১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রংপুরে আ’লীগ ও জাতীয় পার্টির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন মুখোমুখি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়ার অভিযোগ

-

রংপুর মহানগর জাতীয় যুব সংহতির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির মিছিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে কথিত স্লোগান দেয়ার অভিযোগে গতকাল তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে রংপুরে। বিষয়টি নিয়ে এখন মুখোমুখি অবস্থানে জাতীয় যুব সংহতি ও যুবলীগ। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় থানায় জিডি করেছে ছাত্রলীগ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে করে ৬ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে যুবলীগম, ছাত্রলীগ ও মহিলা যুবলীগ। আর এই প্রচারণাকে মিথ্যা দাবি করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মহানগর জাতীয় যুব সংহতি।
রংপুর কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান রনির করা জিডিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টা থেকে পৌনে ৭টার মধ্যে জাতীয় পার্টির অঙ্গসংগঠন যুব সংহতির একটি মিছিল দলীয় কার্যালয় থেকে স্থানীয় প্রেস ক্লাব এবং সেখান থেকে আবারো দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলটি বিভিন্ন জায়গা প্রদক্ষিণের সময় নেতাকর্মীরা তাদের নিজদলীয় এমপি কাজী ফিরোজ রশিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বিভিন্ন স্লাগান দেন, যা বঙ্গবন্ধু পরিবারের মানহানি বলে আমি ও আমার সংগঠন মনে করি।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রশিদ জানান, এ-সংক্রান্ত জিডির বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ দিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে রংপুরে এখন মুখোমুখি আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন। শুক্রবার বিকেলে এ ঘটনার প্রতিবাদে নগরীতে বিক্ষোভ করেছে মহানগর ও জেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা যুবলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। এরমধ্যে মহিলা লীগ ঝাড়–মিছিল বের করে। মহানগর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো মিছিল বের করে নগরীর বেতপট্টিস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে। আর জেলা অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো মিছিল বের করে নগরীর চাউল আমোদ রোডের ছাত্রলীগ কার্যালয় থেকে। জেলার মিছিলটি নগরীর সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে ঘুরে জাহাজ কোম্পানী মোড়ে সমাবেশ করে। সেখানে ৬ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের আলটিমেটাম দিয়ে বক্তৃতা করেন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি। অন্য দিকে মহানগর কমিটির মিছিলগুলো বেতপট্টি থেকে শাপলা চত্বর হয়ে দলীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশে বক্তৃতা করেনÑ মহানগর যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন ও ছাত্রলীগ সভাপতি স্বাধীন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হলে লাগাতার অবরোধ দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয় উভয় সমাবেশ থেকে।
অন্য দিকে মহানগর জাতীয় যুব সংহতি সংবাদ সম্মেলন করে এ ধরনের অভিযোগকে বিকৃত ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা বলে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সন্ধ্যায় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মহানগর জাতীয় পার্টির সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক শাহীন হোসেন জাকির বলেন, রংপুর মহানগর যুব সংহতির সুস্পষ্ট বক্তব্য হলোÑ জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের সাথে জাতীয় পার্টি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন মহাজোটবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে ভূমিকা পালন করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় রংপুর মহানগর জাতীয় যুব সংহতির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে প্রেস ক্লাবে ঘুরে আবারো দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিলের ফাঁকে প্রেস ক্লাব চত্বরে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গার বিরুদ্ধে কাজী ফিরোজ রশিদের আপত্তিকর বক্তব্যের জন্য তার কুশপুত্তলিকা দাহ করেন নেতাকর্মীরা; কিন্তু ওই মিছিল ও কর্মসূচি নিয়ে একটি চিহ্নিত চক্রের মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে স্লোগান দেয়ার বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো হয়। এ বিষয়ে রংপুর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়েছে আমাদের বন্ধুপ্রতিম ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জেলা কমিটির পক্ষ থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে শাহীন হোসেন জাকির আরো বলেন, জাতীয় যুব সংহতির ওই মিছিল থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে কোনো ধরনের স্লেøাগান প্রদান করা হয়নি। এ ধরনের স্লেøাগান দেয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেয়ায় দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ এমপির বিরুদ্ধে রংপুর মহানগরীতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিক্ষোভ মিছিল ও তার কুশপুত্তলিকা দাহ করে মহানগর জাতীয় যুব সংহতি।


আরো সংবাদ



premium cement