২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রাথমিকের শিক্ষকদের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে গতকাল শিক্ষকদের পূর্ণ দিবস কর্ম বিরতির কারণে শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঘুমিয়ে পড়ে :নয়া দিগন্ত -

বেতন বৈষম্য নিরসন তথা প্রধান শিক্ষকদের পরের ধাপে সহকারী শিক্ষকদের বেতন (জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম ও ১০ম গ্রেডে) নির্ধারণের দাবিতে গতকাল দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন। তারা বিদ্যালয়ে হাজির হলেও নিয়মিত ক্লাসে অংশ নেননি।
এ দিকে, প্রাথমিক শিক্ষকদের ১৪টি সংগঠন নিয়ে গঠিত মোর্চা ‘বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ’ আজ শুক্রবার ঢাকায় কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডেকেছে। বৈঠকে কর্মবিরতি পরিস্থিতি পর্যালোচনাসহ ডিপিইর সর্বশেষ আদেশ নিয়ে কথা হবে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতারা। তারা জানান, ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সরকারকে আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। এর মধ্যেই সরকার দাবি মেনে নিলে ২৩ তারিখের মহাসমাবেশ হবে না। অন্যথায় যেকোনো মূল্যে মহাসমাবেশ সফল করা হবে। শিক্ষক নেতা ও পরিষদের প্রধান মুখপাত্র বদরুল আলম বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা করছি। প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড বাস্তবায়ন ছাড়া কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হবে না। দাবির প্রতি শতভাগ সমর্থন জানিয়ে সব শিক্ষকই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। শিক্ষকদের মধ্যে কোনো বিভেদ নেই।
এ দিকে, অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, শিক্ষকরা পাঠদানে বিরত থাকার কারণে বিশেষ করে প্রাথমিক সমাপনীর শিক্ষার্থীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া বছরের শেষের দিকে ক্লাস না হওয়ায় সব শ্রেণীর শিক্ষার্থীই ক্ষতির মুখে পড়েছে।
জেলা ও উপজেলায় শিক্ষা অফিসার ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা গতকাল কোথাও শিক্ষকদের হুমকি বা ক্লাসে অংশ নিতে বাধ্য করেছেনÑ এমন অভিযোগ শোনা যায়নি। তবে, বিভিন্ন উপজেলায় সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন বলে জানা গেছে। এ দিকে, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা শিক্ষক নেতাদের কাছ থেকে বিদ্যালয়প্রতি একজন করে শিক্ষকের নাম দিতে বলেছেন বলে জানান শিক্ষক নেতারা। এর জবাবে তারা বলেছেন, সব শিক্ষকের নাম নিয়ে যান। সব শিক্ষকই কর্মবিরতিতে অংশ নিয়েছেন। কেউ বাদ যাননি এবং কেউ কর্মবিরতির বিরোধিতাও করেননি।
শেষ দিনে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন শেষে প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান বলেন, সব শিক্ষক এতে অংশ নিয়েছেন। ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সময় আছে। আমরা দাবির বাস্তবায়ন চাই। ঐক্য পরিষদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, সব বিদ্যালয়ে কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে দাবির ন্যায্যতা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ চাই। তিনিই পারেন আমাদের দাবি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে। কারণ তার নির্দেশেই সহকারী শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবি নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইসলাম তোতা বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষকদের কর্মসূচি পালনে বাধ্য করেছে। আমরা শিক্ষার্থীদের জিম্মি করতে চাই না। তাই ২৩ অক্টোবরের আগেই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা চাই। প্রধান সমন্বয়ক আতিকুর রহমান বলেন, ২৩ অক্টোবর মহাসমাবেশ থেকে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব। নীতিনির্ধারণী চেয়ারম্যান আব্দুল্যাহ সরকার বলেন, দাবি বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ শতভাগ আন্তরিক হোক এটাই চাই। তা না হলে আসন্ন প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা হুমকির মুখে পড়বে।
প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম বলেন, ২৩ অক্টোবর চার লাখ শিক্ষকই ঢাকায় উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার অপেক্ষায় থাকবেন। ঐক্য পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজীউল হক, ছিদ্দিকুর রহমান, সাবেরা বেগম, শিবাজী বিশ্বাস, আবদুস সবুর, আবদুল হক, ইউএস খালেদা, আবদুল খালেক, মোজাম্মেল হক, রোজেল সাজু প্রমুখ কর্মবিরতি পালনের জন্য শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানান এবং ২৩ অক্টোবর ঢাকায় উপস্থিত হওয়ার আহবান জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement