২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাড়তি ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা চান সড়ক পরিবহনমন্ত্রী

প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা ; সমাপ্তিযোগ্য প্রকল্পের সংখ্যা ৫২টি
-

বরাদ্দের পরও অর্থবছরের বাকি সময়ের জন্য একটি প্রকল্পে অতিরিক্ত প্রায় ২ হাজার ২ শ’ কোটি টাকাসহ মোট ৩ হাজার ৯৮ কোটি টাকা চেয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে চিঠি দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বাড়তি বরাদ্দ না পেলে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত ও গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসহ পরিকল্পনা অনুযায়ী সঠিক সময়ের মধ্যে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। ওই চিঠিতে বরাদ্দের জন্য পরিকল্পনামন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে গত ৮ জানুয়ারি ব্যক্তিগত প্যাডে এই চিঠিটি দেন সেতুমন্ত্রী। তিনি তার চিঠিতে বলেছেন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় বাস্তবায়নাধীন ১৬টি মেগা, ২০টি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ, ৫২টি সমাপ্তিযোগ্য এবং অন্যান্য চলমান প্রকল্পসহ মোট ১৬৪টি প্রকল্প বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) রয়েছে। আর এগুলোর জন্য চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৫ হাজার ১৬৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। যার মধ্যে জিওবির ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা ৯ হাজার ৬১২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আর এডিপিতে অননুমোদিত নতুন প্রকল্পের জন্য থোক বরাদ্দ ৬২৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। যার মধ্যে জিওবি ৩ শ’ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৩২৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। সেতুমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে জিওবি খাতে ৩ শ’ কোটি টাকাই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নতুন কয়েকটি প্রকল্পের জন্য আরো অর্থের প্রয়োজন হবে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা অংশে যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করা প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত এবং জনগুরুত্বপূর্ণ, যা হবে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। প্রকল্পটি চার হাজার ১১১ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় গৃহীত হয়। আগামী জুনে এই প্রকল্পটি সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত রয়েছে। গত জুন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে এক হাজার ১২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। চলতি অর্থবছরে ৯ শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের অনুকূলে আরো ২ হাজার ১৯৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা দরকার। মন্ত্রণালয়ের থোক বরাদ্দে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় এ প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হবে না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এ এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের জন্য কার্যক্রম চলমান আছে। প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করার জন্য চলতি অর্থবছরে প্রাপ্ত বরাদ্দের অতিরিক্ত ২ হাজার ১৯৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকাসহ মোট ৩ হাজার ৯৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। অন্যথায় পরিকল্পনা অনুযায়ী সঠিক সময়ে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান সেতু মন্ত্রী।
এ দিকে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এডিবির সর্বশেষ বাস্তবায়ন তথ্য থেকে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এডিপির সার্বিক বাস্তবায়ন হার ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। সেখানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এডিপির বাস্তবায়ন হার ২৮ দশমিক ৭১ শতাংশ। ২৪ হাজার ৫৪০ কোটি ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দের মধ্যে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৪৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এই মন্ত্রণালয়ের এডিপিতে এবার ১৬১৪টি প্রকল্প রয়েছে। জিওবি টাকা ব্যয় করেছে ৫ হাজার ১৬০ কোটি টাকা বা জিওবির ৩৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তবে প্রকল্প সহায়তা ব্যবহার করতে পেরেছে মাত্র ১ হাজার ৮৮৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা বা ২০ শতাংশের কিছু বেশি।

 


আরো সংবাদ



premium cement