২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যারা জনগণকে মৌলিক অধিকার বঞ্চিত করছে তারা ডাকাত : ড. কামাল

বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন ড. কামাল হোসেন : নয়া দিগন্ত -

মৌলিক অধিকার থেকে যারা জনগণকে বঞ্চিত করছে তারা ডাকাত বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের এক আলোচনায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের উদ্যোগে ‘মানবাধিকার পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান মো: নুরুল হুদা মিলু চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং নির্বাহী পরিচালক তালুকদার মনিরুজ্জামান মুনির সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, সাবেক সচিব এ এইচ এম মোফাজ্জল করীম, ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন, আবুল কাশেম চৌধুরী, ফরিদ আহমেদ, গণদলের গোলাম মাওলা চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাথেন।
ড. কামাল বলেন, আইনের শাসন থেকে যদি আমাকে বঞ্চিত করা হয়, সংবিধান যে আশ্রয় দিয়েছে সেটা থেকে বঞ্চিত করা হয়, মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়Ñ এরা অপরাধী। মানে ডাকাত। ভোট ডাকাতের চেয়ে বড় ডাকাত হতে পারে না। মৌলিক অধিকার থেকে আমাকে বঞ্চিত করে, ডাকাতি করে এর চাইতে বড় ডাকাত হতে পারে না। এদেরকে ডাকাত হিসেবে চিহ্নিত করেন।
ক্ষোভের সাথে ড. কামাল হোসেন বলেন, হ্যাঁ আমি ডাকাত বলেছি- কী আছে? আমি বলেছি, কেউ যদি মনে করে আমাকে তুলে নিতে পারে। করুক। আমাদের তো সেই ৭০ বছরের অভিজ্ঞতা- যারা এই ধরনের অহঙ্কার করে আমাদের শক্তি আছে, অস্ত্র আছে, অর্থ আছে বলে আমরা চিরস্থায়ী হবো।
তিনি বলেন, জনগণের অধিকারের ব্যাপারে তোমরা পুরোপুরি শ্রদ্ধাশীল হও, সংবিধান মেনে চলো। ঠিক আছে মানুষ তোমাকে ভোট দেবে সরকারে থাকার জন্য, যে স্বাদ পেয়েছো সেটা আরো কিছু দিন পেতে পারো। কিন্তু এখানে যেসব একসুরে সবাই কথা বলছেন- আমরা সবাই বঞ্চিত, আমাদের যেটা পাওয়ার কথা, সেটা পাচ্ছি না। এই ধরনের কেউ থাকতে পারে নাই, এখনো থাকতে পারার কথা না।
জনগণকে ক্ষমতার মালিক উল্লেখ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যেসব অধিকার পেয়েছি, শহীদরা যেটা দিয়ে গেছেÑ সেটা অবশ্যই আমরা ভোগ করব। কেউ আমাদেরকে বঞ্চিত করার অধিকার রাখে না। যদি করে তাহলে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদেরকে শায়েস্তা করব এবং আমাদের অধিকার আমরা অবশ্যই ভোগ করব।
সংবিধানে লেখা মানবাধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরে ড. কামাল বলেন, আপনারা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে এই ধরনের মিটিং করেন। ভয়-ভীতির ব্যাপার না। ভয়-ভীতি যারা সৃষ্টি করে সেটা আমি শুনি ওদের কিছু কিছু জায়গায় লাঠিয়ালগুলো যারা আছে, অস্ত্রধারী যারা আছে তারা ভয়ভীতি সৃষ্টি করে। ১৯৪৭ থেকে এখন পর্যন্ত ইতিহাস যদি দেখেন- স্বৈরাচাররা চিরস্থায়ী হতে পারে নাই, তাদের পরাজিত হতে হয়েছে, শেষ পর্যন্ত স্বৈরাচার মানুষের কাছে ধিকৃত হয়ে তাদের শাস্তি হয়েছে। অর্থাৎ আমাদেরকে এসব ব্যাপারে কোনো রকমের আশঙ্কা করা উচিত নয় যে, আমরা সব কিছু হারিয়ে ফেলেছি, আমরা হারিয়ে ফেলিনি।
ড. কামাল বলেন, এই বিজয়ের মাসে আমি একজন বিজয়ী হিসেবে নিজেকে চিহ্নিত করি। আমি একজন বিজয়ী জাতির সদস্য, আপনারা সবাই সদস্য। বিজয়ী জাতির বিজয়ের যে অর্জন ছিল সেটা রক্ষা করা আমাদের শুধু অধিকার সেটা আমাদের কর্তব্যও। পাড়া-মহল্লা-গ্রামে মানবাধিকার রক্ষায় সবাইকে ছড়িয়ে পড়ার আহবান জানান ড. কামাল হোসেন।


আরো সংবাদ



premium cement