১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ছোট্ট শিশুকে গৃহকর্মীর নির্মম নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল

-

‘এক নারী বাথরুম থেকে একটি শিশুকে ঘরের ভেতর ছুড়ে ফেলে দেন। এরপর শিশুটিকে টানা কয়েক দফা লাথি মারতে থাকেন ওই নারী।’ সিসি ক্যামেরার ভিডিওফুটেজে ধরা পড়ে এই চিত্র। ছোট্ট শিশুর প্রতি এমন নির্মম আচরণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করে তীব্র সমালোচনা করছেন অনেকেই। গত ১৪ নভেম্বর রাজধানীর শাজাহানপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ভিডিওচিত্রে নির্যাতকের ভূমিকায় থাকা ওই নারী তাদের গৃহকর্মী।
শাহজাহানপুর এলাকার বাসিন্দা মো: আল আমিন সরকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। শিশুটির মা লুৎফুন্নাহার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। এ দম্পতির একমাত্র শিশু আবদুল্লাহ আবতাই আয়াতের বয়স মাত্র দুই বছর। স্বামী-স্ত্রী দু’জনই চাকরিজীবী হওয়ায় শিশুসন্তান আয়াতকে বাসায় গৃহকর্মী শাহিদা তাজনারার (৪৫) কাছে রেখে যেতেন।
শিশুটির বাবা আল আমিন সরকার সাংবাদিকদের বলেন, বাবুকে মারধরের বিষয়ে কোনোভাবে আমার স্ত্রীর সন্দেহ হওয়ায় বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর কথা বলে। সে অনুযায়ী গত ৮ নভেম্বর আমি বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসাই। কিন্তু বিষয়টি আমরা গৃহকর্মী শাহিদাকে বুঝতে দেইনি। ক্যামেরা বসানোর পাঁচ দিনে যা ধরা পড়েছে, সেগুলো তেমন কিছু না। কিন্তু ১৪ নভেম্বর আমি অফিসে বসে বাসার ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করছিলাম। আইপি ক্যামেরা হওয়ায় স্মার্টফোনেই লাইভ দেখা যেত। সে দিনই অফিসে বসে গৃহকর্মীর হাতে শিশুকে ভয়ঙ্কর এ মারধরের ঘটনা চোখে পড়ে।
আল আমিন আরো বলেন, আমি একজন অসহায় বাবা, যাকে দেখতে হয়েছে দুই বছরের সন্তানকে বীভৎস মারধরের দৃশ্য! এই নির্যাতনের দৃশ্য দেখেও কিছু করতে না পারার আক্ষেপে পুড়ছি আমি। শিশুটা ভয়ে এতটাই ভীত হয়ে পড়েছিল যে, ‘বাবা’ বলতেও যেন ভুলেই গিয়েছিল!
ঘটনার পরদিন গত ১৫ নভেম্বর রাতে শাহজাহানপুর থানায় শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন আল আমিন সরকার। পরে অভিযুক্ত গৃহকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের সবুজবাগ জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) রাশেদ হাসান সাংবাদিকদের জানান, গৃহকর্মীর দ্বারা শিশু নির্যাতনের ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজে মারধরের চিত্র পাওয়ার পর পরিবার মামলা করে। সে দিনই গৃহকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
এ দিকে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। রেশমা শারমিন নামের এক নারী লিখেছেন, ‘ওহ আল্লাহ, দয়া করে আমাদের শিশুদের রক্ষা করো।’ আবদুল্লাহ আল রোমান লিখেছেন, ‘সরকারি অফিস হোক কিংবা বেসরকারি সবখানেই একটি বেবি কেয়ার ইউনিট রাখা উচিত।’ ফুল মিয়া নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই। আমার মনে হয় এই নারীর কোনো ছেলে নাই। এই নারী মানুষ নামের জা...।’ জহিরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।’


আরো সংবাদ



premium cement