২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

লড়াই হবে ত্রিমুখী

৩৫ নম্বর ওয়ার্ড
-

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন প্রার্থী। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের তিনজন এবং বিএনপি ও জাতীয় পার্টির একজন করে প্রার্থী রয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগের দুই এবং বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে মূল লড়াই হতে পারে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। অন্যদিকে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের একজন করে প্রার্থী রয়েছেন। তাদের লড়াই হবে সমানে সমান।
ডিএনসিসি অঞ্চল-৩ আওতাধীন প্রায় ৫৪ হাজার ভোটার অধ্যুষিত ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে হোল্ডিং রয়েছে চার হাজার ২০০টি। বড় মগবাজার, দিলু রোড, নিউ ইস্কাটন রোড, পশ্চিম মালিবাগ, মধ্য পেয়ারাবাগ, গ্রিনওয়ে ও উত্তর নয়াটোলা নিয়ে গঠিত ওয়ার্ডটি। এর আয়তন এক দশমিক ১৪৯ বর্গকিলোমিটার। ওয়ার্ডটি ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি সড়ক ও অলিগলি ব্যানার পোস্টারে ছেয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোক্তার সরদারের ২০টির অধিক নির্বাচনী ক্যাম্প রয়েছে। অন্য প্রার্থীদের কোনো ক্যাম্পই নেই। গত নির্বাচনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোক্তার সরদারকে আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিলেও তিনি জিততে পারেননি। সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রমনা থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল মুনির চৌধুরী বিজয়ী হয়েছিলেন। দুই বছরের মতো দায়িত্বও পালন করেন তিনি। তবে একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিলর হিসেবে যোগ্যতা হারান ফয়জুল মুনির। তখন বিগত নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া মোক্তার সরদার কাউন্সিলরের দায়িত্ব পান। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী শেখ আমির হোসেন তৃতীয় হয়েছিলেন। এবারো ওই তিনজন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মোক্তার সরদার। তার প্রতিক কাঁটা চামচ। তিনি নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তার ব্যানার-পোস্টারে পুরো এলাকা ছেয়ে গেছে। তিনটি নির্বাচনী ক্যাম্প থাকার বিধান থাকলেও তার ক্যাম্প রয়েছে ২০টির বেশি। এসব ক্যাম্প থেকে কর্মী-সমর্থকরা ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন। ফয়জুল মুনির চৌধুরী এবারো আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। তার মার্কা ঠেলাগাড়ি। এলাকায় তার ব্যানার-পোস্টার রয়েছে। তিনি নিয়মিত ভোট প্রার্থনায় বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। গত নির্বাচনের মতোই এবারো তাকে বিজয়ী করতে আহ্বান জানাচ্ছেন। নির্বাচিত হলে নেতা হিসেবে নয়, ভাই হিসেবে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি।
এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ দলীয় আরেকজন প্রার্থী রয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। আব্দুল হামিদ নামে ওই প্রার্থী স্থানীয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক। তার মার্কা ব্যাডমিন্টন র্যাকেট। এলাকায় তার ব্যানার-পোস্টার রয়েছে। তবে তার ভোট ব্যাংক খুবই কম বলে জানা গেছে।
একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন দলের সমর্থন পাওয়া মোক্তার সরদার। তিনি বলেন, আমি এত দিন এলাকাবাসীর সাথে ছিলাম, তাদের জন্যই কাজ করেছি। আশা করছি এবারো তারা আমাকে মূল্যায়ন করবেন।
এ ওয়ার্ডে বিএনপির একমাত্র প্রার্থী শেখ আমির হোসেন। তিনি হাতিরঝিল থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তার মার্কা এয়ার কন্ডিশনার। তিনি বিগত সময়ে ইস্পাহানি বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের পরিচালনা পরিষদের সহসভাপতিসহ মসজিদ-মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য ছিলেন। এলাকায় তার পোস্টার রয়েছে। তবে প্রতিদিন তার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে এবং লিফলেট বিলি করতে করতে গেলে কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ ছাড়া নির্যাতনের ভয়ে পোলিং এজেন্ট পাওয়াও দুষ্কর হয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান। শেখ আমির হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, গত নির্বাচনে আমার বিজয়ী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকালেই পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয়ার কারণে প্রকৃত ফলাফল পাওয়া যায়নি। এবার ভোটাররা সুষ্ঠু পরিবেশ পেলে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার আশা করছি। নির্বাচিত হতে পারলে তিনি এলাকার পানি স্বল্পতা নিরসনে পাম্প স্থাপন ও পাইপ লাইন সংস্কার, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পয়ঃনিষ্কাষণ সমস্যার সমাধান, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, বস্তিবাসী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান। এ ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টি থেকে প্রার্থী হয়েছেন আবুল বাশার চৌধুরী। তার মার্কা ঘুড়ি। এলাকায় তার পোস্টার রয়েছে। তবে তার ভোট খুবই কম বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
২৪, ২৫ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড ৯ গঠিত। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন নাজমুন নাহার হেলেন। তার মার্কা বই। ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের এ বাসিন্দার পুরো এলাকা জুড়েই ব্যানার-পোস্টার রয়েছে। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী রীনা বাসার। তার মার্কা আনারস। এলাকায় তার ব্যানার-পোস্টার তেমন একটা দেখা যায়নি। গত শুক্রবার তেজগাঁও দিপিকার মোড়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গেলে রীনা বাসারের উপর হামলা করা হয়। এ সময় তিনিসহ কয়েকজন আহত হন বলে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।


আরো সংবাদ



premium cement