১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কুষ্টিয়া কারাগারের অনিয়ম তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

-

দেশের কারাগারগুলোর অভ্যন্তরে ঘটতে থাকা ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির সাথে কারাগারের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী কিভাবে জড়িত তার সচিত্র তথ্য উদঘাটনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গোপনে অনুসন্ধান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে আগেই।
ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগার, কুমিল্লা ও রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের একাধিক কারাগারে অনুসন্ধান শেষে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন পাঠিয়েছে কারা অধিদফতরে। এরই ধারাবাহিকতায় কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে অনিয়ম দুনীতিতে জড়িতদের শাস্তির সুপারিশ করে সম্প্রতি কারা অধিদফতরে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশার সাথে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার খুলনা বিভাগের যশোর কেন্দ্রীয় কারগারসহ ১০টি কারাগারের ডিআইজি প্রিজন্স মো: সগীর মিয়া নয়া দিগন্তকে বলেন, সম্ভবত গত বছরের নভেম্বর মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেন কুষ্টিয়া জেলা কারাগার সরেজমিন পরিদর্শন করেছিলেন।
কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের জেল সুপার জাকের হোসেন গতকাল মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ২০১৯ সালের ১৬ নভেম্বর তদন্ত তো করেছেন। পরের দিন এসে শুধু দেখে গেছেন। তদন্তে কি কোনো ধরনের অনিয়ম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটি পেয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে জেল সুপার বলেন, শিডিউল করে না, এমনি তিনি এসে দেখে গেছেন। উনি আসছেন অন্য একটা কাজে। তখন কারাগারটি ঘুরে দেখে গেছেন।
আপনার কারাগারে কোনো ধরনের অনিয়ম আছে নাকি জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোটামুটি আমাদের কারাগারের একটা সুনাম আছে। বন্দী সংখ্যা ৮০০-এর ওপরে থাকে। এখন নামে বেনামে তো অনেকে অভিযোগ করে থাকে। স্পেশালি কী ধরনের অভিযোগ তা তো আর আমাদের বলেননি। তদন্ত প্রতিবেদন সর্ম্পকেও এখনো কিছু পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি হচ্ছে এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব (কারা অনু বিভাগ) সৈয়দ বেলাল হোসেন গত বছরের নভেম্বর মাসে কারাগার পরিদর্শনে যান।
সূত্র মোতাবেক, কারাগারে বন্দীর সাথে স্বজনদের সাক্ষাতে অনিয়ম, খাবারের মান খারাপ, অবৈধ উপায়ে কারারক্ষীদের অনিয়মে জড়িয়ে পড়া ছাড়াও কারা অভ্যন্তরে আরো কিছু অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে তদন্তদল। এসব অনিয়মের সাথে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম-পদবি উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে কারা মহাপরিদর্শকের (আইজি প্রিজন্স) কাছে সম্প্রতি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
এ দিকে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দীর সাথে দেখা সাক্ষাতে টাকা আদায়, ভেতরে মাদক কারবার, কারা ক্যান্টিনে অনিয়ম, বন্দী বেচাকেনা, খাবারের মান খারাপসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার পর কারা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি জেলার আতিকুর রহমানকে বদলি করে নরসিংদী কারাগারে পাঠায়। অপর দিকে গোপালগঞ্জ কারাগারে জেলার হিসেবে রুবেল নামে একজন কর্মকর্তা যোগ দিয়েছেন।
এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (সেবা সুরক্ষা বিভাগ) সচিব তার দফতরে নয়া দিগন্তের এ প্রতিবেদকের কাছে বলেছিলেন, যেসব কারাগারে অনিয়ম হচ্ছে সেসব কারাগারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে গোপনে তদন্ত করা হবে। পর্যায়ক্রমে সব কারাগারেই যাবে তদন্তদল।


আরো সংবাদ



premium cement