২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দেশের ইন্স্যুরেন্স বিদেশে করা যাবে না : অর্থমন্ত্রী ৫০ কোটি টাকা লভ্যাংশ দিলো সাধারণ বীমা

-

দেশের ইন্স্যুরেন্স বিদেশে করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, প্রিমিয়াম দিতে না পারা বা ঘাটতি পূরণ করার সক্ষমতা না থাকায় এতদিন দেশের বৃহৎ প্রকল্পগুলোর ইন্স্যুরেন্স বিদেশে করা হতো। তবে এখন থেকে সব ধরনের ইন্স্যুরেন্স দেশেই করতে হবে।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। এর আগে সাধারণ বীমা করপোরেশন তাদের ২০১৮ সালের লভ্যাংশ থেকে ৫০ কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দিতে অর্থমন্ত্রীর কাছে চেক হস্তান্তর করে। তবে এই লভ্যাংশ খুশি করতে পারেনি অর্থমন্ত্রীকে। তিনি বলেছেন, সাধারণ বীমা করপোরেশন আগামীতে ১০০ কোটি টাকা লভ্যাংশ প্রদান করবে।
চেক প্রদান অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে সাধারণ বীমা করপোরেশন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বীমা সেবা প্রদান করে আসছে। সাধারণ বীমা করপোরেশন একই সাথে বীমা ও পুনঃবীমা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি প্রতি বছর সরকারি কোষাগারে নিয়মিত লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। সাধারণ বীমা করপোরেশন এনবিআরকে রাজস্ব দেয়ার পাশাপাশি সরকারের কোষাগারে সরাসরি টাকা দিচ্ছে। মেগা প্রকল্পগুলোকে বীমা কভারেজ প্রদান করেছে, ফলে সরকারি কোষাগারে আরো বেশি টাকা দেবে এই সংস্থাটি। আজ সাধারণ বীমা করপোরেশন ৫০ কোটি টাকার চেক দিয়েছে। তারা ট্যাক্সও পেমেন্ট করেছে। আগামীতে মুনাফাও ডাবল হবে। যেখানে সাধারণ বীমা মুনাফা পাচ্ছিল না এখন তারা পাবে। আমরা এই বিষয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। সাধারণ বীমার রেভিনিউ বাড়লে পাশাপাশি সেবাও বাড়বে। গ্রাহকরাও উপকৃত হবে।
উল্লেখ্য সাধারণ বীমা করপোরেশন সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী পাওয়ার প্ল্যান্ট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ইত্যাদির বীমা কভারেজ প্রদান করছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আগে কিছু ক্ষেত্রে বলা হতো আমাদের দেশের ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলো ছোট। তাদের শক্তি নেই। যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে তারা প্রিমিয়াম দিতে পারবে না বা ঘাটতি কাভার করতে পারবে না। সে জন্য এগুলোর প্রিমিয়ামটা চলে যেত বিদেশে। বিদেশ থেকে মেশিনারিজ আসত আবার প্রিমিয়ামটাও চলে যেত। প্রিমিয়াম হলো একধরনের প্রটেকশন। এখন থেকে এগুলো আর বিদেশে যাবে না। তিনি আরো বলেন, সুস্পষ্টভাবে বলছি, আমার দেশ থেকে যে ইন্স্যুরেন্স হবে, যেটা আমরা পেমেন্ট করব, সেটার প্রিমিয়ামও আমরা পাবো। আমাদের প্রিমিয়াম বাইরের কেউ পাবে না। সে জন্য তাদের (সাধারণ বীমা করপোরেশনের) রেভিনিউ এমনিতেই বেড়ে যাবে।
স্থানীয় যেকোনো ইন্স্যুরেন্স করতে হলে দেশের অভ্যন্তরীণ কোম্পানির মাধ্যমেই করতে হবে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়ামের টাকাটাও আগে ফরেন এক্সচেঞ্জে যেত। আমাদের কষ্টে উপার্জিত টাকা বিদেশী এক্সচেঞ্জে পাঠাতে হতো। এটা পৃথিবীর কোনো দেশে নেই। আমি জানি না, কারা এতদিন এগুলো চালিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী জানান, সাধারণ বীমা করপোরেশনের জেনারেল রিজার্ভ ৪৩৮ কোটি টাকা। ২০১৪ সালে তারা সরকারকে দিয়েছে ২৫ কোটি, ২০১৫ তে ৩০ কোটি, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ৪০ কোটি করে এবং ২০১৮ সালে দেয়া হলো ৫০ কোটি লভ্যাংশ। আগামী বছর থেকে লভ্যাংশ দ্বিগুণ হবে বলে আশা করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, যে এলাকাগুলো থেকে সাধারণ বীমা তাদের প্রোপার রেভিনিউ পাচ্ছিল না, এগুলোর ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি এবং তারা পাবে। তাদের রেভিনিউ অনেক বেড়ে যাবে। সাধারণ বীমার রেভিনিউ বাড়লে পাশাপাশি তাদের সেবাও বাড়বে। যারা ইন্স্যুরার, তারাও লাভবান হবে।
৫০ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, করপোরেশনের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার আহসান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement