২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে আ’লীগ সুবিধাজনক অবস্থায় বিএনপি ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড

-

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বেকায়দায় রয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের তিনজনের পাশাপাশি জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থী রয়েছেন। এ ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে বিরোধী দল বিএনপি। তাদের মাত্র একজন প্রার্থী রয়েছেন। ফলে সুষ্ঠু ভোট হলে ওয়ার্ডটির কাউন্সিলর পরিবর্তন হওয়ার আশা দেখছেন এলাকাবাসী।
রাজধানীর মিরেরটেক, মিরবাগ, মধুবাগ, উত্তর নয়াটোলা দ্বিতীয় ভাগ, পূর্ব নয়াটোলা, দক্ষিণ নয়াটোলা, মগবাজার ওয়ারলেস কলোনি নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ এর আওতাভুক্ত এ ওয়ার্ডে হোল্ডিং রয়েছে দুই হাজার ২২৫টি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর প্রকৌশলী তৈমুর রেজা খোকন। তার মার্কা ঘুড়ি। এলাকায় তার ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে। পুরো ওয়ার্ডজুড়ে তার প্রায় ১০টির মতো ক্যাম্প অফিস রয়েছে। এ ছাড়া লিফলেট-মাইকিংয়ের মাধ্যমে তার নিয়মিত প্রচার চলছে। তৈমুর রেজা খোকন নয়া দিগন্তকে বলেন, নির্বাচনী প্রচারের কাজ ভালোই চলছে। আশা করছি আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীর পাশাপাশি আমিও বিজয়ী হবো। তিনি বলেন, আমি গতবার কাউন্সিলর হিসেবে বেশ কিছু কাজ করেছি। আরো যেসব কাজ বাকি রয়েছে এবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে সেগুলো বাস্তবায়ন করতে চাই। এলাকাকে জলাবদ্ধতা ও দুর্গন্ধমুক্ত করতে চায়। মধুবাগ খেলার মাঠ আধুনিকায়ন, বাচ্চাদের জন্য আলাদা খেলার জোন, একটি ভালো কাঁচাবাজার গড়ে তুলতে চাই। এ ছাড়া ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে চান এ প্রার্থী। এ ওয়ার্ডে মো: ইসলাম চৌধুরী আজাদ নামে আওয়ামী লীগের একজন বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক। তার মার্কা ঠেলাগাড়ি।
আজাদ নয়া দিগন্তকে বলেন, তৈমুর রেজা খোকন একজন বিএনপির লোক। আওয়ামী লীগের কোনো পদে তিনি নেই। তাকে কেন মনোনয়ন দেয়া হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়। তিনি এলাকায় তেমন কোনো উন্নয়ন করতে পারেননি। এজন্য আমি প্রার্থী হয়েছি। আশা করি আওয়ামী লীগসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। এ ওয়ার্ডে আলমগীর হোসেন নামে আরেকজন প্রার্থী রয়েছেন। তার মার্কা লাটিম। তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় কোনো পদে না থাকলেও এলাকাবাসীর কাছে তিনিও আওয়ামী লীগের লোক বলেই পরিচিত। তিনিও বর্তমান কাউন্সিলর খোকনের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারেন। আলমগীর হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই। এ ছাড়া এ ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টির নেতা হাজী নাসির উদ্দিন সরকার প্রার্থী হয়েছেন। তার মার্কা ব্যাডমিন্টন। এলাকায় তার ব্যানার-পোস্টার রয়েছে। তিনিও এলাকাবাসীর কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। ওয়ার্ডে বিএনপির একমাত্র প্রার্থী সাজেদা আলী হেলেন। তার মার্কা ঝুড়ি। এলাকায় তার পক্ষেও ব্যাপক ব্যানার-পোস্টার টাঙানো হয়েছে। তবে তার নির্বাচনী ক্যাম্প সংখ্যা হাতেগোনা। তিনি এলাকায় নিয়মিত গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করে যাচ্ছেন। এতে এলাকায় ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে এ প্রার্থী জানিয়েছেন। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, এবার বিএনপি প্রার্থীর বিপরীতে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে বিএনপি। ভোট সুষ্ঠু হলে এবার কাউন্সিলর পরিবর্তন হওয়ার আশা দেখছেন তারা। আমজাদ হোসেন নামে এক এলাকাবাসী বলেন, এ ওয়ার্ডে নি¤œবিত্ত শ্রেণীর অনেক লোক বসবাস করেন। কিন্তু বর্তমান কাউন্সিলর তাদের কোনো খোঁজ খবরই রাখেন না। জনগণও তাকে ভালোভাবে চেনে না। এ জন্য তার এবার পাস করার সম্ভাবনা খুবই কম। আরাফাত নিলয় নামে এক ব্যক্তি জানান, আমি এলাকায় ঘুরে ঘুরে দেখেছি মানুষের বর্তমান কাউন্সিলরের প্রতি ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। বিভিন্ন সেবামূলক কাজে তার অফিসে গিয়ে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোক নানা হয়রানির শিকার হয়েছেন। তবে কাউন্সিলর খোকনের নির্বাচনী প্রচারণার দায়িত্বে থাকা নাভিন আনান জানান, কাউন্সিলর এলাকার উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন। আমরা আশা করছি তিনি এবারো কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement