২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সরকারের ঋণ বাড়বে : সংশয় বেসরকারি বিনিয়োগ নিয়ে

সংশোধন হলো মুদ্রানীতি
-

সরকারের ঋণগ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ পুনর্নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। তবে, এ লক্ষ্যমাত্রাও বছর শেষে বাস্তবায়ন হওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে।
গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক তার এক বছরের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতি ছয় মাসের মাথায় বড় ধরনের সংশোধন করে। জানা গেছে, আগে ছয় মাস পর পর মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হতো। কিন্তু অর্থবছরের সাথে সঙ্গতি রেখে এবার মুদ্রানীতিতে এক বছরের লক্ষ্যমাত্রা (জুলাই-জুন) নির্ধারণ করা হয়। গত জুলাই মাসে এ মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
চলতি মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু নভেম্বর শেষে তা বাস্তবায়ন হয়েছে ৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ। ডিসেম্বরেও একই অবস্থায় রয়েছে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বাড়ছে না, বরং কমে যাচ্ছে। এ কারণে সংশোধিত মুদ্রানীতিতে নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে বেসরকারি খাতের লক্ষ্যমাত্রা কমানোর পক্ষে ছিলেন। কিন্তু বাইরের সমালোচনা এড়াতে সংশোধিত মুদ্রানীতিতে তা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
এ দিকে মুদ্রানীতিতে বছর শেষে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় না হওয়ায় ব্যাংক খাত থেকে অস্বাভাবিক হারে ঋণগ্রহণ বেড়ে গেছে সরকারের। যেখানে পুরো অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি অর্থায়নে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল, সেখানে ছয় মাসেই ঋণ নেয়া হয়েছে প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ছয় মাসে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। এ কারণে সংশোধিত মুদ্রানীতিতে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ দিকে বর্তমান গভর্নর ফজলে কবির গত ৩১ জুলাই এক বছরের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। তখন বলা হয়, ২০১৯-২০ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে মোট অভ্যন্তরীণ খাতে ঋণ প্রবাহে প্রবৃদ্ধি ধরা হয় ১৫ দশমিক নয় শতাংশ। পরিবর্তিত মুদ্রানীতিতে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবাহ ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ১৭ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত করা হয়। অপর দিকে নিট অভ্যন্তরীণ সম্পদের প্রবৃদ্ধি ১৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়।
অপর দিকে নিট বৈদেশিক সম্পদ ধরা হয়েছিল ০ দশমিক ৩ শতাংশ। গতকাল তা বাড়িয়ে করা হয় ৪ দশমিক ২ শতাংশ। গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংক উল্লেখ করে, বিশ্ব উৎপাদন প্রবৃদ্ধির শ্লথ গতির কারণে বাংলাদেশের রফতানি আয় ঋণাত্মক হয়েছে। কিন্তু সেবা খাতের অবদান বেশি ও প্রবাসী আয়ের উল্লম্ফনের কারণে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপ) প্রবৃদ্ধির ঠিকই থাকবে। এ কারণে বৈদেশিক সম্পদ বাড়িয়ে ধরা হয়েছে।
মুদ্রানীতির আটটি সূচকের মধ্যে ছয়টিতেই পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ একই রাখার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশেই রাখা হয়। যদিও এটিকে চ্যালেঞ্জিং বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।


আরো সংবাদ



premium cement