাইমা নেওয়াজের চিকিৎসাসহ তার পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা দেয়ার কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তার চিকিৎসার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে তিন লাখ টাকা দিতে লঞ্চ মালিক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং শিশুটির বাবার করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুরের রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার আনিসুল হাসান ও শাহীনুজ্জামান শাহীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় বলেন, আদালত রুল জারি করে চিকিৎসার জন্য শিশু জাইমার পরিবারকে ১৫ দিনের মধ্যে তিন লাখ টাকা দিতে সাত থেকে ১২ নম্বর বিবাদীদের নির্দেশ দিয়েছেন।

রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন- নৌপরিবহন সচিব, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান, নৌ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, লঞ্চের মালিক মামুনুর রশিদ, প্রথম শ্রেণির মাস্টার আব্দুর রউফ, দ্বিতীয় শ্রেণীর মাস্টার নাসির উদ্দিন গাজী, ২য় শ্রেণীর চালক মো: স্বপন, তৃতীয় শ্রেণীর চালক মো: ফারুক হোসেন ও ম্যানেজার মনিরুজ্জামান।

‘পালিয়ে বেড়াচ্ছে লঞ্চ দুর্ঘটনায় পা হারানো শিশু জাইমার পরিবার’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদনটি যুক্ত করে এ রিট করা হয়। ২০১৮ সালের ২২ মার্চ প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়,‘এমভি ইয়াদ লঞ্চের মালিক মামুন অর রশিদ ও তার লোকজনের জীবননাশের হুমকিতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন লঞ্চ দুর্ঘটনায় আহত শিশু জাইমা নেওয়াজ জিসার পরিবার। মামলা তুলে নেয়ার জন্য লঞ্চ মালিক শিশুর বাবা জামাল গাজীকে জীবননাশ, বাচ্চা অপহরণ ও এসিড ছুড়ে সপরিবারে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। এ ঘটনায় শিশু জাইমার মা নাজমুন নাহার বাদী হয়ে সোমবার আমতলী উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: সরোয়ার হোসেনের আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।’

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৯ ডিসেম্বর ছয় বছরের শিশু কন্যা জাইমা নেওয়াজ জিসা, বাবা জামাল গাজী, মা নাজমুন নাহার ও ছেলে খাঁজা গরীবে নেওয়াজকে নিয়ে ঢাকা থেকে আমতলীতে আসার উদ্দেশ্যে ফতুল্লা লঞ্চঘাটে আসেন। এমভি ইয়াদ লঞ্চটি ফতুল্লা ঘাটে এসে স্বজোরে ধাক্কা দেয়। এতে শিশু জাইমা ছিটকে গিয়ে লঞ্চ ও লঞ্চঘাটের মাঝখানে ডান পা আটকে যায়। এতে শিশু জাইমার ওই পায়ের পাতার সম্মুখভাগ বিছিন্ন হয়ে যায়। তাৎক্ষণিক শিশু জাইমাকে উদ্ধার করে ঢাকা জেনারেল এন্ড অর্থোপেটিক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই হাসপাতালে ২১ দিন চিকিৎসা শেষে জাইমাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়।

এ ঘটনায় শিশু জাইমার বাবা জামাল গাজী বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারী লঞ্চ মালিক মামুন অর রশিদসহ ৬ জনকে আসামী করে দক্ষিণ কোরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।

এদিকে মামলা দায়ের পর থেকে শিশুর বাবা জামাল গাজীকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য লঞ্চ মালিক ও তার লোকজন জীবননাশের হুমকি, বাচ্চা অপহরণ ও এসিড ছুড়ে স্বপরিবার মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন শিশুর পরিবার। এ ঘটনায় সোমবার আমতলী উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: সরোয়ার হোসেনের আদালতে শিশুর মা নাজমুন নাহার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।


আরো সংবাদ



premium cement