মইনুল হোসেনকে প্রথম শ্রেণীর বন্দির সুবিধা দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৯ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:২৬
মানহানির মামলায় কারাগারে থাকা সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে কারাগারে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দিতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের স্ত্রী সাজু হোসেনের করা একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাই কোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ড. কামাল হোসেন ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান।
সোমবার অদেশের পর খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে (ফার্স্ট ক্লাস ডিভিশন) প্রথম শ্রেণির বন্দির সুবিধা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাই কোর্ট। আদেশটি বিশেষ বার্তাবাহকের মাধ্যমে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।’
এর আগে রোববার আবেদনের ওপর শুনানিতে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে যে মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে সেটা জামিনযোগ্য। তারপরও তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সাবেক সংসদ সদস্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি।’
তিনি বলেন, ‘তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের মালিক তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ছেলে। এই মানিক মিয়া বঙ্গবন্ধুর সাথে কারাগারে ছিলেন। তার নামে মানিক মিয়া এভিনিউ করা হয়েছে। অথচ মইনুল হোসেনকে কারাগারে ডিভিশন না দিয়ে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে রাখা হয়েছে।’
কামাল হোসেন বলেন, ‘মইনুল হোসেনের জন্য কেন ডিভিশন চেয়ে আবদেন করতে হবে? রাষ্ট্র নিজে থেকেই তো ডিভিশন দেবে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য। বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশে আজ মানিক মিয়ার ছেলেকে ডিভিশনের জন্য আবেদন করতে হচ্ছে।’
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য জানতে চেয়ে বিচারক উপস্থিত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে জিজ্ঞেস করেন, ‘এটা কী হচ্ছে? সামান্য একটি বিষয় নিয়ে কি আমাদের হস্তক্ষেপ করতে হবে? জেলার (তত্ত্বাবধায়ক) কোন এখতিয়ার বলে তাকে সাধারণ হাজতিদের সঙ্গে রাখবে?’
অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে উপস্থিত হয়ে শুনানিতে বলেন, আইন অনুযায়ী বিচারিক হাকিম আদালত এ বিষয়ে আদেশ দেবেন। সরাসরি হাই কোর্টে আসার সুযোগ নেই। এছাড়া হাকিম আদালতের কোনো আদেশের কপি এখানে নেই। তাই এটা অসম্পূর্ণ আবেদন। রোববার শুনানি শেষে হাই কোর্ট ডিভিশনের আবেদনটি আদেশের জন্য রাখে। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার মইনুল হোসেনকে প্রথম শ্রেণির বন্দির সুবিধা দেয়ার নির্দেশ দেন আদালত।
গত ১৬ অক্টোবর রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে জামায়াতের এজেন্ট বললে তিনি সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে উদ্দেশ করে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন। এ নিয়ে ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা শুরু হয়। মাসুদা ভাট্টিসহ নারী সাংবাদিকরা মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। ঘটনার চার দিনেও ব্যারিস্টার মইনুল প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মানহানির মামলা করেন মাসুদা ভাট্টি।
মইনুল হোসেনের মন্তব্যকে নারীসমাজের জন্য অবমাননাকর দাবি করে একই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে জামালপুরের আদালতেও মামলা করেন একজন নারী। যদিও ওই দুটি মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। তবে এছাড়াও একই ঘটনায় কুড়িগ্রাম ও রংপুরের আদালতেও পৃথক মামলা হয়। এর মধ্যে রংপুরের মামলায় ২২ অক্টোবর তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরদিন ২৩ অক্টোবর মইনুল হোসেনকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কায়সারুল ইসলাম। এরপর সেদিন বিকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে। সেখানে মইনুলকে সাধারণ হাজতির মতো রাখা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা