২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের তথ্য দিলেন কাজি

রিফাত হত্যা
-

বরগুনার বহুল আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় জেলা ও দায়রা জজ মো: আছাদুজ্জামানের আদালতে মঙ্গলবার আরো তিনজনের সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। এ দিন মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) সাক্ষী আনিচুর রহমান, কামাল ও মিনারা বেগম সাক্ষ্য দেন। এ সময় আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ১০ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এ পর্যন্ত ২৮ জনের সাক্ষ্য জেরা সমাপ্ত হলো।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় বরগুনা জেলা কারাগার থেকে পুলিশ পাহারায় আটজন প্রাপ্তবয়স্ক আসামিকে দায়রা আদালতে উপস্থিত করা হয়। জামিনে থাকা আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিও আদালতে উপস্থিত হন। আসামি মুছা পলাতক রয়েছে। সাক্ষ্য শেষে আসামিদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় আদালত এজলাসে বসেন জেলা ও দায়রা জজ মো: আছাদুজ্জামান। আদালতে সাক্ষ্য দেন আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও নয়ন বন্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি) আনিচুর রহমান, ঘটনাস্থলের ক্যালিক্স একাডেমির দারোয়ান কামাল ও মিনারা বেগম।
সাক্ষ্য শেষে কাজি আনিচুর রহমান বলেন, আমি আদালতে বলেছি- আমি বরগুনা পৌরসভার ৪, ৫ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজি)। ২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর শাওন ও মুন্না আমার কাছে এসে বলে, আমাদের বন্ধু নয়ন একটি মেয়েকে ভালোবাসে। তাদের বিয়ে পড়াতে হবে। শাওন ও মুন্না আমাকে বলে যায় ১৫ অক্টোবর বিয়ে পড়াতে হবে। ওই তারিখ শাওন, মুন্নাসহ চার-পাঁচজন ছেলে এসে আমাকে নয়ন বন্ডের বাসায় নিয়ে যায়। ওখানে নয়ন বন্ডের মা শাহিদা বেগমসহ ১৪-১৫ জন ছিলেন। আমি নয়ন বন্ড ও মিন্নির বিয়ে পড়াতে প্রথমে রাজি না হলেও পরে বাধ্য হয়েছি। মিন্নির পরিবার বিয়েতে রাজি আছে কি না জানতে চাইলে মিন্নি বলে তারা রাজি আছে। এ সময় উপস্থিত একজন ফোন করে মিন্নির মায়ের সাথে ফোনে কথা বলে দেয় আমাকে। মিন্নির মা আমাকে বিয়ে পড়াতে বলেন। আমি নয়ন বন্ড ও মিন্নির বিয়ে পড়াই। বিয়ের দেনমোহর ছিল পাঁচ লাখ টাকা। বিয়েতে কাবিননামায় মিন্নির পক্ষে সাক্ষ্য ছিল জান্নাতুল ফেরদৌস ও তার স্বামী সাইফুল ইসলাম মুন্না। নয়ন বন্ডের পক্ষে সাক্ষ্য ছিল রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি ও রাজু। বিয়ে পড়ানোর পর আলাপ চারিতায় জানতে পারি মিন্নির আপন চাচা সাবেক পৌর কাউন্সিলর আবু সালেহ। তিনি আমার পূর্ব পরিচিত। নয়ন বন্ডের বাসা থেকে নেমে সালেহ কাউন্সিলরকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। সালেহ আমাকে বিয়ের কথা গোপন রাখতে বলেন। একটু পর মিন্নির বাবা কিশোর আমাকে ফোন দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। বেশ কিছু দিন পরে আমি জানতে পারি মিন্নি আবার রিফাত শরীফের সাথে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে।
