মশা নিধনে সরকারের স্থায়ী পরিকল্পনা জানতে চান হাইকোর্ট
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২১ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
সারা বছর মশা নিধনে সরকারের স্থায়ী পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, যখন দেখব, হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ হচ্ছে তখনই বুঝব মশার ওষুধ কার্যকর এবং ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধ করা গেছে। একই সাথে এডিস মশা নিধনে চলমান অভিযানে কোন ওয়ার্ডে কতজন কর্মী দায়িত্ব পালন করছে, তারা কখন যাচ্ছে এবং কী কাজ করছে সবিস্তারে জানতে চেয়েছেন আদালত। এ ছাড়া হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর পরিসংখ্যানও জানাতে বলেছেন আদালত। গতকাল বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো: সোহরাওয়ার্দীর হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানিতে এসব কথা বলেন ও আদেশ দেন।
আদালত বলেন, ঈদে মানুষ ঢাকা ছেড়ে বাড়ি যাওয়ায় মশা কামড়াতে পারেনি। এখন আবার মানুষ ঢাকায় এসেছে, তাই এক সপ্তাহ পর বোঝা যাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী কমেছে কি না। আপনারা (সিটি করপোরেশন) সারা দেশে তো আর ওষুধ ছিটান না। তাই সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমলেও সেটাতো আপনাদের কর্মকাণ্ডের কারণে হয়নি। বাই ন্যাচারালই কমছে।
শুনানিতে আদালত আইনজীবীকে বলেন, মশা মারার নতুন ওষুধ এনেছেন? নতুন ওষুধে কি মশা মরে? নাকি আবার দক্ষিণের মশা উড়ে উত্তরে চলে যায়?
এর পরিপ্রেক্ষিতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আইনজীবী বলেন, নতুন ওষুধ কার্যকর। গত ১১ আগস্ট থেকে তা ছিটানো হচ্ছে। গতকাল থেকে আরো একটি ওষুধ ম্যালাথিওন ছিটানো শুরু হবে।
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, আমরা যখন দেখব হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ হচ্ছে, তখনই বুঝব যে মশার ওষুধ কার্যকর এবং ডেঙ্গুর প্রকোপ রোধ করা গেছে।
আদালতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান বলেন, মশা নিধনে বিভিন্ন সচেতনতামূলক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জনবল নিয়োগে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নতুন ওষুধ এনে ব্যবহার করা হচ্ছে।
শুনানিতে উত্তর সিটি করপোরেশনের আইনজীবী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে সারা দেশে ৬ শতাংশ রোগী কমেছে। উত্তর সিটির আইনজীবী বলেন, রোগী কমছে। তার মানে ওষুধে কাজ হচ্ছে। আর কর্মীরা কাজে ফাঁকি দিচ্ছে কি না সেটা তদারকির জন্য ট্র্যাকিং সিম দেয়া হয়েছে তাদের। তিনি বলেন, এত ব্যাপক ভিত্তিক তো আগে কখনো হয়নি। এবারই হলো।
তখন আদালত বলেন, কেন হলো, এটা তদন্ত করা দরকার। উত্তর সিটির আইনজীবী বলেন, ৪০ হাজার লিটার ওষুধ এসেছে। আরো ৪০ হাজার লিটার আসবে। ৫৪টি ওয়ার্ডকে পাঁচটি জোনে ভাগ করে মনিটর করা হচ্ছে।
আদালত বলেন, কলকাতাসহ অন্যান্য শহরে সারা বছর কাজ চলে। আপনারা সারা বছরের জন্য কী পরিকল্পনা নেবেন সেটা জানান। পরে আদালত আগামী সোমবার পর্যন্ত মামলাটি শুনানি মুলতবি করেন। এ ছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কত রোগী এখন হাসপাতালে ভর্তি আছে প্রতিদিন কেমন ভর্তি হচ্ছে সে তথ্য রাষ্ট্রপক্ষকে জানাতে বলেন। গত ৩০ জুলাই মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ওষুধ কবে আসবে তা হলফনামা আকারে জানাতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তার আগে গত ২৫ জুলাই ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ক্রাশ প্রোগ্রাম চালাতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সময় দেন হাইকোর্ট। গত ১৪ জুলাই রাজধানীতে ডেঙ্গু নির্মূল ও ধ্বংসে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া রুল জারি করে ২২ জুলাইর মধ্যে ডেঙ্গু নিধনে গৃহীত পদক্ষেপের তথ্য জানাতে বলেন আদালত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা