২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ডাকঘর স্কিমের সুদ পুনর্বিবেচনার আশ্বাস : কমানোর ইঙ্গিত সঞ্চয়পত্রে অর্থমন্ত্রীর অবস্থান পরিবর্তন

-

ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। শুধু তাই নয়, ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে বিনিয়োগকারীদের আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেয়া হবে বলেও তিনি জানান। একই সাথে অর্থমন্ত্রী সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোরও ইঙ্গিত দিয়েছেন।
গতকাল বিকেল সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সরকার গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার প্রায় অর্ধেকে কমিয়ে আনে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত বিভিন্ন মহল সমালোচনা করে। তাই গতকাল একজন সাংবাদিক অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমে দেশের প্রান্তিক জনগণ টাকা রেখে থাকে। সরকার হঠাৎ করে এই স্কিমের মুনাফার হার অর্ধেকে নামিয়ে আনে। এ বিষয়টি সরকার পুনর্বিবেচনা করবে কি না।
এর জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, যেহেতু ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার প্রায় অর্ধেকে কমিয়ে আনা নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে, তাই বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে। এ বিষয় নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করব। এখন হয়তো কিছু করতে পারব না, আগামী বাজেটের পর এটি নিয়ে কিছু করা হবে। ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার কমানোর কারণ ব্যাখ্যা করতে যেয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এর আগে যখন সঞ্চয় বিক্রির ওপর কিছু নিয়মকানুন চালু করলাম। তারপর দেখতে পেলাম সমাজের সেই অংশ যারা ছয়-সাত কোটি টাকা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করত, তারা সবাই ডাকঘরে চলে গেল।
তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্র ও ডাকঘর সঞ্চয় স্কিম করা হয়েছিল সাধারণ মানুষের জন্য। কিন্তু এগুলোতে বড় ধরনের অপব্যবহার হয়েছে। ব্যাংকের সুদের হার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই, যেখানে ব্যাংকে টাকা রাখলে এত বেশি সুদ দেয়া হয়। এসব পদেেপর মাধ্যমে বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে এক জায়গায় যেতে না পারলেও কাছাকাছি যাওয়া যাবে। সরকারকে কর না দিয়ে সব (মুনাফা) নিয়ে যাওয়ার উদাহরণ খুব বেশি দেশে নেই বলে তিনি মনে করেন।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও বেশি। দেখি এটা নিয়েও কিছু করতে পারি কি না। সঞ্চয়পত্র নিয়ে দেশে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আমরাতো এগুলো চাইনি। ব্যাংক খাতে সুদের হার এক অঙ্কে নিয়ে আসাটা অনেক বড় কাজ। এটা করতে গেলে সম্পর্কিত সব উপকরণে হাত দিতে হবে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, মানুষ সুদ পরিশোধ করতে না পেরে আত্মহত্যা করছে। পৃথিবীর কোনো দেশে এভাবে ব্যাংকে টাকা রাখলে ইন্টারেস্ট দেয়া হয় না উল্টো টাকা দিতে হয়। যে দেশে ব্যবসা আছে, সে দেশে ব্যাংকে টাকা রাখে না। আমাদের কাছে সবাই সমান, ব্যবসায়ীদের ইফেকটিভ রেইটে টাকা দিতে হবে এটি আমাদের কমিটমেন্ট। না হলে ব্যবসা প্রসার হবে না ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থান হবে না।’
সব জায়গায় আমানতের সুদহার ৬ শতাংশ হলে সবাই সরকারি ব্যাংকে চলে যাবে, এত ছোট ব্যাংকগুলো তিগ্রস্ত হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এখনো ব্যাংক নিতে সবাই আগ্রহী। আমার কাছে আবেদন দেয়া হয়।
উল্লেখ্য ১৩ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হয় ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার কমানোর বিষয়টি। এ সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, তিন বছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার হবে ৬ শতাংশ, যা এত দিন ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ ছিল।
ডাকঘরে চারভাবে টাকা রাখা যায়। ডাকঘর থেকে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরে সঞ্চয়পত্র কেনা যায়, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাব খোলা যায়। আবার ডাক জীবন বীমাও করা যায়। সুদের হার কমানো হয়েছিল ডাকঘরের সঞ্চয় স্কিমের মেয়াদি হিসাব ও সাধারণ হিসাবে। সাধারণ হিসাবের েেত্র সুদের হার সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement