২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বন্দরে পণ্য আসার তিন দিনের মধ্যে ডকুমেন্ট না দিলে জরিমানা

সংশোধন হচ্ছে কাস্টমস আইন
-

বন্দরে পণ্য পৌঁছানোর তিন দিনের মধ্যে আমদানিকারক বিল অব এন্ট্রিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র শুল্ক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা না দিলে জরিমানার মুখে পড়বেন। এসংক্রান্ত একটি বিধান কাস্টমস আইনে সংযোজনের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এটি কার্যকর করা গেলে আমদানি পণ্য বন্দর থেকে ছাড় করার ক্ষেত্রে আরো অগ্রগতি হবে।
গতকাল রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) কার্যালয়ে এক কর্মশালায় এ তথ্য জানান এনবিআর সদস্য খন্দকার মোহাম্মদ আমিনুর রহমান। তিনি বলেন, আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ আর সহজে ব্যবসা করার সূচকে অবস্থান ১৬৮তম। ফলে সন্তুষ্টি খুঁজে লাভ নেই।
ইআরএফ, এনবিআর এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপের অঙ্গসংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) যৌথভাবে ‘ব্যবসা সহজীকরণ : আন্তর্জাতিক বাণিজ্য’ বিষয়ক কর্মশালাটির আয়োজন করে।
কর্মশালায় বলা হয়, ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, আমদানি-রফতানি পণ্যের খালাস প্রক্রিয়া বিশেষত শুল্কায়নে সময় বেশি লাগছে। এতে তাদের ব্যবসায় ব্যয়ও বেড়ে যায়। এর ব্যাখ্যায় এনবিআরের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বেশ কিছু কারণ তুলে ধরেন। ঢাকা আইসিডির কমিশনার মো: আনোয়ার হোসাইন বলেন, সময়মতো বিল অব এন্ট্রি পাওয়া গেলে এক দিনের মধ্যে পণ্যের শুল্কায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব। তবে শিপিং এজেন্ট, ব্যাংকিং ডকুমেন্ট, বন্দর কর্তৃপক্ষের ক্লিয়ারেন্স, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের (আমদানি-রফতানিকারকের পক্ষে পণ্য খালাস প্রক্রিয়ায় জড়িত) নানা প্রক্রিয়ার কারণে শুল্কায়নে দেরি হয়। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্তৃপক্ষের শুল্কহার পছন্দ না হলে, সময়মতো শুল্ককরের টাকা পরিশোধে অনিচ্ছুক হলে কিংবা পছন্দের ডিউটি অফিসারের জন্য অপেক্ষা করলে পণ্য খালাসে দেরি হয়। আবার রাসায়নিক পরীক্ষার জন্যও দেরি হয়। দেরির জন্য কেবল এককভাবে শুল্ক কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।
এ প্রসঙ্গে এনবিআরের সদস্য খন্দকার আমিনুর রহমান বলেন, বন্দরে পণ্য আসার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বিল অব এন্ট্রি দাখিল না করলে জরিমানা আরোপের বিধান আনা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সহজে ব্যবসা করার সূচকে ভারত অনেক এগিয়েছে। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানেরও বড় অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের আট ধাপ অগ্রগতি হলেও তাতে আমরা সন্তুষ্ট নই। টাকা নিয়ে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বসে আছেন। কিন্তু এসব সূচকের তথ্য বিনিয়োগকারীদের ভাবায়।
তিনি বলেন, আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ আর সহজে ব্যবসা করার সূচকে অবস্থান ১৬৮তম। ফলে সন্তুষ্টি খুঁজে লাভ নেই। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাঁচামালের প্রাপ্যতা ঘোষণার (ইউডি) ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী সমিতির হাতে গেছে। কিন্তু ইউডি সংশোধনের কাজ এখন পর্যন্ত অনলাইন করেনি। ফলে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ১৭০ বার পর্যন্ত ইউডি সংশোধন করছে। এতবার কি পরিবর্তনের প্রয়োজন পড়ে? অনলাইন না হওয়ায় শুল্ক কর্তৃপক্ষ এটি তাৎক্ষণিক দেখতে পারছে না।
আইএফসির প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিস্ট নুসরাত নাহিদ ববি বলেন, অনেক সময় এনবিআরের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হলেও তা কার্যক্ষেত্রে ফল দিচ্ছে না। উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়ের নিবন্ধনের জন্য বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) কাছে গেলে তারা ভ্যাট কর্তৃপক্ষের কাছ পাঠান। আবার ভ্যাট কর্তৃপক্ষ বিডার কাছে পাঠান।
কর্মশালায় ঢাকা বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার এস এম হুমায়ূন কবীর, ঢাকা কাস্টমস হাউজের কমিশনার মো: মোয়াজ্জেম হোসেন ও ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement