২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

গৃহায়ন মেলার শেষদিনে উপচে পড়া ভিড়

-

রাজধানীতে আয়োজিত তিন দিনব্যাপী গৃহায়ন মেলা গতকাল শেষ হয়েছে। এ দিন মেলায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। মেলায় আগতদের ব্যাপক আগ্রহ-উৎসাহ দেখে আয়োজকেরা জানালেন, আগামীতে আরো বড় পরিসরে গৃহায়ন মেলার আয়োজন করা হবে।
‘বিশ্ব বসতি দিবস-২০১৯’ উপলক্ষে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত ৯ অক্টোবর থেকে তিন দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করে। মেলায় ২৪টি আবাসন নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিবারের মতো এবারো এনেছিল নতুন নতুন বিভিন্ন প্রকল্প। বিশেষ করে বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের বিষয়টি এবারের মেলায় বিশেষ গুরুত্ব পায়। এক ছাদের নিচে এই আয়োজনে ক্রেতাদের যাচাই-বাছাইয়ের অবাধ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। সাধ্যের মধ্যেই অনেকে খুঁজে পেয়েছেন নিজের স্বপ্নের ঘরের (ফ্ল্যাটের) ঠিকানা। কেউ কেউ জানতে পেরেছেন নিজস্ব জমিতে সাশ্রয়ী দ্বিতল ভবন তৈরির অত্যাধুনিক কলাকৌশল। ক্রেতাদের সুবিধার্থে মেলায় প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন ছাড় দিয়েছে, ছিল সহজ কিস্তিতে ফ্ল্যাট নির্মাণ করার সামগ্রী কেনার নানা অফারও। এই ধরনের মেলার প্রতি নগরবাসীর আগ্রহ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করলেন আয়োজকেরাও। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) উপপরিচালক (স্থাপত্য) সুলতানা রাজিয়া দৌলা নয়া দিগন্তকে বলেন, রাজউক সম্পর্কে মানুষের নেগেটিভ ধারণা আছে। মেলায় স্টল করে নেগেটিভ ধারণা দূর করার চেষ্টা আমরা করছি। মেলায় মানুষের খুব সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এক কথায় বলতে গেলে মেলা সফল হয়েছে। সাধারণ মানুষের আবাসন সমস্যা দূর করতে আমাদের এই প্রয়াস। মেলা ছাড়াও কেউ অফিসে গেলে আমরা সার্ভিস দিয়ে থাকি। সবার জন্য সার্ভিসের পথ খোলা থাকে বলে তিনি জানান।
স্বল্প জায়গায় সাশ্রয়ী মূল্যে দ্বিতল ভবন তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক রাবেয়া খায়ের নীথি। তিনি বলেন, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটে আধুনিক নির্মাণসামগ্রী ও নির্মাণ কৌশল উদ্ভাবন করা হয়েছে। এগুলো পরিবেশবান্ধব, কৃষিবান্ধব, দুর্যোগ সহনীয়, টেকসই ও ব্যয় সাশ্রয়ী। এ ছাড়া হাউজিংয়ের উদ্ভাবিত নির্মাণ প্রযুক্তিগুলো কৃষিবান্ধব, পরিবেশবান্ধব ও দুর্যোগ সহনীয় এবং টেকসই। তিনি বলেন, পরিবেশবান্ধব বাড়ি করতে মানুষের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আমরা করে থাকি। স্বল্প জায়গায় সহজ বাড়ি করার বিষয়সহ বাড়ির মাস্টার প্লান ও ডিজাইন আমরা করে দিয়ে থাকি। পরিবেশবান্ধব বিকল্প নির্মাণ উপকরণ এখন বাংলাদেশে একটি ক্রমবর্ধমান বাজার অর্থনীতি। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে ৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান বিকল্প নির্মাণ উপকরণ তথা বিভিন্ন ধরনের ব্লক উৎপাদন করছে। ক্রেতারাও ধীরে ধীরে পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণের দিকে ঝুঁকছে। বাংলাদেশ সরকারও এ ধরনের ব্লক উৎপাদন ও ব্যবহারের ওপর বেশ গুরুত্ব আরোপ করেছে। এ ক্ষেত্রে মূল চ্যালেঞ্জ হলো সম্ভাব্য ব্যবহারকারী ক্রেতাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানো। আর এ লক্ষ্যেই সাধারণ মানুষকে বুঝানোর জন্য স্টলটি খোলা হয়েছে।
রাবেয়া খায়ের বলেন, স্টলে প্রচুর দর্শনার্থী আসছেন। জানতে চাচ্ছেন আবাসন তৈরি করার বিষয়ে। সাধারণ মানুষও আসছেন বিষয়টি জানার জন্য। বিষয়টা খুব ভালো, সচেতনতা তৈরি হচ্ছে গৃহায়ন মেলায় আসা মানুষের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে খুব সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
বেলা ৩টায় মেলায় অংশ নেয়া স্টল মালিকদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শামীম আখতারের সভাপতিত্বে সভায় ইনটেক প্রপার্টিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: ফখরুল ইসলাম, রওশন ডেপেলমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক ইম্মে জাহান আরজু, রিহ্যাবের সহসভাপতি মো: আনোয়ারুজ্জামান, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল রিসার্চ অফিসার মো: আকতার হোসেন সরকার প্রমুখ আবাসন ব্যবসায়ী বক্তব্য রাখেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement