২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আদালতে আসেননি খালেদা জিয়া : অনুপস্থিতির বিষয়ে শুনানি কাল

বিএনপি
অসুস্থতার কারণে আজ আদালতে হাজির হননি খালেদা জিয়া - নয়া দিগন্ত

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারে পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত আদালতে হাজির হননি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। কারা কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আদালতে কাস্টরি ওয়ারেন্ট পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামীকাল সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত।

রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অবস্থিত অস্থায়ী ঢাকার ৫ নং বিশেষ জজ ড. মো: আখতারুজ্জামান আদালতে আজ ‍বুধবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য ছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে হাজির হননি খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়ার পক্ষে আজ শুনানি করেন তার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া। তিনি আদালতকে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় আদালতে হাজির হননি। এর আগেও তিনি তার অসুস্থতার কথা আদালতকে জানিয়েছেন।

তাছাড়া এ আদালত আইন ও সংবিধান অনুযায়ী হয়নি উল্লেখ করে সানাউল্লাহ মিয়া আদালতকে জানান, এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির কাছে একটি আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে প্রধান বিচারপতির অনুমোদন ছাড়া এ আদালত বসানোর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি এ বিষয়ে এখনো কিছু বলেননি।

অপরদিকে দুদকের পক্ষে পিপি মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, খালেদা জিয়া আজ এ আদালতে উপস্থিত হতে চাননি। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাই তাকে হাজিরের ব্যাপারে জোরজবরদস্তি করা হয়নি। তাই আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য তিনি আদালতে আবেদন করেন।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতির বিষয়ে শুনানির জন্য আগামীকাল দিন ধার্য করেন।

আজ এ মামলার অপর দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্নার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আমিনুল ইসলাম এবং মনিরুল ইসলাম খানের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আখতারুজ্জামান। এ আইনজীবীরাও শুনানিতে এ আদালত আইন ও সংবিধান অনুযায়ী হয়নি বলে উল্লেখ করেন।

ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় করাগারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে দুদকের করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আজ বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর পুরোনো কেন্দ্রীয় করাগারে স্থাপিত এই আদালতে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে আনা হয়। ওই দিন শুনানি শেষে ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো: আখতারুজ্জামানের আদালত ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের শুনানির তারিখ ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।

আরো পড়ুন :
চিকিৎসা নিয়ে খালেদা জিয়ার রিটের শুনানি আজো ‘নট টুডে’
নিজস্ব প্রতিবেদক, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে দেশের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে চিকিৎসার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটটির ওপর নট টুডে (শুনানি আজ নয়) আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

এর আগে গতকাল সোমবার খালেদা জিয়ার আবেদনটি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় রাখা হয়েছিলো। তবে শুনানির প্রস্তুতির জন্য আরো সময় প্রয়োজন উল্লেখ করে হাইকোর্টে সময় চেয়েছিলেন তার আইনজীবীরা। এরপর মামলাটি মঙ্গলবারের কার্যতালিকায় এলে তার ওপর শুনানি না করে পুনরায় সময় নেন তার আইনজীবীরা।

পরে কায়সার কামাল বলেন, ‘সরকার বেআইনীভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রেখেছেন। তিনি সেখানে বিনা চিকিৎসায় রয়েছেন। চিকিৎসা পাওয়া তার সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার। সেই অধিকার থেকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সরকার তাকে বারবার বঞ্চিত করছে। এর প্রতিকার চেয়ে আমরা হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করি।

সেই রিট আবেদনটি আজ হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ছিলো। আমরা আজকে আদালতকে জানিয়েছি, আজকের জন্য আমরা আবেদনটি পরিচালনা করতে চাই না। তখন আদালত এর কারণ জানতে চাইলেন। তখন সরকার পক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছু উন্নতি হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। তখন আমি বললাম, আমাদের বিএনপির প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সেটার প্রেক্ষিতে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে পাঁচজন ডাক্তারের নাম চাওয়া হয়েছিলো। সেই তালিকাও দেয়া হয়েছে।’

কায়সার বলেন, ‘যেহেতু সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে তাই আমরা আশা করছি, অন্যান্য অধিকার ক্ষুন্ন হলেও উনাকে সরকার চিকিৎসা দিবেন। সেই প্রত্যাশায় সরকারের পদক্ষেপ আমরা পর্যবেক্ষণ করছি এবং সময় নিচ্ছি। তবে আদালতকে জানিয়েছি, সরকার যদি খালেদা জিয়ার পর্যাপ্ত চিকিৎসা দেন সেক্ষেত্রে হয়ত আমাদের এ মামলা পরিচালনা না করাও হতে পারে। তখন আদালত বলেন, আপনারা তো ইউনাইটেড হাসপাতালে তার চিকিৎসা করতে চাচ্ছেন বলে পত্র-পত্রিকায় দেখছি। জবাবে আমরা বলি, তার উপযুক্ত চিকিৎসা যেখানে নিশ্চিত হবে সেখানেই তার চিকিৎসার দাবি করছি। তার অসুস্থতা অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট যেখানে হবে সে ধরণের হাসপাতালেই তার চিকিৎসা চাচ্ছি।’

এ পর্যায়ে আদালত খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, যেহেতু আপনারা বিষয়টি পদক্ষেপগুলো পর্যবেক্ষণ করছেন সেক্ষেত্রে নট টু ডে থাকলো। তবে পরবর্তিতে মামলাটি কার্যতালিকায় থাকবে।

দেশের বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চেয়ে হাইকোর্টের রিট আবেদন জানায় তার আইনজীবীরা। গত ৯ সেপ্টেম্বর রিটটি দায়েরের পর ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, রিটে বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার নির্দেশ এবং এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়ার বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে তার চিকিৎসা দাবি করে আসছে তার আইনজীবীরা। কিন্তু সেখানে কোনো প্রতিকার না পেয়ে তারা এ রিট দায়ের করেন বলেও তার আইনজীবীরা জানান।

প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।


আরো সংবাদ



premium cement