১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গাজীপুরে বিএনপির মেয়র প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের হয়রানি না করতে আদালতের নির্দেশ

হাইকোর্ট - সংগৃহীত

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মেয়র প্রার্থী নেতাকর্মী, সমর্থক ও এজেন্টদের গ্রেফতার কিংবা হয়রানি না করতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি নিশ্চিতের ব্যবস্থা করতেও আদেশে বলা হয়েছে।

সোমবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মাদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে রুলসহ এ নির্দেশনা দেন।

একই সঙ্গে, পুলিশ বা অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী, তার সমর্থক ও প্রচারকারীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগের গাইডলাইন মেনে চলতে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেন আদালত।

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, নির্বাচন কমিশন, পুলিশের মহাপরিদর্শক, গাজীপুরের পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট আটজনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
গত ২৪ জুন নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকেও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরোয়ানা ছাড়া কাউকে গ্রেফতার বা হয়রানি না করার নির্দেশনা দেয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে গাজীপুরের পুলিশ সুপারকে ওই নির্দেশনা দেয়া হয়।

গত ৩১ মে গাজীপুরে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার রিটটি দায়ের করেন।
রিটে গ্রেফতার সংক্রান্ত আপিল বিভাগের নির্দেশনা ভঙ্গ করে গাজীপুরে গ্রেফতার বা হয়রানি না করার নির্দেশনা ও রুল জারির আবেদন করা হয়।

রিট আবেদনে বলা হয়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী প্রচারণার সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটা আইনসম্মত নয় এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী। সুপ্রিম কোর্টের রায় অমান্য করে এটা করা হচ্ছে। তারা আইন মানছেন না।

 

গ্রেফতার না করতে ইসির নির্দেশ
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত পরোয়ানা ছাড়া কাউকে গ্রেফতার বা হয়রানি না করার নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল রোববার গাজীপুরের পুলিশ সুপারকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।

নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনে এসে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সকল দল এবং প্রার্থীদের সমান সুযোগ নিশ্চিতকরণ, পুলিশ বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার-হয়রানিসহ কতিপয় অভিযোগ উত্থাপন করেন। সেগুলোর প্রতিকারের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর একটি আবেদন করেছেন’।

‘উল্লেখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার না করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন। এ অবস্থায় নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কোনো বাসিন্দা বা কোনো ভোটারকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার না করার জন্য অনুরোধ করা হল।’

গাজীপুর সিটিতে ৫৭টি সাধারণ এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। এ সিটি কর্পোরেশনের মোট ভোটার ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৭ জন। এরমধ্যে ৫ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৫ জন পুরুষ এবং ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন নারী ভোটার। নির্বাচনে সাতজন মেয়র, ৮৪ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement