২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খালেদা জিয়ার আপিল খারিজ হলে সোমবার চ্যারিটেবল মামলায় রায়

বিএনপি
আদালতে খালেদা জিয়া - ফাইল ছবি

খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলবে বলে বিচারিক আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদন খারিজ হলে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ ৫ এ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আগামীকাল সোমবার রায় ঘোষণা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ।

আজ রোববার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

মাহবুবে আলম বলেন, ‘ইতিমধ্যে খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়েছে এবং আজকে শুনানির পরে আগামীকাল আদেশের জন্য রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচারিক আদালত মামলার চলার যে আদেশ দিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে তারা হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেছিলেন। কিন্তু হাইকোর্টেও রায় উনার বিপক্ষে গেছে। তার বিরুদ্ধে আজকে আপিল বিভাগে এ মামলার শুনানি হলো। যদি এ মামলায় আপিল কোনরকম লিভ (নিয়মিত আপিল করার অনুমতি) দেয়া হয় তাহলে বিচারিক আদালত কর্তৃক মামলার রায় প্রদান অনিশ্চিত হয়ে যাবে। আর যদি খালেদা জিয়ার আবেদনটি আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে যায় তবে আগামীকাল রায় দেয়া সম্ভব হবে।’

মাহবুবে আলম বলেন, ‘চ্যারিটেবল মামলায় তিনি বারবার সময় নিয়েছেন। এক পর্যায়ে তিনি আদালতে আসবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এ অবস্থায় আদালত তো বসে থাকতে পারে না। আদালতকে তো বিচার কার্যক্রমটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই হিসেবে আমি আশাবাদী বিচারিক আদালত মামলাটির বিচার শেষ করতে পারবে।’

আসামিকে হাসপাতালে রেখে রায় দেয়া হলে সেটি হবে নজিরবিহীন। খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুবে আলম বলেন, আসামির সাক্ষি সাবৎ সবই হয়েছে আসামির সামনে। তিনি নিজে বক্তব্য দিয়েছেন। এখানে আসামি যখন বলেন তিনি আর আদালতে যাবেন না তখন আর আদালতের কিছু করার থাকে না। তাছাড়াও তার তো ১২৬ জন আইনজীবী আছেন।

খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে চ্যারিটেবল মামলার রায় ঘোষণা করা হবে কিনা জানতে চাইলে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, উনি যদি না যেতে চান তাহলে তো কোন পথ থাকে না। তাছাড়া আগেই তো বলা হয়েছে উনার অনুপস্থিতিতে বিচার হবে। বিচারের অর্থ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন, বিচারের অর্থ রায় ঘোষণাও।

আরো পড়ুন :
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা
খালেদা জিয়ার যাবজ্জীবন সাজা চায় দুদক, ৫ বছর বহাল চায় রাষ্ট্র
নিজস্ব প্রতিবেদক, ২৩ অক্টোবর ২০১৮
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে যাবজ্জীবন চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আর বিচারিক আদালতের দেয়া পাঁচ বছরের সাজা বহাল চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলার আপিল শুনানির যুক্তিতর্কে এ প্রার্থনা করেন।

পরে আদালত আসামিপক্ষের করা সময় আবেদনের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামীকাল বুধবার দিন ঠিক করে দিয়েছেন।

আজ দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান, রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তাদের যুক্তি উপস্থাপন করেন। তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী সময় চেয়ে আবেদন করলে আদালত সময় মঞ্জুর না করলে তারা আদালত থেকে বেরিয়ে যান।

পরে আদালত দুদক ও রাষ্টপক্ষকে যুক্তি উপস্থাপন করতে বললে তারা যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।

শুনানি শেষে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তিতর্কে দুদকের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন চেয়েছি। আইন অনুযায়ী বিচারিক আদালতের ৫ বছর সাজা দেয়া ঠিক হয়নি বলেও তিনি জানান।

তিনি বলেন, জিয়া অরফানেজ মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার করা আপিলসহ চারটি আবেদনের আজকেসহ ২৮ দিনের মতো শুনানি হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ কার্যদিবসে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা অতিরিক্ত সাক্ষ্য দেয়ার জন্য একটা দরখাস্ত নিয়ে এসেছিল। গতকাল তাদের ওই দরখাস্ত শুনে দুই পক্ষের যুক্তিতর্কের পরে আদেশ দেবেন বলে আদালত নথিভুক্ত করে রাখেন। আজকে সকালে তাদের আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন আদালতে এসে বললেন, তাদের সেই দরখাস্তের বিষয়ে আদেশ দেয়ার জন্য। কেননা তারা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাবেন। তখন আদালত বললেন, সেটা আপনাদের ব্যাপার। এ সময় তারা যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য সময় চাইলেন। আদালত সময় আবেদনের বিষয়ে নামঞ্জুর করলে তারা আদালত থেকে বের হয়ে চলে যান।

অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, জিয়া অরফানেজ মামলায় নিম্ন আদালত যে সাজা দিয়েছে তা সঠিকভাবেই দিয়েছে। ওই সাজা যাতে বহাল থাকে আমি সেই মর্মে আদালতের কাছে প্রার্থনা করেছি।

যেহেতু এই রায়ের বিরুদ্ধে সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করেছেন দুদক। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করিনি। সেজন্য সাজা বৃদ্ধির ব্যাপারে কোনো বক্তব্য রাখার সুযোগ আমার ছিল না।

তিনি বলেন, আমি আমার বক্তব্যে বলেছি, বিদেশ থেকে যে অর্থ এসেছে। সে অর্থটা ইয়াতিমদের জন্য এসেছে। সেখানে লেখা ছিল প্রাইম মিনিস্টার অরফানেজ ট্রাস্ট। সেই অর্থটা পরবর্তী সময়ে দুইটা এতিমখানায় দেয়া হয়েছে। তার মধ্যে একটা হলো বাগেরহাটে জিয়া ম্যামোরিয়াল ট্রাস্ট ও বগুড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে। কাজেই টাকা যে সরকারি টাকা এবং রাষ্ট্রের অর্থ, জনগণের অর্থ এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। নিম্ন আদালত সঠিকভাবেই সাজা দিয়েছে। এই কারণে এ সাজা বহাল থাকে সেটি আমি প্রার্থনা করেছি।

এর আগে সোমবার অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অর্থের উৎসের বিষয়ে পরিষ্কার হওয়ার জন্য অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি শেষে আদালত আবেদনটি নথিভুক্ত করার আদেশ দেন। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে ওই আবেদনের ওপর মামলার আপিলের শুনানি শেষে আদেশ দেয়া হবে বলে অভিমত দেন। পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী তাদের আবেদনের ওপর আদেশ দেয়ার আবেদন করলে আদালত বিষয়টি নথিভুক্ত করার আদেশ দেন।

আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার অর্থ ৪ কোটি ৪৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা কুয়েতের আমির শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মৃতি রক্ষার্থে এতিমখানা করতে দিয়েছেন বলে খালেদা জিয়ার পক্ষে দাবি করা হয়েছে। অপর দিকে দুদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই অর্থ এসেছে সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে।

সোমবার শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা অ্যাডিশনাল এভিডেন্সের জন্য কুয়েতের আমির যে অর্থ পাঠিয়েছেন এটা প্রমাণের জন্য যে ব্যাংকের মাধ্যমে (সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংক) অর্থ পাঠানো হয়েছে তার কাগজপত্র চেয়ে আবেদন করেন। ফৌজদারি কার্যবিধি ৪২৮ ধারা অনুযায়ী আপিলেট কোর্টও প্রয়োজনে অতিরিক্ত সাক্ষ্য নিতে পারেন। এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন রেফারেন্স দেখান। তারা বলেন, এই মামলার অর্থের উৎস পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। অর্থের উৎস পাওয়া গেলে মামলার মূল বিবেচ্য বিষয় ট্রাস্টের অর্থ পাবলিক ফান্ড না প্রাইভেট ফান্ড তা পরিষ্কার হতো।

অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেছেন, এই মামলার অর্থের উৎস সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে। এ বিষয়টি মামলার ২৬তম সাক্ষীর মাধ্যমে পরিষ্কার হয়েছে। এই পর্যায়ে ২৬ বা ২৭ দিন যুক্তি উপস্থাপনে শেষে অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণের এই আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানান, এই মামলার রাষ্ট্রপক্ষের ২৬তম সাক্ষী ও তৎকালীন বাংলাদেশের সৌদি রাষ্ট্রদূত খন্দকার আবদুস সাত্তার সাক্ষ্যে বলেছেন, সৌদি কমার্শিয়াল ব্যাংক সাম্বা গ্রুপে একীভূত হয়েছে। তিনি অর্থের উৎসের বিষয়ে সাম্বা গ্রুপের মি. তালাতের কাছে চিঠি লিখেছেন। তিনি নিশ্চয়তা দিয়েছেন তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে এবং তা পাওয়া মাত্র দেয়া হবে। তবে এরপর অর্থের উৎসের বিষয়ে আর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ জন্য আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অর্থের উৎস নিশ্চিত হতে হলে অতিরিক্ত সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
চীনা কোম্পানি বেপজা অর্থনৈতিক জোনে ১৯.৯৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মৃত মায়ের গর্ভে জন্ম নিলো নতুন প্রাণ দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে কেউ মারা যায়নি : পুলিশ সুপার হামাসকে কাতার ছাড়তে হবে না, বিশ্বাস এরদোগানের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১০ দেশের অংশগ্রহণে সামরিক মহড়া শুরু করল আরব আমিরাত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা?

সকল