দুই সাংবাদিককে মারধর করা সেই পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

দুই সাংবাদিককে মারধরকারী পুলিশের সেই সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) মামুন হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে রমনা বিভাগের ডিসি সাজ্জাদুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ডিএমপির কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন বাংলা ট্রিবিউনের সাংবাদিক শেখ জাহাঙ্গীর আলম। মামুন হোসেনকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, অভিযুক্ত এএসআই মামুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য রমনা বিভাগের ডিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনারের কাছে অভিযোগ পত্রে সাংবাদিক জাহাঙ্গীর উল্লেখ করেন, গত ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার থেকে মোটরসাইকেলে পান্থপথে কর্মস্থল বাংলা ট্রিবিউন অফিসে যাচ্ছিলেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের স্টাফ রিপোর্টার (ক্রাইম) সাজ্জাদ মাহমুদ খান ওরফে সাজ্জাদ হোসেন। তারা পরীবাগ লিংক রোড পার হওয়ার সময় যানজটে আটকা পড়েন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে দ্রæতগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে আসা শাহবাগ থানার এএসআই মামুন হোসেন তার (সাংবাদিক জাহাঙ্গীর) ডান পায়ে চাপা দেয়। জাহাঙ্গীর ও সাজ্জাদ প্রতিবাদ করলে মামুন ইচ্ছাকৃতভাবে আরো দুই-তিনবার মোটরসাইকেলের পিকআপ বাড়িয়ে তার পায়ে আঘাত করতে থাকে এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকে। পুলিশ সদস্যের এই অপেশাদার আচরণের প্রতিবাদ করলে তাদের হত্যার হুমকি দেন মামুন। তবে পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজের নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় পথচারী এবং আশপাশের দোকানদাররা ঘটনাস্থলে জড়ো হলে সাংবাদিক জাহাঙ্গীরকে লাথি মেরে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন মামুন। পরে থানায় খোঁজ নিয়ে তার নাম ও পরিচয় জানা যায়।
পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান জানান, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী অভিযুক্ত এএসআই মামুনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভুয়া নম্বর প্লেট ব্যবহার করতেন মামুন : এএসআই মামুনের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে জালিয়াতি করে ডিএমপি কমিশনারের নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত মোটরসাইকেলের নম্বর প্লেট ব্যবহার করতেন তিনি। ঘটনার পর ওই নম্বর প্লেটের (ঢাকা মেট্রো হ-১২-৭৫০৫) সূত্র ধরে বিআরটিএ তে অনুসন্ধান করে জানা যায়, গাড়িটি ডিএমপি কমিশনারের নামে নিবন্ধন করা।
ডিএমপির ট্রাফিক পূর্ব বিভাগ জানায়, এসআই আলী আফজাল মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করেন। তবে গাড়িটি রাজারবাগ ট্রাফিক ব্যারাকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, আলী আফজাল জানান, মোটরসাইকেলটি তার নামে বরাদ্দ দেয়া তবে নষ্ট হওয়ায় দেড় বছর ধরে গাড়িটি রাজারবাগ ট্রাফিক ব্যারাকে রাখা আছে। এদিকে ওই মোটরসাইকেলটি রাজারবাগ ট্রাফিক ব্যারাকে অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকলেও এর নম্বরটি কপি করে ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলে ব্যবহার করতেন শাহবাগ থানার এএসআই মামুন হোসেন।