২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্ত্রী-সন্তানকে স্বীকৃতি দিয়ে ১৯ বছর পর মুক্তি মিলল ইসলামের

-

স্ত্রী-সন্তানকে স্বীকৃতি দেয়ায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশে ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ বছর ধরে কারাগারে থাকা ঝিনাইদহের ইসলাম মুক্তি পেয়েছেন। ২০ বছর পর মালা বেগমকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি ও ১৮ বছর আগে মালার গর্ভে জন্ম নেওয়া মিলনকে ছেলে হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় আদালত তাকে মুক্তির আদেশ দেন।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৭ বিচারপতি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।

আদালতে ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার আশরাফ রহমান।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, মিলনের মা মালা বেগমের সঙ্গে একই গ্রামের ইসলামের সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয়। দুজন স্থানীয় মৌলভীর মাধ্যমে ২০০০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তারা রেজিস্ট্রি ছাড়া বিয়ে করেন। লোকচক্ষুর অন্তরালে স্বামী-স্ত্রী হিসাবে বসবাস করতে থাকেন তারা। মালা বেগম গর্ভবতী হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় মালা বেগমের পরিবার ও স্থানীয়রা বিয়ের জন্য বললেও ইসলাম মালার সাথে বিয়ে ও মালার গর্ভের সন্তানকে অস্বীকার করেন। ২০০১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মালা বেগমের গর্ভে জন্ম নেয় মিলন। মিলনের পিতৃত্বও অস্বীকার করেন ইসলাম।

উপায় না পেয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন মালার পিতা। মামলার পরপরই গ্রেফতার হন ইসলাম। নিম্ন আদালতে ইসলামের যাবজ্জীবন সাজা হয়। হাইকোর্ট এবং আপিল বিভাগে সাজা বহাল থাকে। এরপর যাবজ্জীবন সাজার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেন ইসলাম।

আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, এই মামলায় ইসলামের আইনজীবী হিসেবে প্রথম থেকে চিন্তা করেছি, ১৯ বছর ধরে কারাগারে থাকা ইসলামের জেল থেকে মুক্তির পথ সন্তান ও স্ত্রীকে স্বীকৃতি দেয়া। রিভিউ আবেদনে আদালতের সামনে আমি মালা বেগমের স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি ও মিলনের ছেলে হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরি। আমি আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হই। আদালতের নির্দেশে বুধবার যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাবন্দি ইসলামের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে পুনরায় মালার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ও কাবিন রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ ইসলামকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন।

রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আদেশের সময় আপিল বিভাগের ডায়াসের সামনে ইসলাম ও মালা বেগমের বাবা, সন্তান মিলন উপস্থিত ছিলেন। আদালত কক্ষে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আদালত কক্ষে উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবীরা এ আদেশকে স্বাগত জানান।


আরো সংবাদ



premium cement