২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সম্পাদকদের নজিরবিহীন মানববন্ধন নিয়ে যা বলছে বিবিসি

সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন। - ছবি: বিবিসি

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকরা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।

তারা সংসদের আগামী অধিবেশনেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনী আনার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

কর্মসূচিতে সাত দফা দাবি ঘোষণা করে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ‘আগামী সংসদ অধিবেশনে আইনটি সংশোধন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা হোক’।

সম্পাদক পরিষদের সাত দফার কয়েকটি হলো--ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নয়টি ধারা সংশোধন, কোন সংবাদমাধ্যমের কম্পিউটার ব্যবস্থা জব্দ করার ক্ষেত্রে আদালতের আগাম আদেশ নেয়ার বিধান চালু করা, তথ্য অধিকার আইনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেয়া।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন কর্মসুচিস্থল থেকে বিবিসির কাদির কল্লোল জানাচ্ছেন কর্মসূচিতে ঢাকা থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রগুলোর সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের উনিশ সদস্যের মধ্যে সতের জন এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।

এর আগে আজকের এ কর্মসচিকে কেন্দ্র করে বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মাহফুজ আনাম বলেছেন, ‘সংসদে এখনো আইনটি সংশোধনের সুযোগ আছে এবং তারা সরকারকে সেটিই বোঝানোর চেষ্টা করছেন’।

এর আগে সম্পাদক পরিষদ ২৯শে সেপ্টেম্বর একই কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলো।

পরে তথ্যমন্ত্রীর আলোচনার আহবানে সাড়া দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করে তারা ত্রিশে সেপ্টেম্বর সরকারের তিন মন্ত্রী ও একজন উপদেষ্টার সাথে আলোচনায় অংশ নিয়েছিলো।

ওই বৈঠকের পর আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন যে সাংবাদিকরা যে নয়টি ধারা নিয়ে আপত্তি করেছে সেগুলো মন্ত্রীসভায় তোলা হবে এবং সেখানে আলোচনার পর তারা আবারো সম্পাদক পরিষদের সাথে আলোচনা করবেন।

কিন্তু ওই বৈঠকের পর সরকার সংসদে পাশ হওয়া আইনটিই স্বাক্ষরের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রেরণ করেন এবং রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর আইনটি কার্যকর হয়ে যায়।

এ প্রেক্ষাপটে নতুন করে আজকের মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে সম্পাদক পরিষদ।

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে মাহফুজ আনাম বলছেন তারা তাদের কর্মসূচি স্থগিত করে আলোচনায় গিয়েছিলেন আন্তরিকতা প্রকাশ করতে কারণ তারা সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে চাব যেন একটা সুষ্ঠু আইনের দিকে যাওয়া সম্ভব হয়।

তিনি বলেন,‘সরকার যদি আলোচনার প্রস্তাব দেয় আমরা কেন সেটি গ্রহণ করবো না। সেভাবেই গিয়েছি এবং উনাদের এতো সুস্পষ্ট অঙ্গীকার ছিলো। কিন্তু সেই আশায় আমাদের নিরাশ হতে হয়েছে’।

ডেইলি স্টার সম্পাদক বলেন তারা মনে করেন আইনটি সংশোধনের সুযোগ আছে। কারণ সংসদ এখনো বহাল আছে ও সামনে একটি অধিবেশন আছে।

‘আমরা মনে করি সরকারের সদিচ্ছা থাকলে, তারা যদি সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ করতে না চান তাহলে যৌক্তিকতা দেখেই তারা সিদ্ধান্ত নেবেন এবং গ্রহণযোগ্য একটা আইন আসবে’।

তিনি বলেন সাইবার নিরাপত্তার প্রয়োজন আছে কিন্তু সাংবাদিকের স্বাধীনতা হরণ করা ও বাক স্বাধীনতা হরণ করা দেশের ভবিষ্যত ও গণতন্ত্রের জন্য ভালো হবে না। এতে করে সংবিধানে যে অধিকার দেয়া আছে তারও লঙ্ঘন হবে।

মাহফুজ আনাম বলেন, ‘আইন হবার পরেও আইন সংশোধনের প্রক্রিয়া আছে। সেজন্য আমরা সেদিকেই যাচ্ছি। একটা সুযোগ আছে এখনো সেদিকেই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। বলতে পারেন এটি সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা’।

 

আরো পড়ুন:  ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে কূটনীতিকদের ব্রিফ করলেন আইনমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ১৪ অক্টোবর ২০১৮

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে বিদেশী কূটনীতিকদের ব্রিফ করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। রোববার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় আয়োজিত এ ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দূতাবাস ও হাইকমিশনের মিশন প্রধানরা যোগ দেন। এতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হকসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইতোপূর্বে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছিল।


এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি যেকোনো সময় মন্ত্রিসভায় আলোচনাটা হবে। আলোচনা করলে আবারো সম্পাদক পরিষদ ও সাংবাদিক নেতাদের সাথে বৈঠক করব। আলোচনা চালু আছে, বন্ধ হয়ে যায়নি।

এর আগে আশ্বাস দেয়ার পরেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা না হওয়ায় বিতর্কিত ৯টি ধারা সংশোধনের দাবিতে আজ জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সম্পাদক পরিষদ।

সম্পাদক পরিষদ এর আগেও একই কর্মসূচি দিয়েছিল। তবে তথ্যমন্ত্রীর অনুরোধে তা স্থগিত করা হয়। পরে সম্পাদকরা তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সাথে বৈঠক করেন। এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সম্পাদক পরিষদের আপত্তির বিষয়টি মন্ত্রিসভায় আলোচনার জন্য তোলা হবে। মন্ত্রিসভায় আলোচনার পর আবারও সম্পাদক পরিষদের সাথে তিন মন্ত্রী বৈঠকে বসবেন। এর পর মন্ত্রিসভার দুটি বৈঠক হলেও কোনোটিতেই আইনটি নিয়ে আলোচনা হয়নি। গত ৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে সই করেছেন।

‘ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে সই করা রাষ্ট্রপতির রুটিন কাজ’ মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আইন সংশোধন করতে সরকার আছে, সংসদ আছে। তাই আলোচনাটা গুরুত্বপূর্ণ।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদ আপত্তি জানিয়েছে আসছে।

আরো পড়ুন : রাষ্ট্রদূত হিসেবে সিনেটের অনুমোদন পেলেন রবার্ট মিলার

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ১৩ অক্টোবর ২০১৮

ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে মার্কিন সিনেটের অনুমোদন পেয়েছেন আর্ল রবার্ট মিলার। শপথ গ্রহণের পর আগামী মাসে তিনি বাংলাদেশে আসবেন। এর পর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে পরিচয়পত্র পেশ করে মিলার আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব নেবেন।

মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক পাতায় যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসাবে আর্ল রবার্ট মিলারের সিনেটের অনুমোদনের বিষয়টি জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে তিন বছর আট মাস দায়িত্ব পালন শেষে মার্শা বার্নিকাট চলতি মাসে ওয়াশিংটন ফিরে যেতে পারেন। সিনেটে মিলারের অনুমোদন চূড়ান্ত হওয়ার পর এখন বার্নিকাটের বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। পেশাদার কূটনীতিক বার্নিকাটের বয়স ৬৫’তে পড়ছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ না পেলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের চাকরির বয়সসীমা অনুযায়ী তিনি অবসরে যাবেন।

মিলার বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন। বর্তমানে তিনি বাতসোয়ানায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বে রয়েছেন। মিলার ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে কনস্যুল জেনারেল ছিলেন। তিনি দিল্লি, বাগদাদ ও জাকার্তায় আঞ্চলিক নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মিলার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরে কূটনীতিক নিরাপত্তা সেবাও কাজ করেছেন।

১৯৮১ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত মিলার যুক্তরাষ্ট্রের মেরিন সেনা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং ইউনাইটেড স্টেটস মেরিন কর্পস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

মিলার স্টেট ডিপার্টমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফর হিরোইজমসহ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন। সামরিক বাহিনীর একাধিক পুরস্কারেও তিনি ভূষিত হয়েছেন। মিলার ইংরেজি ছাড়াও ফরাসি, স্প্যানিশ ও ইন্দোনেশীয় ভাষা জানেন।


আরো সংবাদ



premium cement