২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ব্যর্থ হলে দুদক চেয়ারম্যানের সরে যাওয়া উচিত : তাপস

-

বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্যসচিব ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি বলেছেন, যদি দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হন তাহলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের অবশ্যই পদ থেকে সরে যাওয়া উচিত। গতকাল হাইকোর্টের অ্যানেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
ব্যারিস্টার তাপস বলেন, আমরা বিভিন্ন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাতেও দেখেছি, তদন্তপূর্বক দেখেছি বেসিক ব্যাংকের মাধ্যমে ফিনান্সিয়াল সেক্টেরে, ব্যাংকিং সেক্টরে যে দুর্নীতি হয়েছে, সেটির মূল ব্যক্তি হলেন ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, যার কারণে সরকার তাকে সেই পদ থেকে অপসারণ করেছে; কিন্তু আজ অবধি বেসিক ব্যাংক-সংক্রান্ত যতগুলো দুর্নীতির মামলা হয়েছে, আমরা লক্ষ করেছি শুধু কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ীদের সেই মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়েছে; কিন্তু তৎকালীন যে চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু তার বিরুদ্ধে আজ অবধি কোনো দুর্নীতির মামলা আনা হয়নি। যদিও তার স্বেচ্ছাচারিতা এবং একক সিদ্ধান্তে বিভিন্নভাবে ঋণগুলোর ব্যাপারে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। সেটি আমাদের স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন তদন্তের মাধ্যমে প্রতীয়মান হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা লক্ষ করেছি কয়েক দফা তাকে ডেকে জিজ্ঞাসবাদ করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি। তাই জাতি মনে করে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে দুর্নীতিবিরোধী, শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন, সে পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের এ বিষয়ে জবাবদিহি অত্যাবশ্যকীয়, কেন এখন পর্যন্ত তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুর ব্যাপারে কোনো মামলা করা হয়নি। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। জাতি জানতে চায়।
এ বিষয়ে দুদকের ব্যর্থতা বা দুদকের চেয়ারম্যানের ব্যর্থতা বলতে চান কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে ব্যারিস্টার তাপস বলেন, অবশ্যই, আমি এ কারণে গতকাল (একটি সভায়) বলেছি দুদক চেয়ারম্যান যদি বলে থাকেন বা বলতে চান, তিনি কোনো প্রভাবের কারণে এ ব্যবস্থা নেননি তাহলে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন এবং সে কারণে তার অবশ্যই পদ থেকে সরে যাওয়া উচিত। তিনি যদি দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হন। আর যদি উনি মনে করেন যে, না; তিনি কোনো প্রভাব দ্বারা বা কারো কথায় কোনো প্রভাবিত হবেন না তাহলে অবশ্যই শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে মামলা করে, তাকে গ্রেফতার করতে হবে, জিজ্ঞাসাবাদ করে, দুর্নীতি দমন কমিশন আশু পদক্ষেপ নেবে।
ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, চেয়ারম্যান (দুদক) একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থার চেয়ারম্যান। উনার চেয়ারম্যানশিপ নির্ধারণ করা হয় সুপ্রিম কোর্টের তিনজন বিচারপতির সমন্বয়ে বাছাই কমিটির মাধ্যমে। এটা চেয়ারম্যানের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার, উনি পদত্যাগ করবেন কি না, সেটি তো আমি জানি না। সেটি একান্ত উনার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
তিনি বলেন, ‘শেখ ফজলে নূর তাপস সাহেবের বক্তব্যটা আমরা এপ্রিশিয়েট করছি। উনি চাচ্ছেন বেসিক ব্যাংকের চার্জশিট হোক। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তাপস একজন সচেতন আইনজীবী হিসেবে উনি চাইতে পারেন। এটা এপ্রিশিয়েট করি। এটা (চার্জশিট) কেন হচ্ছে না?’
তিনি বলেন, কিছু দিন আগে দুদক চেয়ারম্যান বলেছিলেন, এখানে চার হাজার কোটি টাকার বিষয়। প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। বাকি অনেক টাকা উদ্ধার হওয়ার পথে। মানিলন্ডারিং মামলার প্রধান বিষয় টাকার উৎস এবং টাকাটা কোথায় গেল সে ব্যাপারটা আইডেন্টিফিকেশন পর্যায়ে আছে। এখন টাকার যদি গন্তব্য বের করা না যায়, তাহলে তো এ চার্জশিট আদালতে প্রশ্নের সম্মুখীন হবে। তার মানে এই না যে, অনন্তকাল পর্যন্ত চার্জশিট হবে না। আমি যতটুকু জানি টাকার গন্তব্য ফাইন্ড-আউট হলে এটা হয়ে যাবে। এটা এক্সাক্টলি টাইম বলা ডিফিকাল্ট। ৫৬টি মামলা। আরো কিছু হচ্ছে।
চার্জশিটে আব্দুল হাই বাচ্চুর নাম থাকবে কি না এমন প্রশ্নে খুরশীদ আলম খান বলেন, উনার সংযুক্তি থাকলে অব্যশই হওয়া উচিত। যদি ক্রেডিবল এভিডেন্স থাকে তাহলে অবশ্যই আসবে।


আরো সংবাদ



premium cement