মিন্নির বাবা কিশোর আমাকে ফোন করে বলেন, মিন্নি ও নয়ন আগামী কাল তোমার কাছে যাবে। তাদের মধ্যে কমিটমেন্ট হয়েছে, তুমি তাদের তালাকের ব্যবস্থা করে দিও। পরের দিন মিন্নি ও নয়ন বন্ড আমার কাছে আসেনি। মিন্নির বাবা পরের দিন আবার আমাকে ফোন করে বলে ওরা কালকে যেতে পারেনি। আজকে যাবে, তুমি তালাকের ব্যবস্থা করে দিও। কিন্তু মিন্নি ও নয়ন বন্ড আমার কাছে আসেনি। রিফাত শরীফ খুন হওয়ার পরে মিন্নির চাচা সালেহ আমাকে ফোন দিয়ে নয়ন বন্ড ও মিন্নির বিয়ের বিষয় কোনো তথ্য সাংবাদিকদের দিতে নিষেধ করে। সাংবাদিকরা ও প্রশাসনের লোকজন আমার অফিসে গেলে আমি ভয়ে তাদের কাছে মিন্নি ও নয়ন বন্ডের কাবিন নামার তথ্য দিই। কাজি বলেন, একজন মুসলমান মেয়ের এক সাথে দুইজন স্বামী থাকতে পারে না। কাজি আরো বলেন, আমি আদালতে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও নয়ন বন্ডের কাবিননামা দাখিল করে দিয়েছি।
সাক্ষী কামাল বলেন, আমার বাড়ি ঝালকাঠি জেলায়। চার হাজার টাকা বেতনে বরগুনা ক্যালিক্স একাডেমিতে দারোয়ানের চাকরি করি। ঘটনার দিন সকাল অনুমান সোয়া ১০টার সময় কয়েকটি ছেলে একটি ছেলেকে কলেজ গেট থেকে টেনে আমাদের স্কুলের সামনে এনে কোপায়। অনেকগুলো ছেলে দাঁড়িয়ে ছিল। ছেলেটি রক্তাক্ত অবস্থায় একটি রিকশায় উঠে যায়। পরে জানতে পারি নয়ন বন্ড, রিফাত ফারজি ও রিশান ফরাজি রিফাত শরীফকে কুপিয়েছে। পরের দিন ওইখান থেকে বাবুলের চটপটির দোকানের একটি চামচ জব্দ করে। সাক্ষী মিনারা বেগম বলেন, আমার ছেলে হেলাল সিকদার রিফাত শরীফের বন্ধু। তার কাছে এবং ভিডিও দেখে জানতে পারি ঘটনার দিন ২৬ জুন নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজি, রিশান ফরাজিসহ অনেক ছেলেরা রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আসামি মিন্নির পক্ষের আইনজীবী কমল কান্তি দাস ও মাহবুবুল বারী আসলাম সাক্ষ্যদের জেরা করেন। আসলাম বলেন, কাজি আনিচুর রহমানকে বিয়ের বিষয় জেরা করেছি। কাবিনটি সঠিক নয়। আমরা কাজিকে বলেছি মিন্নি ও নয়ন বন্ডের সাথে বিয়ে হয়নি। বাদি পক্ষের লোকজনের কথায় ওই কাবিন সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ছাড়া কোনো সাক্ষ্যই রিফাত হত্যার সাথে মিন্নি জড়িত সে বিষয় কিছু বলেননি।
রাষ্ট্রপক্ষের পিপি ভুবন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, মিন্নি নয়ন বন্ড আগে যে বিয়ে করেছে তা আদালতে কাজি সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন। সেই বিয়ে বলবদ থাকাকালিন রিফাত শরীফকে বিয়ে না করলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটত না। কাজি সেই সাক্ষ্যই আদালতে দিয়েছেন।
শিশু আদালতে ১৪ আসামি বিরুদ্ধে দুইজন সাক্ষ্য প্রদান
রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় শিশু আদালতে মঙ্গলবার দুইজন সাক্ষীর ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। ওই আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন আবদুল হাই আল হাদি ও সজল। শিশু আদালতের বিচারক মো: হাফিজুর রহমান তাদের সাক্ষ্য রেকর্ড করেন। তাদের ১০ জন আইনজীবী জেরা করেন। 

 


আরো সংবাদ



premium cement
প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের শেষ ধাপের পরীক্ষা শুক্রবার লম্বা ঈদের ছুটিতে কতজন ঢাকা ছাড়তে চান, কতজন পারবেন? সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ ত্যাগ করলেন ভুটানের রাজা জাতীয় দলে যোগ দিয়েছেন সাকিব, বললেন কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই কারওয়ান বাজার থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে ডিএনসিসির আঞ্চলিক কার্যালয় এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন

সকল