আলোচিত ফু-ওয়াং, ড্রাগনসহ বেশ কয়েকটি বারে পুলিশের অভিযান
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০, আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০২:০৫
ঢাকার যতগুলো বার রয়েছে তার মধ্যে আলোচিত বার হচ্ছে ফু ওয়াং ক্লাব। এই আলোচিত ক্লাবেই গতকাল পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালায়। তবে সেখান থেকে কোনো ক্যাসিনো বা জুয়ার অস্তিত্ব পুলিশ খুঁজে পায়নি। যদিও স্থানীয় পুলিশের কাছে সংবাদ ছিল ক্লাবটিতে দীর্ঘদিন ধরেই মদ-জুয়া ও ক্যাসিনো নামক ভয়াবহ জুয়া খেলা চলছিল। এ দিকে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর গতকাল রাজধানীর বারগুলোতে একটানা অভিযান শুরু করে। রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শ্যাল নামক বারে অভিযান চলছিল।
অন্যদিকে গত রোববার গুলশানে দু’টি স্পা থেকে আটক ১৮ জনের মধ্যে দু’জনকে রিমান্ডে ও বাকি ১৬ নারীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে বিকেলে তেজগাঁওয়ের ফু ওয়াং ক্লাবে অভিযান শুরু হয়। অভিযানে ক্যাসিনো -বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে তেজগাঁও জোনের ক্রাইম বিভাগের পুলিশ ও ডিবি অংশ নেয়।
সন্ধ্যার আগে অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের জানান, ফু ওয়াং ক্লাবে অভিযানে ক্যাসিনো কিংবা জুয়ার মতো কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, যে উদ্দেশ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে সে রকম কিছু পাওয়া যায়নি। তবে এখানে একটা বার আছে। তাদের বার চালানোর অনুমোদন রয়েছে। যেহেতু অবৈধ কিছু পাওয়া যায়নি তাই তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে ফু ওয়াং ক্লাবের জিএম শামীম বিল্লাহ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমি এই ক্লাবে তিন বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছি। এখানে কোনো ক্যাসিনো বা জুয়ার আসর বসতে দেখিনি। তবে আমাদের বার চালানোর অনুমতি আছে।’
স্থানীয়রা জানান, গুলশান বনানী বারিধারা এলাকাসহ ঢাকা শহরে যত মদের বার রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেলেল্লাপনা হচ্ছে এই ক্লাবে। অসামাজিক কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগের পাশাপাশি আন্ডারওয়ার্ল্ডের অনেক টপটেররের নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে এখানে। চলমান ক্যাসিনো-বিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর পরই ক্লাবের মালিক সতর্ক হয়ে যায়। আগেভাগে সরঞ্জাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে স্থানীয়রা পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন। উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলের ক্লাব পাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ক্যাসিনো-বিরোধী অভিযান শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ফু ওয়াং ক্লাবে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। মতিঝিলের আরামবাগ ক্রীড়া সঙ্ঘ, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব, ভিক্টোরিয়া ক্লাব এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে অভিযান চালিয়ে র্যাব ক্যাসিনোর সরঞ্জাম উদ্ধার করে। এরপরই পুলিশ ওই ক্লাবে অভিযান চালিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এই মুহূর্তে র্যাব, পুলিশ ও ডিবির সাঁড়াশি অভিযানে ক্যাসিনো জুয়াড়িরা গা ঢাকা দিয়েছে।
রাতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযানে থাকা কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের জানান, তারা সোমবার রাজধানীর কাওরানবাজারের লা ভিঞ্চি, মগবাজারের শেল বার, ইস্কাটনে ড্রাগন বার, রেটবাটনসহ বেশ কিছু বারে ঝটিকা অভিযান চালিয়েছেন। তবে অভিযানে কী পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়েছে তার বিবরণ তারা জানাতে পারেননি।
গুলশানে স্পা থেকে গ্রেফতার ২ জন রিমান্ডে : কারাগারে ১৬ নারী
অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে রাজধানীর গুলশানের ম্যাংগো স্পা থেকে গ্রেফতার আসাদুজ্জামানের দুই দিন ও লাইফ স্টাইল স্পার রুহে আলমের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সেইসাথে তিনটি স্পা থেকে গ্রেফতার ১৬ জন নারীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মানবপাচার আইনে দায়ের করা মামলায় ম্যাংগো স্পার আসাদুজ্জামানের সাত দিন ও লাইফ স্টাইল স্পা রুহে আলমের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। অপর দিকে তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আসাদুজ্জামানের দুই দিন ও রুহে আলমের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপর দিকে ম্যাংগো স্পার মাহফুজা পৃথকভাবে জামিন চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন। এ ছাড়া গুলশান থানার মানবপাচারের পৃথক তিন মামলায় স্পার ১৬ জনকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন রেসিডেন্ট সেলুন অ্যান্ড স্পার সাদিয়া, রুমানা আক্তার, হিরা মনি, মমতাজ বেগম ও লাকি আক্তার মিম। লাইফ স্টাইল স্পার লিলি রেমা, সাহিদা, হাওয়া আক্তার, শারমিন আক্তার, মাধবী চিরং, কলি হক, সুমা সাংমা, টিনা খাতুন, রুবি ও লাকি। কারাগারে পাঠানো অপর নারী হলেন ম্যাংগো স্পার মাহফুজা সাথী।
গত রোববার রাতে রাজধানীর গুলশানের তিনটি স্পা সেন্টারে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ১৬ জন নারী ও তিনজন পুরুষসহ ১৯ জনকে আটক করে গুলশান থানা পুলিশ। স্পা সেন্টারগুলো হলোÑ লাইফস্টাইল হেল্থ ক্লাব অ্যান্ড স্পা অ্যান্ড সেলুন, ম্যাঙ্গো স্পা ও রেসিডেন্ট সেলুন-২ অ্যান্ড স্পা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আটকের মধ্যে একজন পুরুষের কোনো সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা