১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পরিকল্পনামন্ত্রীর আক্ষেপ

প্রচুর অন্যায় এ দেশে গেড়ে বসে আছে

-

প্রচুর অন্যায় এ দেশে গেড়ে বসে আছে বলে আক্ষেপ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, আমরা আইনের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত দারিদ্র্য তৈরি করছি। অন্যায়গুলো দূর না করা পর্যন্ত দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করতে হবে। তাই দারিদ্র্য পুরোপুরি শেষ হচ্ছে না।
আগারগাঁওয়ের পরিসংখ্যান ব্যুরোর অডিটোরিয়ামে গতকাল ব্যুরো আয়োজিত এসডিজি নিয়ে আন্তর্জাতিক সূচকবিষয়ক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। পরিসংখ্যান সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো: নজিবুর রহমান, এসডিজি বিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতিবিষয়ক সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি, বিবিএস ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক তাজুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিবিএসের উপসচিব ড. দীপঙ্কর রায় এবং এটিআই প্রকল্পের হেড অব ডাটা ম্যানেজমেন্ট রমিজ উদ্দিন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারি খাস জমি, খাল, ইজারাদারদের হাতে তুলে দিচ্ছি। গ্রামগঞ্জে খাল-বিল থাকে। সেখানে অল্প কিছু মাছ থাকে। গরিব মানুষগুলো মাছ ধরে খায়। সেটাকে পর্যন্ত আমরা রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে ইজারাদারদের হাতে তুলে দিই। প্রতি বছর ইজারা দিয়ে সামান্য কয়টা টাকা পায় সরকার। অথচ গ্রামের দরিদ্র মানুষগুলোকে আমরা বঞ্চিত করছি, তারা জাল নিয়ে বেরিয়ে দুটো মাছ খেতে পারে না।
উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বাড়ির কাছে বন আছে, সেখান থেকে দুটো কাঠ-পাতা আনবে গরিব মানুষগুলো, সেটাও তারা আনতে পারে না। সেখানে বন্দুকধারী ব্যক্তিরা আছে, তারা পাহারা দেয়। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক যেসব ইনডেক্স প্রকাশ হয় সেগুলোর বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কত বিজ্ঞানী কত কিছু বের করেন, তারা এটি করে খায়। তারা জানে তাদের সব ইনডেস্কে আমাদের মতো দেশগুলো পেছনে থাকবে আর তারা উপরে থাকবে। তারপরও তারা এসব ইনডেক্স করেই যাচ্ছে। এর মাধ্যমে হতাশা ছড়ানোর চেষ্টা থাকে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত কিছু অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করছে বেশ কিছু গণমাধ্যমে। বিবিএসের জরিপ/গবেষণায় সচিবের ঘন ঘন বিদেশ সফরসহ ধারাবাহিক প্রতিবেদন করছে একটি সংবাদপত্র। এ বিষয়ে এম এ মান্নান বলেন, বিবিএস সচিব এখানে উপস্থিত আছেন। অনেক তথ্য বেরিয়েছে কাগজের প্রথম পাতায়। যে বিষয়গুলো আসছে, সেগুলো আমার ঘরেও আছে কি না, তা দেখা প্রয়োজন। এগুলোকে উড়িয়ে দেয়ার বিষয় নয়। আবার এমন কিছু আছে, দৃশ্যত সঠিক নয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক সূচকগুলো এমন একটি প্ল্যাটফরম যার মাধ্যমে বাংলাদেশের সেক্টরভিত্তিক বিভিন্ন উন্নয়নকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করে বাংলাদেশের শক্তিশালী অবস্থা সবার সামনে তুলে ধরা যায়। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করতে সক্ষম হবো। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা যেমন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, ভিশন-২০২১, নির্বাচনী ইশতেহার, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির ধারাবাহিকতা উপস্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে টেকসই অবস্থান নিশ্চিত করবে। বাংলাদেশ ২০১৮ সালে ই-গভর্নমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সে ১১৫তম অবস্থান নিশ্চিত করতে পেরেছে, ২০১৪ সালে যেখানে এ অবস্থান ছিল ১৪৮-এ। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সূচকে সম্মানজনক ও শক্তিশালী অবস্থান নিশ্চিত করার বিষয়টিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হিসেবে নিয়েছে।
অনুষ্ঠানে ২৩টি ইনডেক্স নিয়ে আলোচনা হয়। সেগুলো হলো হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স, গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স, হিউম্যান ক্যাপিটাল, আইসিটি ডেভেলপমেন্ট, গ্লোবাল ফাইন্ডডেক্স, লজিস্টিক পারফরম্যান্স, ই-কমার্স ইনডেক্স, ই-গভর্নমেন্ট ডেভেলপমেন্ট, গ্লোবাল সাইবার সিকিউরিটি, হিউম্যান অ্যাসার্ট, জেন্ডার ইনইক্যুয়ালিটি, ইজ অব ডুয়িং বিজনেস, ওপেন ডাটা, নেটওয়ার্কে রেডিয়েন্স, গ্লোবাল ইনোভেশন, এসডিজিস ইনডেক্স, ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস, ই-পার্টিসিপিয়েন্স ইনডেক্স, গ্লোবাল কানেকটিভিটি করাপশন পারসিফেশন, গ্লোবাল পিস, ট্র্যাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কমপিটিটিভনেস অ্যান্ড গ্লোবাল কমপিটিটিভনেস ইনডেক্স।


আরো সংবাদ



premium cement