২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ডেঙ্গুর জন্য ছাদ বাগান দায়ী নয়

-

ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত রোগের কারণে মানুষের যে প্রাণহানি ঘটছে বা অসুস্থ হয়ে পড়ছে সে জন্য কোনো অবস্থাতেই ছাদ বাগান দায়ী নয়। এর কারণ প্রথমত এডিস মশা পানিতে ডিম পাড়ে না, তা গবেষণায় প্রমাণিত। দ্বিতীয়ত ছাদ বাগানের কোনো গাছের পাত্রে একাধারে ৩-৫ দিন পানি জমে থাকে না, থাকলে গাছই মারা যাবে। তাই নগরীর জীববৈচিত্র্য ও উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে অবদান রাখা ছাদ বাগান এডিস মশার জন্য দায়ী নয়। এ জন্য ছাদ বাগান ধ্বংস নয়, বরং প্রয়োজন এর সম্প্রসারণ ও সঠিক ব্যবস্থাপনা।
গতকাল পবা’র সেমিনার কক্ষে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বাংলাদেশ গ্রিন রুফ মুভমেন্টের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধ : ছাদবাগান ও পরিবেশ সুরক্ষা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয়। পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গ্রিন রুফ মুভমেন্টের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: গোলাম হায়দার। বক্তব্য রাখেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জ্বল, বাংলাদেশ গ্রিন রুফ মুভমেন্টের সহসভাপতি মামুনুর রশীদ, সদস্য মুশহেদা খানম, নুসরাত পলি, মাসুম রেজা, জামিল সিদ্দিক, বাংলাদেশ প্ল্যাট নার্সারিমেন সোসাইটির সভাপতি মো: মেসবাহ উদ্দিন, এসো বাগান করি’র সদস্য জাহিদ হাসান, পবা’র সদস্য রাজিয়া সামাদ, দিনা খাদিজা, মো: ইলিয়াস হায়দার, কবি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, হিলের সভাপতি জেবুন নেসা, বিসিএইচআরডি চেয়ারম্যান মাহাবুব হক।
পরিবেশবাদীরা বলেন, যারা (বাড়িওয়ালা, ফ্ল্যাট মালিক সমিতি) এ ডেঙ্গুকে কেন্দ্র করে সবুজায়নে বাধা সৃষ্টি করছে, ছড়িয়ে দিচ্ছে মিথ্যা আতঙ্ক, তাদের বিরদ্ধে সরকারিভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক এবং সামাজিকভাবে তাদেরকে বয়কট করার ব্যবস্থা করা হোক।
বক্তারা বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে সবুজায়ন আর অক্সিজেনের জোগান দিতে বারান্দা বা ছাদ বাগান করার জন্য উৎসাহ দেয়া হয়েছিল সিটি করপোরেশন এবং নানা প্রতিষ্ঠান থেকে। কিন্তু এখন ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ছাদ বাগান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। কেননা আমরা সবাই জানি পরিবেশ রক্ষায় সবুজায়নের ভূমিকা অপরিসীম। ক্রমবর্ধমান নগরায়নের ফলে সবুজশূন্য হয়ে পড়েছে নগর, ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে নগরের উষ্ণতা, অতিপ্রয়োজনীয় নানা ধরনের কীটপতঙ্গ, প্রজাপতি, পশু-পাখিশূন্য হয়ে পড়ছে নগর। প্রাণবৈচিত্র্য আজ মারাত্মক হুমকির মুখে। মানুষ নানাবিধ রোগ বালাইয়ে জরাজীর্ণ অর্থাৎ পরিবেশ বিপর্যস্ত। শুধু তা-ই নয়, যে হারে নগরায়ন হচ্ছে এ হারে বৃদ্ধি পেলে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে সব মানুষই কোনো না কোনো নগরে বসবাস করবে অর্থাৎ ভবিষ্যৎ নগরের তথা সারা দেশের পরিবেশে প্রাণিকুলের সুস্থতার সাথে জীবনযাপন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। সারা দেশের সমগ্র নগরগুলোর ছাদবাগান হবে বিশাল সবুজের কৃষি ক্ষেত্র, অক্সিজেনের ফ্যাক্টরি, তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধে অন্যতম হাতিয়ার, নিরাপদ ফলমূল, শাকসবজির জোগানদাতা। কৃষিমাত্রিক বাংলাদেশের কৃষিকে আধুনিক কৃষিতে পরিণত করে টিকিয়ে রাখার প্রধান ক্ষেত্র। বিশাল এক কর্মসংস্থানের কারখানা, প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষার অন্যতম নিয়ামক। অবক্ষয়গামী সমাজকে সুস্থ, নিরোগ, জীবনমুখী, পরিশ্রমী মানবিক সমাজ গড়ার প্রধান হাতিয়ার। শিক্ষিত কৃষি ও কৃষক গড়ার ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্র।


আরো সংবাদ



premium cement