২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
২০ হাজার চীনা নাগরিক নিয়ে শঙ্কা

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চট্টগ্রাম ও বিমানবন্দরে সতর্কাবস্থা

-

চীনসহ বিশ্বের অনেক দেশে সম্প্রতি দেখা দিয়েছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ইতোমধ্যে চীনে শতাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। চট্টগ্রামে কর্মরত প্রায় ২০ হাজার চীনা নাগরিককে নিয়ে তাই শঙ্কায় পড়েছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ। ভাইরাসটির সংক্রমণ প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, বাংলাদেশের বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলে আনুমানিক ২০ হাজার চীনা নাগরিক কর্মসূত্রে বসবাস করছে। এসব চীনা নাগরিক চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেল, মিরসরাই ইকোনমিক জোন, কক্সবাজারের মাতারবাড়ি প্রকল্প, চীনা বিনিয়োগে গড়ে ওঠা তৈরী পোশাক কারখানাগুলোতে কাজ করছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড, কম্পোজিট টেক্সটাইল মিল, ওভেন ও নিটওয়্যার শিল্প, সোয়েটার কারখানা, বায়িং হাউজ, মার্চেন্ডাইজিং ও ফ্যাশন ডিজাইন প্রতিষ্ঠানগুলোতেও কাজ করছে অনেক চীনা নাগরিক।
সম্প্রতি চীনে শুরু হওয়া চাইনিজ নিউ ইয়ার উদযাপনের জন্য এদের মধ্য থেকে বিপুল সংখ্যক নাগরিক চীন বেড়াতে গেছেন। এসব চীনা নাগরিক বাংলাদেশ তথা চট্টগ্রাম অঞ্চলে ফেরত এলে তাদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসে এ অঞ্চল সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ধারণা করছে।
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সিভিল সার্জনের ব্যবস্থাপনায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে পৃথক ওয়ার্ড তৈরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল ও ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে প্রতিটি পাঁচ শয্যার করে পৃথক তিনটি বিশেষায়িত ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। চট্টগ্রামের সব হাসপাতাল ও উপজেলা হাসপাতালগুলোকেও এ ভাইরাস মোকাবেলায় সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চীনা নাগরিকদের দেশে যাওযার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও কোম্পানিগুলোর নিকট প্রয়োজনীয় তথ্য চাওয়া হয়েছে। চীন থেকে ফেরত আসা নাগরিকদের যথাযথভাবে স্ক্যানিং করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে গত দুই সপ্তাহের মধ্যে যারা চীন থেকে এসেছে তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর, চট্টগ্রামের উদ্যোগে প্রতিটি প্রবেশদ্বারে চিকিৎসক টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চীন থেকে আসা যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা রেকর্ড রাখা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর, বিমানবন্দর, নৌবন্দর, স্থলবন্দরসহ সব প্রবেশদ্বারে স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ব্যবস্থায় দূর থেকে কিংবা সরাসরি শরীর থেকে তাপমাত্রা নেয়া, সর্দি-কাশি, হাঁচিসহ অন্য কোনো উপসর্গ আছে কি না তা পরীক্ষা করা হবে। যাদের শরীরে জ্বর পাওয়া যাবে তাদের বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা করা হবে।
করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনও এ ব্যাপারে নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের একটি মেডিক্যাল টিম এ বিষয়ে কাজ করছেন বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে জানা গেছে। চীনের যেসব জাহাজ বন্দরে আসছে সেসব জাহাজের নাবিকদের বিশেষ ব্যবস্থায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দরে একটি চিকিৎসক টিম প্রস্তুত রেখেছে। তবে গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি।

 


আরো সংবাদ



premium cement