১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কাউন্সিলর পদে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা

৯ নম্বর ওয়ার্ড
-

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আলোচিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচন জমে উঠেছে। ওয়ার্ডের প্রতিটি সড়ক, অলিগলি এখন পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। সকাল-সন্ধ্যা চলছে মাইকিং। প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণসংযোগ করছেন। খেলাধুলা ও ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্র এখন নির্বাচনী উৎসবের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে বিএনপির একজন প্রার্থী রয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগ থেকে একজনকে মনোনয়ন দিলেও সাবেক কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদের স্ত্রী সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। তার পক্ষেও জোরেশোরে প্রচারণা চলছে। মমিনুল হক সাঈদ নিজে, জাতীয় পার্টির একজন ও আরেকজন স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও মূলত ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে বলে এলাকাবাসী মনে করছেন।
রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মতিঝিল, বঙ্গভবন, দিলকুশা, ফকিরাপুল ও আরামবাগ এলাকা নিয়ে ঢাকা দক্ষিণের ৯ নম্বর ওয়ার্ড। ডিএসসিসির অঞ্চল-২ এর অধীনে থাকা এ ওয়ার্ডে প্রায় ২৬ হাজার ভোটার রয়েছেন। তবে দেড় লাখের মতো মানুষ ওয়ার্ডটিতে বসবাস করেন। ব্যাংক, বীমা, ক্লাব ছাড়াও প্রেস ব্যবসার জন্য পরিচিত এ এলাকা। সম্প্রতি ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে এ ওয়ার্ডের নাম বিশেষভাবে উঠে আসে। নির্বাচনকে সামনে রেখে ওয়ার্ডের বিভিন্ন সড়কে গেলে এখন শুধুই ব্যানার, পোস্টার চোখে পড়বে। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার শোভা পাচ্ছে সর্বত্র। এ ওয়ার্ডে এবার কাউন্সিলর পদে বিএনপি থেকে প্রার্থী হয়েছেন মো: আনোয়ার হোসেন আনু। যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন তিনি। বর্তমানে ওয়ার্ড বিএনপির ১ নম্বর সদস্য। গত নির্বাচনেও তিনিই এ ওয়ার্ডে বিএনপির প্রার্থী হয়েছিলেন। এবার তার মার্কা ‘রেডিও’। প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই তিনি এলাকায় গণসংযোগ করে চলেছেন। কালভার্ট রোডে তার নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে দেখা যায় নেতাকর্মীদের ভিড়। নির্বাচনে জয়ের আশা নিয়েই প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। আনোয়ার হোসেন আনু নয়া দিগন্তকে বলেন, নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। একটি মডেল কমিউনিটি সেন্টার করা হবে, যেখানে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে। এ ছাড়া সন্ত্রাস, মাদক নির্মূলেও উদ্যোগ নেয়া হবে। এলাকার রাস্তা-ড্রেন আধুনিকায়ন করা, মশকনিধন কার্যক্রমের গতি বাড়ানো, পরিচ্ছন্নতা কাজের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করাসহ এলাকার মুরব্বিদের সম্মান দেয়ার রীতি ফিরিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে চাই। নির্বাচনের পরিবেশ সম্পর্কে তিনি বলেন, গত নির্বাচনে ভোট কেটে নেয়া হয়েছে। এজন্য জনগণ তাদের ভোট দিতে পারেনি। এবার এখনো পরিবেশ ভালো আছে। প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারছি। জনগণ যদি ভোট দেয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ পায় তাহলে আমি বিজয়ী হওয়ার আশা করছি।
এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: মোজাম্মেল হক। তিনি প্রতীক পেয়েছেন ‘ঘুড়ি’। কালভার্ট রোডসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ক্যাম্প বসিয়ে তার নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। মোজাম্মেল হক নয়া দিগন্তকে বলেন, এলাকায় গণসংযোগকালে ভোটারদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমি নির্বাচিত হলে প্রথম চেষ্টা থাকবে সব বিপদে আপদে এলাকাবাসীর পাশে থাকা। এ ছাড়া যেসব সমস্যা থাকবে সেগুলো এলাকার মুরব্বিদের সাথে পরামর্শ করে সমাধানের চেষ্টা করব। তিনি বলেন, আগে বাবা-দাদার আমলে এলাকার অনেক সুনাম ছিল। সবাই মুরব্বিদের সম্মান করত। আমি নির্বাচিত হলে মুরব্বিদের সম্মান দেয়ার রীতি ফিরিয়ে আনতে চাই। এলাকায় সব প্রার্থী বিনা বাধায় উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচার করতে পারছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে কোনো গোলযোগ দেখতে চাই না। আমরা নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর সম্মান রাখতে চাই।
এ ওয়ার্ডে গতবার কাউন্সিলর ছিলেন দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক মমিনুল হক সাঈদ। দলে না থাকায় এবার তিনি মনোনয়ন পাননি। এরপরও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তিনি ‘লাটিম’ প্রতীক পেয়েছেন। তবে তিনি বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তার পক্ষে এলাকায় কোনো ব্যানার-পোস্টারও টাঙাতে দেখা যায়নি। তবে একই ওয়ার্ডে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে তার স্ত্রী ফারহানা আহম্মেদ বৈশাখী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তার মার্কা ‘ঠেলাগাড়ি’। তার পক্ষে এলাকায় ব্যাপক পোস্টারিং করা হয়েছে। এ ছাড়া এলাকাজুড়ে শোভা পাচ্ছে ব্যানার, ফেস্টুন। নয়া দিগন্তকে তিনি জানান, আমার স্বামী গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন। তিনি এলাকার উন্নয়নে অবদান রেখেছেন। তার সাথে থেকে আমিও এলাকার মানুষের সেবা করেছি। এবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে জনগণকে আরো বেশি সেবা করতে চাই। আশা করি এলাকার মানুষ আমাকে বিমুখ করবেন না।
এ ছাড়া এ ওয়ার্ডে জাতীয় পার্টি থেকে মোহাম্মদ শওকত আলী ভুঁঞা ‘টিফিন ক্যারিয়ার’ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আসলাম আহমেদ (মানিক আসলাম) ‘র্যাকেট’ মার্কায় নির্বাচন করছেন।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে বিএনপির একজন মাত্র প্রার্থী রয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগ থেকে একজনকে প্রার্থী দিলেও সাবেক কাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদের স্ত্রী বৈশাখী সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন। মমিনুল হক সাঈদ এবং তার স্ত্রী বর্তমানে আওয়ামী লীগ বা যুবলীগের কোনো পদে না থাকলেও তাদের অনেক কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাক্সক্ষী রয়েছেন। এ কারণে এ ওয়ার্ডে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিকে এ ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর (৮-৯-১০ নম্বর ওয়ার্ড) পদে বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন রুমা আক্তার। তার মার্কা ‘আনারস’। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিনু রহমান। তিনি ‘গ্লাস’ মার্কায় নির্বাচন করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরের গণপিটুনিতে নিহত ২ নির্মাণশ্রমিক জাতিসঙ্ঘে ফিলিস্তিনি সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান

সকল