২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ক্ষত শুকিয়ে জমজমাট ফ্রুটিকার প্যাভিলিয়ন

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা
-

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় এবার নিজস্ব প্যাভেলিয়নে আগুন লাগার দুঃসহ ক্ষত শুকিয়ে পুনরায় জমজমাট হয়ে উঠেছে ফ্রটিকার প্যাভেলিয়ন। দেখে বোঝার উপায় নেই, কয়েক দিন আগে ঝড় বয়ে গেছে প্যাভেলিয়নটির ওপর দিয়ে। ফ্রুটিকার বড়-ছোট বোতল, আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভাবেজ লিমিটেডের (এএফবিএল) লোগো এবং প্রচুর পরিমাণ কৃত্রিম ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন প্যাভেলিয়ন। প্রতিদিন হাজার হাজার ক্রেতা-দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখর এ প্যাভেলিয়নে ফ্রুটিকার পাশাপাশি বিক্রি করা হচ্ছে মোজো, ক্লেমন, স্পাসহ কোম্পানির অপরাপর পণ্য। পণ্যভেদে দেয়া হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ছাড়। যদিও আয়োজকরা বলছেন, বাণিজ্যমেলায় তাদের মূল্য লক্ষ্য বিক্রি নয়, প্রচার।
প্যাভিলিয়নটির বিক্রয়কর্মীরা জানান, এবার মেলা উপলক্ষে তারা প্রাকৃতিক আমের স্বাদে ফ্রুটিকা জুসসহ হরেক রকমের কোমল পানীয়ের ৯০টি পণ্যের সমন্বয়ে মোট ১৮টি প্যাকেজ এনেছেন। প্যাকেজের মূল্য ৯০ টাকা থেকে শুরু করে ২৮০ টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া প্রায় ৯০ শতাংশ পণ্যে বাজার মূল্য থেকে ছাড় দেয়া হচ্ছে। পুরস্কার হিসেবে দেয়া হচ্ছে মগ, টি-শার্ট, ব্যাট ও বল ইত্যাদি। তারা বলেন, আগুন লাগার ঘটনাটি ছিল নিছক দুর্ঘটনা। আমরা অল্প সময়ের মধ্যেই সেটি সামলে নিয়েছি। ক্ষতচিহ্ন মুছে ফ্রুটিকার প্যাভেলিয়নটি পুনরায় মেলার সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন প্যাভেলিয়নের রূপ নিয়েছে। ক্রেতা-দর্শনার্থীরা আসছেন দলে দলে। তারা জানান, বাণিজমেলায় যতটা না বেচাকেনা তার চেয়ে বেশি প্রচারের জন্য তাদের অংশগ্রহণ। প্রতি বছরই তারা মেলায় প্যাভিলিয়ন সাজানোর পাশাপাশি পণ্যে বৈচিত্র্য আনারও চেষ্টা করেন। প্যাভিলিয়ন সাজাতে এবারো তারা সে চেষ্টাই করেছেন।
আলাপকালে আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভাবেজ লিমিটেডের কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, হাতের সরাসরি স্পর্শ ও বাইরের বাতাসের মিশ্রণ থেকে মুক্ত পরিবেশে ফলের জুস ও পানীয় তৈরির পদ্ধতি চালু করেছে আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। প্রক্রিয়াজাত খাবার তৈরিতে বিশ্বের সর্বাধুনিক এই প্রযুক্তি ‘এসেপটিক পদ্ধতি’ হিসেবে পরিচিত। জার্মানির ক্রোনেস কোম্পানির এই প্রযুক্তি নেয়া হয়েছে। এখান থেকে প্রক্রিয়াজাত দুধ (ফার্ম ফ্রেশ), কার্বোনেটেড সফট ড্রিংকস (মোজো), স্ন্যাকস আইটেম, ফ্রুইট ড্রিংস (ফ্রুটিকা) ও ম্যাংগো বার উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াজাত করা হয়। তিনি বলেন, এসেপটিক পদ্ধতি হচ্ছে বিশ্বে ড্রিংকস ও অন্যান্য পানীয় তৈরির সর্বাধুনিক পদ্ধতি; যাতে হাতের স্পর্শ ছাড়াই পণ্য তৈরি ও বোতলজাত করা যায়। ফলে এতে ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য জীবাণু যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ দূর হয়ে যায়। তাই এসব পণ্য সংরক্ষণের জন্য কোনো প্রিজারভেটিভ দিতে হয় না। নিরাপদ খাবার ও ভোক্তার স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিয়ে আকিজ এ ধরনের প্রযুক্তি যুক্ত করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের বেশিরভাগ মানুষ খাদ্য ও পানীয়ের গুণাগুণ নিয়ে সন্দিহান। তাই তাদের আস্থা অর্জনের জন্য প্রিজার্ভেটিভমুক্ত এসেপটিক পদ্ধতির দিকে হেঁটেছে আকিজ গ্রুপ।
রাজধানীর আগারগাঁয়য়ে ৩২ একর জমির ওপর সাজানো হয়েছে এবারের মেলা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত পয়লা জানুয়ারি মেলা উদ্বোধন করেন। মেলার গেট সাজানো হয়েছে জাতীয় স্মৃতি সৌধের আদলে। সঙ্গে থাকছে পদ্মা সেতুর মডেল। গত বছরের তুলনায় এবার কমানো হয়েছে স্টলের সংখ্যা। গত বছর ৬৩০টি স্টলের পরিবর্তে এবার করা হয়েছে ৪৮৩টি। রয়েছে ১১২টি প্যাভেলিয়ন, ১২৮টি মিনি প্যাভেলিয়ন এবং ২৪৩টি বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টল। তবে বাড়ানো হয়েছে প্রবেশ মূল্য। মেলায় প্রবেশ টিকিটের দাম ধরা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। মাসব্যাপী এ মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এ বছর ২১টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচ্ছে। দেশগুলো হচ্ছে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইরান, তুরস্ক, মরিশাস, ভিয়েতনাম, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও অস্ট্রেলিয়া।

 


আরো সংবাদ



premium cement