আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়া রাজনৈতিক দল : মির্জা ফখরুল

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ঘর সামাল দিতে পারছে না মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখন তাদের ‘দেউলিয়াত্বের’ কারণে আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে আসার অবস্থা তৈরি হয়েছে। ‘আরো নেতা বিএনপি ছাড়বে’ তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এরকম বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গতকাল বুধবার সকালে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তথ্যমন্ত্রী প্রায়ই এ ধরনের কথাবার্তা বলেন, সেগুলো তার কিছুটা সৃজনশীলতার আভাস পাওয়া যায় আর কী। বেশ নতুন নতুন গল্প তৈরি করেন তিনি। তথ্যমন্ত্রীর যে সরকার আছে তারা গোয়েবেলসীয় প্রচারের মধ্য দিয়ে সরকারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যাওয়ার মতো অবস্থা এখন নেই। বরং আওয়ামী লীগ থেকেই বিএনপিতে আসার অবস্থা তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন প্রমাণ করেছে যে, তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে দেউলিয়া রাজনৈতিক দল।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির নির্বাচিত কমিটির সভাপতি আবুল কালাম ও সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামালের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে মির্জা ফখরুল গতকাল সকালে শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সাথে এসব কথা বলেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শহিদুল ইসলাম বাবুল, ওলামা দলের শাহ মো: নেসারুল হক, মহানগর বিএনপির জাকির হোসেন, নুরুল ইসলাম সরদার, হাজী নুরু উদ্দিন, ফখরুল ইসলাম মজনু, আয়সা সাত্তার, রফিত আহম্মেদ, আবদুস সবুর খান সেন্টু, আওলাদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খানের পদত্যাগ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির সিনিয়র নেতা পদত্যাগ করছেনÑ এটা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারছি। আমি এখনো জানি না। ‘লন্ডন থেকে তারেক রহমান দল চালাচ্ছেন বলেই নেতারা চলে যাচ্ছেন’ তথ্যমন্ত্রীর এ বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের কথা বলতে তারা অভ্যস্ত। তারা নিজেদেরই ঘর সামাল দিতে পারছে না। প্রতিদিন তাদের যুবলীগের সম্মেলনে, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনে মিটিংয়ের মধ্যে তারা পরস্পর মারামারি করছেন, ভাঙাভাঙি করছেন এটা আমরা প্রতিদিন পত্রিকায় দেখতে পারছি। তাদের যে পতন সেটাকে তারা ঢেকে রাখার জন্য তারা অহেতুক মিথ্যা কথা বলছে।
‘রাঙ্গা জনগণকে অপমান করেছে’ : মির্জা ফখরুল বলেন, অতি দুঃখের সাথে বলতে হয়, যে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনা নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম, পরবর্তীকালে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি, সেই স্বৈরাচারকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছিল এবং ভোট ডাকাতির সহযোগী হিসেবে তাদেরকে সংসদে নিয়ে এসেছে। তাদেরই মহাসচিব সেই গণতন্ত্রকে অত্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে গত কয়েক দিন আগে আক্রমণ করেছেন আমাদের প্রিয় শহীদ নূর হোসেনকে। যিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে কিছু কথা বলেছেন যে কথাগুলো সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত, গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে পুরোপুরিভাবে অপমান করা, বাংলাদেশের মানুষকে, জনগণকে অপমান করা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছি। আমরা মনে করি, এটা প্রকাশ্যে ও পার্লামেন্টে সব জায়গায় তার ক্ষমা চাওয়া উচিত এই কথাগুলো বলার জন্য। খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে এই আন্দোলনকে আরো বেগবান করবো, আরো তীব্র করব।