অর্থবছর শেষের ৩ মাসের মধ্যে উদ্বৃত্ত অর্থ কোষাগারে জমা দিতে হবে
স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার উদ্বৃত্ত অর্থ বিষয়ে গেজেট- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
অর্থবছর শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। এই উদ্বৃত্ত অর্থ হচ্ছে, তফসিলভুক্ত কোনো সরকারি সংস্থার বার্ষিক পরিচালনা ব্যয়, নিজস্ব অর্থায়নে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বার্ষিক ব্যয় এবং বার্ষিক পরিচালন ব্যয়ের ২৫ শতাংশের অতিরিক্ত অর্থকে বুঝাবে। তবে তফসিলভুক্ত কোনো সংস্থা তহবিলে রক্ষিত অর্থ সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান না করলে, সরকার ওই সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধিবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। এই সব বিধিবিধান রেখে স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাসমূহের তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান আইন, ২০২০ এর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ বিভাগের ওয়েব সাইটে এই গেজেট প্রকাশ করা হয়। এর আগে চলতি বছরের শুরুতে জাতীয় সংসদে আইনটি পাস হয়।
আইনটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, সময়াবদ্ধ উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ এবং তাহাদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে একটি উন্নত দেশ গড়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানশিয়াল করপোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাগুলোর তহবিলে জমাকৃত উদ্বৃত্ত অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহারের নিমিত্ত বিধান প্রণয়নকল্পে আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে।
আইন অনুযায়ী তফসিলভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আপদকালীন ব্যয় নির্বাহের জন্য যুক্তিসঙ্গত পরিমাণ অর্থ যাহা তাদের বার্ষিক পরিচালন ব্যয়ের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশের সমপরিমাণ অর্থ অতিরিক্ত হিসাবে পৃথকভাবে সংরক্ষণ করতে পারবে।
আইনে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থের সংস্থান প্রয়োজন; এবং যেহেতু উক্তরূপ সংস্থাগুলো নিজস্ব তহবিল হইতে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের পরও উহাদের তহবিলে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্বৃত্ত থাকে এবং সংস্থাসমূহের উদ্বৃত্ত অর্থের মালিকানা প্রকৃতপক্ষে জনগণের; সেই কারণে উক্ত অর্থ জনগণের কল্যাণ সাধনে ব্যবহার করা সমীচীন।’
আইনে বলা হয়েছে, ‘তফসিলভুক্ত কোনো সংস্থার পেনশন ও ভবিষ্য তহবিল (প্রভিডেন্ট ফান্ড) থাকলে তা পৃথকভাবে পরিচালনা করা যাবে। ’
প্রণীত আইনে ৬১টি সংস্থাকে চিহ্নিত বা তফসিলভুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছেÑ জাতীয় কারিকুলাম এবং টেক্সটবুক বোর্ড; বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড; বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড; উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা; উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, কুমিল্লা; উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর; উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী; উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, সিলেট; উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম; উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, বরিশাল; উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, দিনাজপুর; জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়, গাজীপুর; বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়; বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি; পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বগুড়া; বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট; বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ; বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট; বাংলাদেশ মান নিয়ন্ত্রণ ও পরীক্ষা ইনস্টিটিউট; বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ; বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল; জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউট; বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন; বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন; পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড; রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ; বাংলাদেশ সেরিকালচার বোর্ড; রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো; বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ; বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী; বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ; বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন; বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান; বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান; বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশন এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান; বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন; পেট্রোবাংলা; বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন; ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ; বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন; বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন; বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন; বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন; বাংলাদেশ চা বোর্ড; বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন; বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন; বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ; চট্টগ্রাম ওয়াসা; ঢাকা ওয়াসা; বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড; পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড; চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ; মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ; বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষ; বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন; বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড; বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা