১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা

খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে রায় ১৪ অক্টোবর

বিএনপি
খালেদা জিয়া - ফাইল ছবি

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন বৃদ্ধির আবেদন ও রাষ্ট্রপক্ষের করা জামিন বাতিল চেয়ে করা আবেদনের বিষয়ে আগামী ১৪ অক্টোবর রায় দেবেন আদালত।

এ মামলায় শুনানি স্থগিত করে রায়ের তারিখ ঘোষণার রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের উপরও একই দিন আদেশ দেয়া হবে। এছাড়া এ মামলার কার্যক্রমের মুলতবী চেয়ে আসামিপক্ষের করা আবেদনর ব্যাপারেও ওইদিনই আদেশের দিন ধার্য করা হয়েছে।

পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান আজ রোববার এ আদেশ দেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদণ্ড দেন। এরপর থেকে তিনি পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী আছেন।

আরো পড়ুন :
হাসপাতালে যেভাবে চিকিৎসা চলছে খালেদা জিয়ার
হামিম উল কবির, ০৭ অক্টোবর ২০১৮
কারাগার থেকে হাসপাতালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল শনিবার বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে কারা কর্তৃপক্ষের গাড়িতে করে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) আনা হয় এবং কেবিন ব্লকের ৬১১ কেবিনে ভর্তি করা হয়।

সাদা রঙের একটি মিৎসুবিশি প্রাইভেট কারে (ডিএমপি ৭১৬০) বিএনপি চেয়ারপারসনকে কেবিন ব্লকের নিচে নিয়ে আসা হয়। এর আগেই দুটি হুইল চেয়ার নিয়ে সংশ্লিষ্টরা অপেক্ষা করছিলেন বেগম খালেদা জিয়াকে কেবিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তখন বাইরে মুসলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। এ সময় খালেদা জিয়াকে একনজর দেখার জন্য হাসপাতালের ভেতরে ও বাইরে শতাধিক চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিএনপির নেতাকর্মীরা অপেক্ষা করছিলেন। যদিও মারমুখী পুলিশ কিছুক্ষণ পরপর তাদের দূরে সরিয়ে দিচ্ছিল। পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেককেই খালেদা জিয়ার কাছে ঘেঁষতে দেয়নি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, খায়রুল কবির খোকন, শিরিন সুলতানা প্রমুখ। তবে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস গেটে ঢুকলেও পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

কেবিনে উঠার পরপরই বোর্ডের চেয়ারম্যান বিএসএমএমইউ মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা: আব্দুল জলিল চৌধুরী বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখতে যান এবং চিকিৎসা শুরুর আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন বলে বিকেলে ব্রিফিংয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন জানান। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ বেগম খালেদা জিয়ার জন্য পাঁচ চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করলেও তাতে খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী কোনো চিকিৎসককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বা দেখা করতে দেয়া হয়নি। বিএসএমএমইউর একটি সূত্র গতকাল সন্ধ্যায় জানান, খালেদা জিয়ার আত্মীয় কার্ডিওলজিস্ট ডা: মামুনকে দেখা করার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে পরিচালক আব্দুল্লাহ আল হারুন খবরটি সত্য নয় বলে জানান।

খালেদা জিয়ার মেডিক্যাল বোর্ডে যে পাঁচ চিকিৎসক আছেন এদের দুইজন আগের মেডিক্যাল বোর্ডে ছিলেন। এরা দুইজন হলেন মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা: আব্দুল জলিল চৌধুরী (মেডিসিন), ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চলতি দায়িত্বে থাকা সহযোগী অধ্যাপক ডা: বদরুন্নেসা আহমেদ। অন্য যে তিনজন নতুন মেডিক্যাল বোর্ডে যুক্ত হয়েছেন এরা হলেন রিউমাটোলজির অধ্যাপক ডা: সৈয়দ আতিকুল হক, কার্ডিওলজির অধ্যাপক ডা: সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি এবং অর্থোপেডিকস বিভাগের অধ্যাপক ডা: নুকুল কুমার দত্ত।

মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের ব্যাপারে ইতোমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়েছে। বিএনপি বলছে, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়নি। আদালত এমন চিকিৎসককে দিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, যারা স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) অথবা ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সদস্য হবেন না। মেডিক্যাল বোর্ডের তিন সদস্যের ব্যাপারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ড্যাব মহাসচিব অধ্যাপক ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, ডা: সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি, অধ্যাপক ডা: নুকুল কুমার দত্ত ও সহযোগী ডা: বদরুন্নেসা আহমেদ স্বাচিপের সদস্য। ডা: সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি সম্বন্ধে অধ্যাপক ডা: জাহিদ বলেন, এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গুরুতর অসুস্থ থাকার পরেও ডা: সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি মির্জা ফখরুলকে সুস্থ বলে সার্টিফিকেট দেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জিকে বাদ দেয়ার নির্দেশ দেন।

অধ্যাপক জাহিদ ডা: সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি সম্বন্ধে বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বই ‘এ ব্রোকেন ড্রিমে’ সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি সম্বন্ধে বিচারপতি এস কে সিনহা লিখেছেন, অধ্যাপক সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি বিচারপতি সিনহাকে অসুস্থ বলে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। ডা: জাহিদ মন্তব্য করেন, ‘এমন একজন চিকিৎসক (অধ্যাপক সজল কৃষ্ণ ব্যানার্জি) বিএনপি চেয়ারপারসনকে কী চিকিৎসা দেবেন তা সহজেই অনুমেয়।’

তবে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন নিয়ে হাসপাতালের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, আদালতের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ীই মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়াকে আপনি কেমন দেখেছেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরী উনাকে দেখেছেন, তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। আজ রোববার বেলা ১টার পর বোর্ডের সভা হবে। তখন বিস্তারিত জানানো যাবে। ‘বেগম খালেদা জিয়াকে খুবই অসুস্থ দেখা গেছে’ এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে পরিচালক বলেন, ‘উনি কিন্তু আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, কুশল বিনিময় করেছেন। আমাদের বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয়ও দেখা করেছেন এবং উনার সঙ্গে আমাদের বিস্তারিত কথা হয়েছে।’ বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে আসার পর অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

বেগম খালেদা জিয়াকে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আনার আগে থেকে হাসপাতালে পুলিশ, র্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। হাসপাতালে কাজ নেই এমন কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এমনকি কিছুক্ষণের জন্য রোগীর সাথে থাকা লোকদেরও প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।

সি-ব্লকের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সামনে হাসপাতালের অনেক চিকিৎসক-কর্মকর্তা এবং কর্মচারীকে আটকে দেয়া হয়। আবার কিছু চিকিৎসক কেবিন ব্লকের সামনে এসে দাঁড়ালে তাদের ঠেলতে ঠেলতে টিনশেডের ওয়াকিংওয়েতে গিয়ে দাঁড়াতে বাধ্য করা হয়। ড্যাব মহাসচিব অধ্যাপক ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে কয়েকজন ডাক্তারকে পুলিশ ওয়াকিংওয়েতে নিয়ে যায় ঠেলতে ঠেলতে। ডা: জাহিদ হোসেনের সাথে সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট ছানাউল্লাহ মিয়াসহ কয়েকজন ডাক্তার ছিলেন।

খালেদা জিয়াকে সাদা প্রাইভেটকারে আনা হলেও তার ব্যবহৃত মাল-সামান পুলিশের গাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বিকেল ৪টার পর এসব কেবিনে উঠিয়ে দেয়া হয়। খালেদা জিয়া আসার আগেই অন্য একটি কারে তার জন্য বিছানা নিয়ে আসে পুলিশ।

বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। ইতঃপূর্বে খালেদা জিয় লন্ডনে চোখের অপারেশনও করেন। সার্ভাইকাল স্পন্ডোলাইসিস রোগের ভয়াবহতার কারণে তার বাম হাত ধীরে ধীরে অবশ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কোমরের সমস্যার কারণে তার শরীরের বামপাশ ও বাম পায়ের তীব্র ব্যথা ধীরে ধীরে নিচের দিকে নামছে। তিনি ঠিকমতো হাঁটা-চলাও করতে পারছেন না। কারাগারে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারেন না, হুইল চেয়ারে চলতে হয় তাকে। চিকিৎসকদের পরিভাষায়, তিনি একজন বিশেষ পরিচর্যাসাপেক্ষ রোগী (পেশেন্ট উইথ স্পেশাল কেয়ার)।


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল